কালীগঞ্জে গুদামে সার সংকট খালি হাতে ফিরছেন ডিলাররা

0

শিপলু জামান, কালীগঞ্জ(ঝিনাইদহ) ॥ আমনের ভরা মৌসুমে বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) বাফার ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ গুদামে তীব্র সারের সংকট দেখা দিয়েছে। টাকা জমা দিয়েও ইউরিয়া সার পাচ্ছেন না ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা জেলার ১ শত ২৩ জন ডিলার। প্রতিদিন দুই জেলার ডিলাররা সার উত্তোলন করতে এসে হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। চাহিদা অনুযায়ি কিছু ডিলার বরাদ্দের সামান্য পরিমাণ সার পাচ্ছেন। সারের এ সংকটের কারণে মাথায় হাত উঠেছে কৃষকদের। আর এই সুযোগে অনেকে বেশি মুনাফা লাভের আশায় সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রয় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে । এ দিকে গুদামে সার না থাকায়, অলস সময় পার করছেন গুদামে কর্মরত শ্রমিকরা। কালীগঞ্জ শহরের শিবনগরে সারের এই বাফার গুদাম অবস্থিত। এখান থেকে ডিলাররা সার উত্তোলনের পর খুচরা বিক্রেতাদের মাধ্যমে কৃষকদের হাতে পৌঁছায়। গুদামের ইনচার্জ মো. শাহাজান বলেন, গুদামে সার মজুত রাখার জন্য ৩ টি ঘর রয়েছে। যার ধারণ ক্ষমতা ৮ হাজার টন।কোনো কোনো সময় দশ হাজার টন মজুদ থাকে। বর্তমানে দুই জেলায় সারের চাহিদা আছে ১১ হাজার টন। এখন ৩টি ঘরের মধ্যে মাত্র একটিতে ৪শ’ টন সার মজুদ আছে।
এ বিষয়ে কথা হয় একাধিক ডিলারের সঙ্গে। তারা জানান, ব্যাংকে টাকা জমাদানের রসিদ দেওয়ার পর একদিনের মাথায় খুব সহজে সার উত্তোলন করা যেতো। কিন্তু এবার ১০ দিনের অধিক সময় পার হলেও সার পাওয়া যাচ্ছে না। তারা জানান, একেক অঞ্চলের ডিলারদের বরাদ্দের পরিমাণ ভিন্ন। একেক জন ডিলার সার উত্তোলনের জন্য সর্বনিম্ন ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন। টাকা জমা দেওয়ার পর দূর-দূরান্ত থেকে আসা ডিলাররা প্রতিদিন সকাল থেকে প্রায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অপেক্ষা করে খালি হাতে ফিরছেন। হাতে গোনা দুই/একজন সার পেলেও বরাদ্দের চার ভাগের এক ভাগও হবে না। তারা বলেন, গুদামের চারটি ঘরের মধ্যে তিন ঘর তালাবদ্ধ। একটি ঘরে সামান্য পরিমাণে সার মজুদ আছে। ডিলাররা অভিযোগ করেছেন, কালীগঞ্জ বাফার থেকে ক্যারিং কন্ট্রাকটর সিন্ডিকেটের কারণে উচ্চ মূল্যে ট্রাক ভাড়া দিয়ে সার নিতে হয়। আবার অনেকে বাফার ইনচার্জের সাথে সখ্যতা গড়ে নওয়াপাড়া থেকে কালীগঞ্জ বাফার গুদামে না রেখে ডেসপাচ করে নেন। একাধিক শ্রমিক জানান, প্রায় এক মাসের অধিক সারের কোনো বড় চালান আসেনি। তাদের আয়-উপার্জনও অনেকটা বন্ধ হয়ে গেছে। ট্রাকে সার উঠানো এবং নামানোর পরিমাণের ভিত্তিতে তারা পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন। কালীগঞ্জের ভিটশর গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলাম জানান, সার না পেয়ে তারা ক্ষেতে প্রয়োগ করতে পারছেন না। এই বিষয়ে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন বলেন, দ্রুত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।