যশোর পৌরসভা নির্বাচন :মেয়র নয়, কাউন্সিলর প্রার্থী নিয়ে ভাবছেন ভোটাররা, সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা প্রার্থীদের

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ মেয়র নয়, কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে ভাবছেন যশোর পৌরসভার ভোটাররা। বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণার পর থেকেই মূলত যশোর পৌরসভার নির্বাচনের মাঠের চিত্র পাল্টে গেছে। এ নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে তেমন কোনো আগ্রহ না থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৯টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মধ্যে কারা জিতবেন সে হিসেব নিয়ে একটু মাথা ঘামাচ্ছেন। তবে সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা করছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা। ৩১ মার্চ যশোর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের বাকি আর মাত্র এক সপ্তাহ। নির্বাচনী মাঠে চলছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। বিশেষ করে কাউন্সিলর প্রার্থীরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। শহরের বিভিন্ন বাজার আর চায়ের দোকানের আড্ডায় ভোটাররা কাউন্সিলর প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন। ভোটারদের অভিমত সাবেক মেয়র বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মারুফুল হক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পরই মূলত নির্বাচনের আলোচনা চলে গেছে কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে। সাধারণ ভোটারদের মতে নির্বাচন মূলত এখন একদলীয় পর্যায়ে। এখানে মেয়র পদে নৌকার প্রার্থীর বিপক্ষে ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী ছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আসার মতো কোনো শক্ত প্রার্থী না থাকায় নৌকার বিজয় নিশ্চিত হয়ে গেছে অনেকটা। এখন দেখার বিষয় কাউন্সিলর পদের নির্বাচন আদৌ সুষ্ঠু অংশগ্রহণমূলক হয় কিনা। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, ৩১ মার্চ যশোর পৌরসভা নির্বাচনে মোট ৬৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ৩ জন মেয়র প্রার্থী, ৪৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৩ জন সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রার্থী। ইতোমধ্যে বিএনপির প্রার্থী তার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এ সরকারের অধীনে বিএনপি আর কোনো নির্বাচনে যাবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছে।
এদিকে বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা ও মেয়র পদ থেকে ধানের শীষ প্রার্থির প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় নির্বাচনের মাঠে নৌকার প্রার্থী হায়দার গনি খান কার্যত একক অবস্থানে রয়েছেন। যদিও তার অপর প্রতিদ্বন্দ্বী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী থাকলেও তাকে কোনো হিসেবে আনছেন না ভোটাররা। ফলে নির্বাচন এখন কাউন্সিলর ভোট নিয়েই ভোটের হিসেব নিকেশ চলছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীদের যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন তাদের মধ্যে প্রত্যেক ওয়ার্ডে ক্ষমতাসীন দলের আশির্বাদপুষ্ট একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। এসব প্রার্থীর দাবি মেয়র পদে যেহেতু নৌকার বিজয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে গেছে সেকারণে কাউন্সিলর পদে ভোট অংশগ্রহণমূলক হবে বলে তারা আশা করছেন। তারা এ নির্বাচনে কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপ থাকবে না বলে আশা করছেন। অধিকাংশ প্রার্থীরা মনে করছেন ভোট যেহেতু ইভিএমের মাধ্যমে গ্রহণ করা হবে সেকারণে এখানে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ থাকবে না কোনো পক্ষের। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও আসন্ন নির্বাচনে পাঞ্জাবি মার্কার প্রার্থী আলমগীর হোসেন সুমন বলেন, ‘৩১ মার্চে নির্বাচনে আমি বিপুল ভোটে আবারও বিজয়ী হবো বলে আশা করছি।’ এজন্য তিনি সুষ্ঠু ভোটের প্রত্যাশা করেন। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিতে পারবে এমনটি আশা করেন এ প্রার্থী। একই কথা বলেন, ২ নং ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ও আসন্ন নির্বাচনে পানির বোতল প্রতীকের প্রার্থী রাশেদ আব্বাস রাজ। তিনি বলেন, ‘আমি আগামী নির্বাচনে আবার বিজয়ী হবো বলে আশা করছি। তারপরও ভোট নিয়ে শঙ্কাও আছে। তবে আশা করছি নির্বাচন সষ্ঠুু ও অংশগ্রহণমূলক হবে। প্রশাসনের কাছে আমরা দাবি করে আসছি ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারেন। প্রশাসন সে ব্যবস্থা করবে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করছি।’ এ বিষয়ে জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন অফিসার মো. হুমায়ূন কবীর বলেন, যশোর পৌরসভা নির্বাচন নিয়ে প্রার্থীদের মধ্যে হতাশা বা উদ্বেগ নেই। নির্বাচনে প্রার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে সকল প্রস্তুতি অব্যাহত রয়েছে। ফলে এ বিষয়ে প্রার্থীদের কোনো আশঙ্কা করার সুযোগ নেই।