আফগানিস্তানের সামনে চার প্রশ্ন

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ পাঞ্জশির উপত্যকায় গোলাগুলি, প্রশাসনিক পদ পূরণ, অস্ত্র হাতে তালেবানের টহল, আইএস-কে গ্রুপকে সামলে রাখা; আপাতত এসব নিয়েই আছে আফগানিস্তান। কিন্তু দেশটির সামনে কী অপেক্ষা করছে? প্রশ্ন পরিষ্কার হলেও উত্তরগুলো এখনও অস্পষ্ট।
তালেবান সরকার কেমন হবে?
দ্রুতই সরকারের একটা রূপরেখা তৈরির ঘোষণা দেবে তালেবান। আর সেটা কেমন হবে সেটার একটা ইঙ্গিতও দিয়েছে তালেবানরা। প্রশ্ন ছিল, তালেবান সরকারে আগের সরকারের কেউ থাকবে কিনা এবং নারীদের উচ্চপদে রাখা হবে কিনা। গত বুধবার তালেবান মুখপাত্র দুটোর উত্তরেই ‘না’ বলে দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, নেতৃত্বে থাকবে ১২ সদস্যের একটি কাউন্সিল এবং এরমধ্যে বড় একটি পদে থাকছেন হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান খলিল হাক্কানি।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাশে থাকবে?
এরইমধ্যে অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিয়ে তালেবান নেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। পশ্চিমাদের যাবতীয় নিষেধাজ্ঞা সামলানোর মতো কূটনৈতিক অভিজ্ঞতা তালেবানের নেই। তবে বিষয়টা দ্রুত বিশ্বের নজরে আনতে না পারলে বিপর্যয় আরও চরমে পৌঁছাবে। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যকে ঘিরে নতুন করে সহিংসতা শুরু হলেই বাড়বে শরণার্থীর চাপ। তবে এখন পর্যন্ত আশার খবরটা হলো, ইউএস ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট এরইমধ্যে সরাসরি আফগান নাগরিকদের হাতে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। তবে আফগান সেন্ট্রাল ব্যাংকের আটকে পড়া ১০ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ওই খাদ্য সহায়তা বেশ নগণ্য।
যুক্তরাষ্ট্র কী করবে?
ফরেন পলিসি ডটকম-এর প্রতিবেদনে জানা গেলো, বাইডেন প্রশাসন আফগানিস্তানে জঙ্গি তৎপরতার দিকে নজর রাখবে। দরকার হলে আকাশপথে হামলাও চালাবে (এরমধ্যে চালিয়েছেও)। আফগানিস্তানের প্রতিবেশী কোনও রাষ্ট্রে ঘাঁটি না থাকায় আপাতত যুক্তরাষ্ট্রের হর্তাকর্তারাও স্পষ্ট জানেন না যে ঠিক কোন তরিকায় তারা তালেবানের বিরুদ্ধে কাউন্টারটেররিজম নীতি ফলাবে। প্রতিবেশীদের সঙ্গে গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়েই আপাতত সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে বাইডেন সরকারকে। তবে ওয়াশিংটনের মূল নজরে থাকবে আল কায়েদা ও আইএস। এমনকি সাউথ এশিয়ান জিহাদি গ্রুপগুলো নিয়েও তাদের বিশেষ মাথাব্যথা নেই এখন (যেমন লস্কর-ই-তৈয়বা)। তবে আল-কায়েদার ওপর হামলা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগের কারণও আছে। কারণ, যুদ্ধবিমান হোক বা ড্রোন হামলা, এতে সাধারণ আফগানদের নিহত হওয়ার ঝুঁকি অনেক। আবার আল-কায়েদার সঙ্গে যুঝতে গিয়ে তালেবানের ভেতর উত্তেজনা বাড়িয়ে দেওয়াটাও কাজের কাজ হবে বলে মনে করছেন না অনেকে।
পাঞ্জশিরে কী হবে?
প্রদেশটা এখনও তালেবানের হাতে আসেনি। থেমে থেমে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে তালেবান-বিরোধীরা। যারা সংখ্যায় কয়েক হাজারের বেশি নয়। বাইরের কারও সমর্থন যে পাবে, সে উপায়ও নেই। কেউ কেউ ধারণা করছেন, কোনও একটা শান্তিচুক্তিতে আসা গেলে হয়তো পাঞ্জশির কিছুটা স্বায়ত্তশাসন ভোগ করবে। সেটা না হলে নিহতের সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। আর এমনটা ঘটলে আন্তর্জাতিক সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে নতুন ঝামেলায় পড়তে পারে তালেবানরা।