‘গিলবোয়া কারাগার পালানো ছয় ফিলিস্তিনি ছাড়া বন্দীবিনিময় নয়’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেছেন, উত্তর ইসরাইলের গিলবোয়া কারাগার থেকে পালানো ছয় ফিলিস্তিনিকে ছাড়া বন্দীবিনিময়ে যাওয়া হবে না। শনিবার এক বিবৃতিতে এই কথা জানান তিনি। আবু ওবায়দা বলেন, গিলবোয়া কারাগার থেকে নিজেদের মুক্ত করা ছয় বন্দী ছাড়া অন্য কোনো প্রকার শর্তে ইসরাইলের বন্দীবিনিময় হবে না। তিনি আরো বলেন, ‘স্বাধীনতার সুড়ঙ্গের’ বীরদের বন্দী করায় ইসরাইলের সামরিক দুর্বলতার মর্যাদাহানির কোনো প্রকার প্রশমন হতে পারে না। এর আগে উত্তর ইসরাইলের উচ্চ নিরাপত্তাযুক্ত গিলবোয়া কারাগার থেকে সুড়ঙ্গপথে ছয় ফিলিস্তিনি নিজেদের সেলের সাথে যুক্ত সুড়ঙ্গপথ দিয়ে পালিয়ে যান। ইসরাইলি কারাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, ওই বন্দীরা তাদের সেলের টয়লেটের ফ্লোরে খুঁজে পাওয়া এক সুড়ঙ্গপথে পালিয়ে যায়। ২০০৪ সালে কারাগারটি নির্মাণের সময় ওই সেলের টয়লেট পর্যন্ত এই সুড়ঙ্গ করা হয়েছিলো।
পালিয়ে যাওয়া এই ছয় বন্দী হলেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন ইসলামি জিহাদের সদস্য মাহমুদ আবদুল্লাহ আল-আরিদা, মোহাম্মদ কাসিম আল-আরিদা, ইয়াকুব মোহাম্মদ কাদরি, আয়হাম নায়েফ কামামজি, মুনাদিল ইয়াকুব নাফিয়াত ও ফিলিস্তিনি রাজনৈতিক দল ফাতাহ আন্দোলনের সামরিক শাখা আল-আকসা শহীদ ব্রিগেডের নেতা যাকারিয়া জুবাইদি। পালিয়ে যাওয়া এই বন্দীদের সন্ধানে ব্যাপক মাত্রায় উত্তর ইসরাইল ও অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড পশ্চিম তীরে অভিযান শুরু করে ইসরাইলি বাহিনী। পাশাপাশি পালিয়ে যাওয়া বন্দীদের সীমান্ত পেরিয়ে জর্দান যাওয়ার আশঙ্কায় জর্দানি কর্তৃপক্ষের কাছে বন্দীদের সন্ধানের অনুরোধ পাঠিয়েছিলো ইসরাইল। পালিয়ে যাওয়া এই ছয় বন্দীর মধ্যে চারজনকে উত্তর ইসরাইলের নাজারেথ শহরের কাছ থেকে আবার গ্রেফতার করে ইসরাইলি পুলিশ।
ইসরাইলি পুলিশের সূত্র অনুসারে, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রথম পালিয়ে যাওয়া দুই বন্দী মাহমুদ আল-আরিদা ও ইসমাইল কাদরিকে নাজারেথের কাছে খ্রিস্ট ধর্মীয় পবিত্র স্থান জাবাল কাফাজা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শনিবার দিবাগত রাতে নাজারেথ শহরের কাছে ‘আল-শিবলি’ গ্রাম থেকে মোহাম্মদ আল-আরিদা ও জাকারিয়া জুবাইদিকে গ্রেফতার করা হয়। ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়, স্থানীয় ইহুদি বসতিস্থাপনকারীরা তাদের চলাচল টের পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে, পুলিশ এসে তাদের গ্রেফতার করে। এদিকে গিলবোয়া কারাগার থেকে পালানো বন্দীদের সাথে সংহতি প্রকাশে পশ্চিম তীর ও গাজায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেড দাবি করছে, ২০১৪ সালে গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের সময় চার ইসরাইলি সৈন্য তাদের হাতে আটক হয়েছে। বন্দী এই ইসরাইলি সৈন্যদের বিনিময়ে ইসরাইলের কারাগারে আটক ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তির জন্য উভয় পক্ষের মধ্যে দর কষাকষি চলছে। এর আগে ২০০৬ সালে গাজা থেকে ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসাম ব্রিগেডের সদস্যরা সীমান্তে দায়িত্বরত ইসরাইলি সৈন্য গিলাদ শালিতকে অপহরণ করেন। গিলাদ শালিতের মুক্তির জন্য হামাসের সাথে দীর্ঘ পাঁচ বছরের দর কষাকষির পর ২০১১ সালে এক হাজার ২৭ ফিলিস্তিনি বন্দীর বিনিময়ে গিলাদ শালিতকে মুক্তি দেয়া হয়।
সূত্র : আল-মায়াদিন