বিপজ্জনক মোটরসাইকেলচোর ইয়ার আলী কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে খুলতে পারেন তালা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোরে ডিবি পুলিশের হাতে আটক ইয়ার আলী একজন বিপজ্জনক মোটরসাইকেল চোর। মাস্টার কি (চাবি) দিয়ে কয়েক সেকেন্ডর মধ্যেই মোটরসাইকেলের তালা খুলে ফেলতে তিনি পারদর্শী। তার ভাই বাহার আলীও এমন পারদর্শী। এমনই ভয়ঙ্কর তথ্য মিলেছে ডিবি পুলিশের কাছ থেকে।
ইয়ার আলী ও বাহার আলী সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার শংকরপুর গ্রামের জাব্বার আলীর ছেলে। এর মধ্যে ইয়ার আলীকে গত ১৬ এপ্রিল যশোর সদর উপজেলার হামিদপুর থেকে আটক করে ডিবি পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে মোটরসাইকেল চুরির কয়েকটি মাস্টার কি (চাবি) ও পুলিশের এক জোড়া হ্যান্ডকাপ উদ্ধার করা হয়।
ডিবি পুলিশের এসআই মফিজুল ইসলাম পিপিএম জানান, হত্যাসহ ৮টি মামলা রয়েছে ইয়ার আলীর বিরুদ্ধে। সাতক্ষীরার একজন ইউপি চেয়ারম্যান হত্যা মামলার আসামি তিনি। তবে যশোরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন ইয়ার আলী। অবশ্য একস্থানে তিনি বেশিদিন থাকেন না। বর্তমানে সদর উপজেলার হামিদপুরের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে সেখানে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করেন। শহরের শংকরপুর বাসটার্মিনাল এলাকার তহমিনা খাতুন নামে এক নারীকে বিয়ে করেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। স্ত্রী ও শাশুড়িও তার মোটরসাইকেল চুরির পেশা সম্পর্কে অবগত আছেন। গত ১৬ এপ্রিল রাতে হামিদপুরের ওই বাসাতে অভিযান চালিয়ে বিশেষ কায়দায় তৈরি করা ৬টি মাস্টার কি (চাবি) ও পুলিশের এক জোড়া হ্যান্ডকাপসহ ইয়ার আলীকে আটক করা হয়।
ডিবি পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেন, ইয়ার আলী অত্যন্ত বিপজ্জনক। ৩০ সেকেন্ড থেকে এক মিনিটের মধ্যে তিনি মাস্টার কি (চাবি) দিয়ে মোটরসাইকেলের তালা খুলে ফেলতে পারেন। এ পর্যন্ত তিনি বহু মোটরসাইকেল চুরি করেছেন। গত ১১ এপ্রিল সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার খানপুর গ্রামের একটি মাছের ঘেরের পাশ থেকে পালসার ব্র্যান্ডের একটি মোটরসাইকেল চুরি করেন ইয়ার আলী। ওই মোটরসাইকেলের মালিক শ্যামনগর থানা পুলিশের এএসআই জসিম উদ্দিন। মোটরসাইকেলে রাখা ব্যাগে হ্যান্ডকাপ ও আসামি গ্রেফতারের ওয়ারেন্ট ছিলো। ইয়ার আলী ব্যাগসহ মোটরসাইকেলটি চুরি করে নিয়ে গিয়েছিলেন। তাদের অভিযানে ইয়ার আলীর বাসা থেকে পুলিশের ওই হ্যান্ডকাপ এবং তার স্বীকারোক্তিতে মোটরসাইকেলটিও উদ্ধার হয়েছে। তিনি বলেন, ইয়ার আলীর ভাই বাহার আলীও মোটরসাইকেল চোর। বাহার আলী অত্যন্ত ধুরন্ধর প্রকৃতির।
ইয়ার আলীর স্ত্রী তহমিনা খাতুন তার স্বামীর চুরি পেশার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, ইচ্ছে থাকলেও চক্রের সদস্যদের কারণে তার স্বামী ভালো হতে পারছেন না। তার স্বামীকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে মোটরসাইকেল চুরিতে বাধ্য করছেন সহযোগীরা।
ডিবি পুলিশ সূত্র জানায়, এতদঞ্চলের চুরি যাওয়া মোটরসাইকেগুলো চলে যায় শার্শা উপজেলার নাভারণের শফিয়ার রহমান শফির গ্যারেজে। মূলত শফি এই চোরচক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। চোরাই মোটরসাইকেলে ভুয়া নম্বরপ্লেট লাগিয়ে এবং জাল কাগজপত্র তৈরি করে শফি দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে থাকেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, মোটরসাইকেল চোরচক্রের হোতা শফির সাথে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশ রয়েছে। যে কারণে তিনি বিভিন্ন সময় আটক হলে সহজে পার পেয়ে যান। অল্পদিনে জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আসেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ এপ্রিল ডিবি পুলিশ চোরাই মোটরসাইকেলসহ চক্রের হোতা শফিকে আটক করে।