দুর্যোগ না হলে অভয়নগরে বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা কৃষকদের

0

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর) ॥ অভয়নগরে মাঠে মাঠে বোরো ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে। কষ্টের ফলন নিয়ে কৃষকের মুখে যেমন আনন্দ বিরাজ করছে, তেমনি কালবৈশাখী ঝড় নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে। এখন পর্যন্ত আবহাওয়াঅনুকূলে থাকায় ফসলে কোনো ক্ষতি হয়নি । যদি ভালো ভাবে ঘরে ধান তুলতে পারেতাহলে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, অভয়নগরে ৮টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভায় ১৩ হাজার ১২৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে । তবে অভয়নগরের বোরো আবাদে শীর্ষে রয়েছে উপজেলার সিদ্দিপাশা ইউনিয়ন। আর জলাবদ্ধতার কারণে পিছিয়ে পড়েছে পায়রা ও সুন্দলী ইউনিয়ন । পায়রা ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সীমা বিশ্বাস ওকার্ত্তিক চন্দ্র গোলদার এবং সুন্দলী ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান জানান, দক্ষিণ পশ্চিম অঞ্চলের মরণফাঁদ ভবদহ গ্রাসের কারণে ইউনিয়নের দুটি নি¤œাঞ্চলে এ বছর প্লাবিত থাকায় বোরো ধানের আবাদ কম হয়েছে । তবে ভবদহ দিয়ে যদি সময়মত পানি নিষ্কাশন করা যেত তাহলে কৃষকদের এমন পরিস্থিতির শিকার হতে হতো না । সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ ওয়ালিউর রহমান বলেন,উপজেলার সবচেয়ে বেশি বোরো ধান চাষ হয়েছে সিদ্দিপাশাইউনিয়নে। ১ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে ৩ হাজার ১৮০ জন কৃষকের চাষের মাধ্যমে প্রত্যেকটি গ্রামের খাল,মাঠ-ঘাট,বিল এবং পতিত জায়গার ধানগুলো সমান তালে পাক ধরেছে এবং সোনালী ধানগুলো ঝুলছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোলাম ছামদানী জানিয়েছেন,অভয়নগর উপজেলায় এ বছর ১৩ হাজার ১২৫ হেক্টর বোরো ধানেরআবাদ করা হয়েছে। তবে স্থায়ী জলাবদ্ধতার কারণে পায়রায় ৫০৫ হেক্টর,প্রেমবাগে ২০৫ হেক্টর,সুন্দলীতে ২০৫ হেক্টর,চলিশিয়াতে ২৪০ হেক্টর,নওয়াপাড়া পৌরসভাতে ৫০হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়নি । এছাড়া এ বছর হিটশকে ২ হেক্টর জমিরধান নষ্ট হয়েছে। তিনি আরও বলেন,অভয়নগরের কৃষকরা ঘরে ধান তুলতে যদি কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে না পড়ে, তাহলে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে যাবে।কৃষকদের সাথে আলাপকালে তারা জানান,দিনরাত পরিশ্রম করে ফসল ফলিয়েছে।
মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে তাদের মধ্যে দুশ্চিন্তাও রয়েছে । তবে সময়মতোধানকাটা শ্রমিক না পেলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন। শ্রমিক সংকট,প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে আর ধানের ন্যায্যমূল্য পেলেউপজেলায় বোরোর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। কৃষক মাছুদুর রহমানজানান,এবার ফলন ভালো হয়েছে । বিগত সময়ে ধানের ন্যায্যমূল্য হতে বঞ্চিতহয়েছি। সরকার বেশি দামে ধান কিনলেও সাধারণ কৃষকরা সরকারিভাবে তা বিক্রি
করতে পারে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন,রাজনৈতিক বিবেচনায় কৃষক মনোনীত করে তাদের কাছ থেকে সরকারিভাবে ধান ক্রয় করা হয়। এ বছর যেন সাধারণ কৃষকরা সরকারিভাবে ধান বিক্রি করতে পারে এবং ধানের সঠিক মূল্য পায় সরকারের কাছে সে বিষয়ে জোর দাবি জানান তিনি।