নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্যে নাকাল অবস্থা

0

ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ছে প্রতিদিন। মূল্য বৃদ্ধতে সর্বস্তরের মানুষ বিপর্যস্ত হচ্ছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যবস্থা নিচ্ছে না সরকার। তাদের কোনো মাথা ব্যথাও যেন নেই। সামনে রমজান আসছে। প্রতিবছরের চেনা ছবি রোজার মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকে। অনেক সময় ভোক্তার ক্রয়সীমার বাইরে চলে যায়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের। লোকসমাজসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, আসন্ন রোজা ঘিরে বাড়তি চঞ্চলতা দেখা দিয়েছে ভোগ্যপণ্যের বাজারে। তেল, চিনি, ডাল, ছোলা, পেঁয়াজ, খেজুর ও অন্যান্য ফলমূলসহ রোজায় চাহিদা বাড়ে, এমন পণ্যের বাড়তি আমদানি হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পণ্যের দাম গত বছরের মতো থাকলেও তেল, চিনি, শসা, লেবু, বেগুনসহ বেশ কিছু পণ্য ভোক্তাকে ভোগাবে। এদিকে গত বুধবার ট্যারিফ কমিশনের সঙ্গে এক বৈঠকে ব্যবসায়ীরা ভোজ্য তেলের দাম আরও পাঁচ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন।
বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থাপনা মোটেই সংগঠিত নয়। এর সুযোগ নিয়ে এক শ্রেণির ব্যবসায়ীকে বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতে দেখা যায়। কোনো কোনো সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করেও পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এরই ধারাবাহিকতায় এবারও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে রোজা সামনে রেখে। মূল্যবৃদ্ধির এ প্রবণতা যদি চলতেই থাকে, তাহলে ভোক্তাদের অবস্থা কী দাঁড়াবে তা বলাই বাহুল্য।
বাংলাদেশের বাজারে পণ্যের দাম বাড়ানোর জন্য অনেক েেত্রই কোনো উপল প্রয়োজন পড়ে না। একটি অদৃশ্য সিন্ডিকেটের কথা শোনা যায়। এই সিন্ডিকেট বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করে এমন কথাও চালু আছে। বাজারের নিয়ন্ত্রণ সরকার নিতে না পারলে কোনোভাবেই পণ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করা সম্ভব হবে না। কাজেই সরকারকে মূল ভূমিকা নিতে হবে। বাজারের সমান্তরালে একটি বাজার ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। এ কাজটির ব্যাপারে কোনো সরকারের আন্তরিকতা পরিলতি হয়নি। টিসিবির মাধ্যমে সরকার এ কাজটি সহজেই করতে পারত। বর্তমানে কিছুদিনের জন্য টিসিবিকে ব্যবহার করা হয়। তাতে সারা বছর বাজার সিন্ডিকেটকে কোনো প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হয় না। রোজা আসছে, এরপর ঈদ। রোজা ও ঈদে পণ্যমূল্য যাতে ভোক্তাদের সাধ্যের মধ্যে থাকে তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা এখনই নিতে হবে। মনিটরিং বাড়াতে হবে। পণ্য যেন ভোক্তাসাধারণের কাছে সহজলভ্য হয়, সে ব্যবস্থা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। আমরা আশা করব, সাধারণের সুবিধার্থে সরকার যথাবিহিত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।