যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গ নানা সমস্যায় জর্জরিত

0

বিএম আসাদ ॥ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের মর্গটি পরিত্যক্ত হওয়ার পথে। নানা সমস্যায় জর্জরিত মর্গটি এখন ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সূত্র জানিয়েছেন, ১৫ বছর আগে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল চত্বরে নির্মিত হয় অত্যাধুনিক মর্গটি। তখন খুলনা বিভাগে মর্গটি ছিল সবচেয়ে উন্নত। কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে এ মর্গটি নির্মাণ করা হয়। বিএনপির তৎকালীন স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামের উদ্রোগে এটি নির্মিত হয়। মর্গে অধিক ক্ষমতাসম্পন্ন বৈদ্যুতিক লাইন থাকার কথা। যাতে পরিস্কার আলোর মধ্যে রাতেও লাশের ময়না তদন্ত করা যায়। সেখানে আছে মূল্যবান বেসিন ও পানির লাইন। আছে ৬ স্তর বিশিষ্ট আধুনিক ফ্রিজ বা মরচুয়ারি। এক সাথে ৬টি লাশ রাখার সুবিধা। কেউ মৃত্যুবরণ করলে স্বজনরা সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ভাড়া দিয়ে মরদেহ রাখতে পারে। এতে সরকারের মোটা অংকের রাজস্ব আয় হতো। বর্তমানে মর্গ থেকে আগের মতো সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে না। এর কারণ হচ্ছে, ময়না তদন্ত করার জন্যে নির্মিত আধুনিক মর্গটি এখন পরিত্যক্ত হওয়ার পথে। সেখানে লাশের ময়না তদন্ত করা ঝুঁকির্পূণ হয়ে উঠেছে। ময়না তদন্ত হলেও সঠিক রিপোর্ট পাওয়া যাবে কি-না তার নিশ্চয়তা কম। ময়না তদন্তের জন্য অধিক আলোর ব্যবস্থা থাকার নিয়ম থাকলেও এখানে তেমন লাইট নেই। কম আলোয় লাশের ময়না তদন্ত করতে হয়। চিকিৎসক বিব্রতবোধ করেন। এর চেয়ে খোলা পরিবেশে দিরেন আলোয় ময়না তদন্তের কাজ অনেক ভালো হয় বলে তারা জানিয়েছেন। ময়না তদন্তের প্রয়োজনীয় উপকরণ, হাতুড়ি, ছুরি, চাকুও মরিচা পড়া। কখনো পরিস্কার থাকে না। কাজ শেষে হাত ধোঁয়ার বেসিন, বাথরুমের পানি সরবরাহের লাইনটিও নষ্ট হয়ে গেছে। ৬ স্তর বিশিষ্ট মরচুয়ারির ৬টি কয়েল থাকে। সবগুলো কয়েল নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। পুরো ভবনে উন্নতমানের এসি রয়েছে। এসিতে সংযোগ দেয়া কয়েকগজ বৈদ্যুতিক তার চোরেরা চুরি করে নিয়ে যায়। এরপর তার লাগানোসহ এসি মেরামত করা হলেও স্থায়ী হয়নি। কয়েকদিনের ব্যবধানে এসি নষ্ট হয়ে গেছে নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের কারণে। আবারো এসি মেরামত করতে দেয়া হয়েছে। এরপর দু’মাস অতিবাহিত হয়েছে। কিন্তু কোন খবর নেই। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, এটি পরিত্যক্ত ভবন। পরিত্যক্ত হওয়ার পুরো পরিবেশ বিরাজ করছে সেখানে। এ ব্যাপারে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আক্তারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে জানান, মর্গের বর্তমা অবস্থা সম্পর্কে তিনি অবহিত ছিলেন না। পরে অফিস ও এসি মেরামতকারী প্রতিষ্ঠানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলে জানান, সপ্তাহখানেকের মধ্যে সব ঠিক হয়ে যাবে। তাছাড়া মর্গটি নতুন করে সংস্কার এবং আধুনিকায়ন করা হবে।