ঝাঁপা বাঁওড় থেকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন ধসে যাওয়ার শঙ্কায় বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

0

মজনুর রহমান,মনিরামপুর (যশোর)॥ মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে ঝাঁপা বাঁওড় থেকে বালি উত্তোলনে বাঁওড়তীরে কয়েকটি শিা প্রতিষ্ঠান ও বাজার হুমকির মুখে পড়েছে। যেকোনো মুহূর্তে তীরের মাটি ধসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিশাল এ বাজারটির একটি অংশ বাঁওড়ের মধ্যে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বালু উত্তোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন দুই ইউনিয়নের যুবলীগের দুই সভাপতি।
স্থানীয়দের অভিযোগে জানা যায়, ঝাঁপা বাঁওড়ের পূর্বতীরে রাজগঞ্জ বাজার, পাশে রয়েছে রাজগঞ্জ মাধ্যমিক ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এর উত্তর এবং দক্ষিণপাশে রয়েছে দুটি ভাসমান সেতু। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটির সামনে অবস্থিত বাঁওড় থেকে ড্রেজার মেশিনে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। বালি উত্তোলন করে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারটির পশ্চিমপাশে। সেখান থেকেই বালি বিক্রি করার প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। আর এ বালি উত্তোলন করা হচ্ছে চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এমরান খান পান্না এবং ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহেল রানার নেতৃত্বে। বালি উত্তোলনের কাজে নিয়জিত শ্রমিক ইমরান হোসেন এবং আবুল হোসেন জানান, ইমরান খান পান্না ও সোহেল রানা তাদেরকে দিয়ে বালি উত্তোলনের পর স্তুপ করিয়ে রাখছেন বিক্রির জন্য।
স্থানীয়রা জানান, এমরান খান পান্না এবং সোহেল রানা মাত্র কয়েকদিন আগে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন শুরু করেন। প্রতিনিয়ত বালি উত্তোলন করায় তীরের মাটি ধসে মাধ্যমিক এবং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। শুধু এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই নয়, হুমকির মুখে পড়েছে রাজগঞ্জ বাজারের পশ্চিমপ্রান্তের একটি অংশ। কিন্তু এ পর্যন্ত তাদের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহসি পায়নি। বরং অভিযোগ রয়েছে, শুক্রবার সকালে একজন সাংবাদিক নৌকাযোগে বালি উত্তোলনের ছবি নেয়ায় নৌকার মাঝি মান্নাকে মারধর করা হয়েছে। মান্নার অভিযোগ সাংবাদিককে নৌকায় করে নিয়ে যাওয়ায় যুবলীগ নেতা সোহেল এবং শিমুল তাকে মারধর করে। অবশ্য ঝাঁপা যুবলীগ সভাপতি সোহেল রানা এ অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, মান্নার সাথে তার সামান্য ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।
রাজগঞ্জ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মাসুদ কামাল তুষার জানান, বালি উত্তোলনের বিষয়টি এলাকাবাসী জানে। তবে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ আবদুল লতিফ বালি উত্তোলনকারীদের পক্ষ অবলম্বন করে জানান, বিদ্যালয়ের সীমানা ভেঙে যাওয়ায় তা রোধ করতে বাঁওড় থেকে বালি উত্তোলন করছেন পান্না এবং সোহেল রানা। তবে ভিন্নমত পোষণ করেছেন ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি ও বাজার কমিটির সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা চাকলাদার আবুল বাশার। তিনি জানান, বাঁওড় থেকে বালি উত্তোলনের ফলে বিদ্যালয় ভবন এবং বাজারের পশ্চিম অংশ চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। তার অভিযোগ বিদ্যালয়ের সীমানা বাঁধের নাম করে একটি প্রভাবশালী চক্র বালি উত্তোলন করছে মূলত ব্যবসায়ের জন্য। বালি উত্তোলনে নেতৃত্ব দেয়া চালুয়াহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি এমরান খান পান্না এবং ঝাঁপা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহেল রানা জানান, বিদ্যালয়ের সীমানা রক্ষায় আশপাশে মাটি পাওয়া না যাওয়ায় বাঁওড় থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান জানান, জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খানের নির্দেশে বাঁওড় থেকে বালি উত্তোলন বন্ধ করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।