যশোর টিকাদান কেন্দ্র এসএমএস না পেয়ে হয়রানির শিকার ২য় ডোজ গ্রহণকারীরা

0

বিএম আসাদ ॥ যশোর করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারী ১ লাখ ১৮ হাজার ৪শ ৮৫ জনের ভেতর রোববার পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৫ জন দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। এদিকে, টিকা নেয়ার এসএমএস নিয়ে শুরু বিড়ম্বনা। যশোর সিভিল সার্জন অফিসের এমওসিএস ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণকারীদের দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে এসে এসএমএস নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। প্রথম ডোজ ৮ সপ্তাহ বা ৫৬ দিনের মাথায় নির্ধারিত দিনে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেয়ার মোবাইল ফোনে জন্য এসএমএস আসলেও অনেকে আসছে না। ফলে, নির্ধারিত দিনে টিকা দেয়া যাবে কি না তা নিয়ে সংশয়ে পড়ছেন প্রথম ডোজ গ্রহণকারীরা। কোন কিছু বুঝে উঠতে না পেরে তারা নির্ধারিত দিনে টিকা নেয়ার জন্য কেন্দ্রে এসে ভীড় করছেন। অনেকে টিকা দিতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। রোববার সকালে শাহিদা বেগম (৩৬), নামে এক গৃহবধূ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দিতে যশোর ২৫০ শয্যা ৩নং ওয়ার্ডে ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি করোনা টিকার প্রথম ডোজ নেন। দ্বিতীয় ডোজ দেয়ার নির্ধারিত দিন চিল ১৮ এপ্রিল। সে মোতাবেক হাসপাতালে আসেন। কিন্তু মোবাইল ফোনে এসএমএস না আসার কারণে তিনি দ্বিতীয় ডোজ দিতে পারেননি। শাহিদা বেগমের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, এসএমএস আসেনি। তাই দ্বিতীয় ডোজ দেয়নি কেন্দ্র থেকে। শুধু শাহিদা বেগম নন। চায়না মৃধা, এসকেএম ওহীদুজ্জামান, মো. ফারুক হোসেনসহ টিকার দ্বিতীয় ডোজ দিতে এসে ফিরে গেছেন। এভাবে এসএমএস না পেয়ে কেন্দ্রে এসে অনেকে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। আবার অনেকে সময়মতো এসএমএস আসায় তারা টিকা দিতে পারছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে দেয়া হচ্ছে এসব এসএমএস। যারা টিকা গ্রহণকারীদের মোবাইল ফোনে এসএমএস দেয়ার দায়িত্ব পালন করছেন, তাদের ভুলের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সদস্য সচিব, যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীনের সাথে আলাপকালে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, মোবাইল ফোনে এসএমএস পাঠাতে কারো ভুল হচ্ছে অথবা সংখ্যা বেশি হওয়ার কারণে কিছু সমস্যা হচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে জানিয়ে শেখ আবু শাহীন বলেন, মোবাইল ফোনে এসএমএম পেতে এক সপ্তাহ দেরি হলেও ক্ষতি নেই। এসএমএস পাওয়ার পরই তিনি দ্বিতীয় ডোজ দিতে যাবেন।
এদিকে, যশোর সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ১২টি টিকাদান কেন্দ্র থেকে মোট ১ লাখ ১৮ হাজার ৪শ ৮৫ জন করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন। গত ৮ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ গ্রহণকারীদের দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হয়েছে। রোববার পর্যন্ত ১৭ হাজার ২শ ৩৮ জন পুরুষ এবং ৮ হাজার ৩শ ১৭ জন মহিলা মিলে মোট ২৫ হাজার ৫শ ৫৫ জনকে টিকা দেয়া হয়। সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে, টিকা গ্রহণকারীদের মধ্যে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল কেন্দ্র থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, ২৮ হাজার ৪শ ৭ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ১শ ২৬ জন। যশোর মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, ৮ হাজার ৫শ ৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ২শ ১৮ জন। পুলিশ হাসপাতাল থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ২ হাজার ৬শ ৯০ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ২শ ২৮ জন। বিমানবাহিনীর কেন্দ্র থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ৩শ ৪০ জন। দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেছেন ২শ ৬৬ জন। যশোর সিএমএইচ থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৭ হাজার ৬শ ১৮ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৮শ ১৯ জন। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে করোনা টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন ৬ হাজার ৬শ ৫০ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ৩শ ২৪ জন। অভয়নগর উপজেলা থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১০ হাজার ১শ ১১ জন। দ্বিতীয় ডোজ নেন ১ হাজার ৭শ ৬০ জন। বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন, ৮ হাজার ৪শ ৯ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৬শ জন। ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৮ হাজার ৮শ ৬৬ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ৯শ ৭০ জন। কেশবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন, ৯ হাজার ৪শ ৯৫ জন। দ্বিতীয় ডোজ নেন ২ হাজার ৩শ ১০ জন। মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১৫ হাজার ৬শ ৮৪ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩ হাজার ১শ ৯ জন। শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১০ হাজার ৭শ ১০ জন। দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১ হাজার ৮শ ২৫ জন।