সোশ্যাল মিডিয়ায় অপেক্ষায় ‘বন্ধুবেশী’ প্রতারক!

    0

    লোকসমাজ ডেস্ক॥ অনেকদিন পর পুরনো কোনও বন্ধু বা আত্মীয়ের রিকোয়েস্ট উঁকি দিয়েছে নেট পাড়ায়? সাবধান! প্রতারকদের ফাঁদ হতে পারে কিন্তু। সম্প্রতি ক্রিপ্টোজ্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার ঘটনা অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সাইবার ক্রাইম বিভাগের নজরে এসেছে এই ধরনের অপরাধ। এমনকী ইন্টারপোলও রেড অ্যালার্ট জারি করেছে এ নিয়ে।
    কী হতে পারে?
    সূত্রের খবর, এই ধরনের অপরাধ করার আগে প্রতারকরা বেশ কয়েকদিন ধরে শিকারের উপর নজর রাখছেন। কাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে বা নেই, সেই বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। এরপর যে বন্ধু বা আত্মীয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন কথা হয় না, তার নামে ভুয়ো সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট খুলে বন্ধুত্বের আর্জি জানানো হচ্ছে। কম্পিউটারের এ প্রান্তে বসে থাকা মানুষটি বুঝতেও পারছেন না সুপরিকল্পিত ছলের বিষয়টি। এরপর একদিন লিঙ্ক পাঠিয়ে বলা হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে। একবার লিঙ্কে ক্লিক করলেই কিন্তু ফেঁসেছেন!
    কারণ, একদিন হঠাৎ আপনার বিনিয়োগ করা সমস্ত কয়েন নিয়ে গায়েব হয়ে যাবে ‘বিশ্বস্ত’ বন্ধুটি। ব্লকচেইনের অস্তিত্ব তো মিলবেই না, উপরন্তু ফেবু পাড়াতেও খুঁজে পাবেন না বন্ধুর প্রোফাইলটি। যদি কোনও নম্বর থেকে ফোন এসে থাকে, তবে সেই নম্বরটির অস্তিত্বও উধাও হয়ে যেতে দেখবেন রাতারাতি। ফোনের ওপার থেকে বৈদ্যুতিন কণ্ঠ জানান দেবে, ‘দ্য নম্বর ইউ আর কলিং ইজ সুইচড অফ।’ সাধারণত নতুন বন্ধুত্ব পাতিয়েই এই ধরনের অপরাধ ঘটিয়ে থাকে অপরাধীরা। তবে পুলিশ এবং সরকারের প্রচারে যেহেতু অনেকটা সতর্ক হয়েছেন নেটিজেনরা, সেই কারণেই নতুন ছলের আড়ালে সাইবারক্রাইম চালানো হচ্ছে।
    কী এই ক্রিপ্টোজ্যাকিং?
    পেশায় আইনজীবী এবং সাইবার বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘সাধারণত ক্রিপ্টোজ্যাকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রথমে একটি লিঙ্ক পাঠানো হয়। সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই ডিভাইসের অ্যাকসেস চলে যায় অপরপ্রান্তে এবং মাইনিং শুরু হয় মাইনিং। যাঁকে লিঙ্ক পাঠানো হয়েছে, তিনি যদি মাইনিং নাও করেন, তাহলে তাঁর কম্পিউটার ব্যবহার করে ওপারে বসে থাকা ব্যক্তিটি কিন্তু মাইনিং করতে পারেন। আসলে ক্রিপ্টোকারেন্সির ক্ষেত্রে অনেকটা রিসোর্স প্রয়োজন হয়। সেটা থাকে না বলেই অন্যদের ডিভাইসে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করে প্রতারকরা।’
    শহরবাসীকে সতর্ক করে তিনি আরও বলেন, ‘মানুষের মধ্যে একটি ধারণা রয়েছে যে বিটকয়েন কিনলেই বোধহয় বড়লোক হওয়া যায়। অনেক সাইট রয়েছে যেখানে বিটকয়েন বিক্রি করা হয়। কিন্তু এটাও মাথায় রাখতে হবে যে বিটকয়েনের মাধ্যমে যে টাকা পাঠানো হয়, তা ট্র্যাক করাটা অত্যন্ত কঠিন। ফলে কখনও বিটকয়েনের মাধ্যমে যদি টাকা ট্রান্সফারও করতে বলে, তাহলে সেটা না করাই শ্রেয়। অনেক সময় প্রতারণার জালে ফাঁসিয়ে বিটকয়েন মারফত টাকা পাঠাতে বলা হয়।’ উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা শহরবাসীকে সতর্ক করে জানিয়েছিলেন, হোয়াটস অ্যাপে এক ভিডিয়ো কলের কথা। যেখানে এক নগ্ন মহিলাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছিল এবং স্ক্রিনশট নিয়ে ব্ল্যাকমেল করা হচ্ছিল। সেক্ষেত্রেও কিন্তু ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করে টাকা দাবি করছিল প্রতারকরা।
    শহরে সাইবার প্রতারণার নয়া জাল, টার্গেট ব্লু-টিক প্রত্যাশীরা
    কীভাবে বুঝবেন আপনার মেশিন ব্যবহার করে মাইন হচ্ছে?
    এই ক্ষেত্রে ডিভাইসের স্পিড অনেকটা কমে যাবে। অন্য কেউ মাইনিং করলে কিন্তু আপনি আইনি জটিলতার মধ্যে পড়ে যাবেন। ফলে সতর্ক থাকুন।
    উইক এন্ড মাটি করতে নয়া অবতারে অবতীর্ণ জামতারা গ্যাং
    কীভাবে বাঁচবেন?
    ১) সর্বদা অথেনটিক সোর্স থেকে অ্যান্টিভাইরাস ডাউনলোড করে রাখুন।
    ২) অ্যাডব্লকিং কিংবা অ্যান্টি ক্রিপ্টোমাইনিং এক্সটেনশনাল ওয়েব ব্রাউজার ব্যবহার করতে পারেন।
    ৩) অচেনা কোনও লিঙ্কে ক্লিক করবেন না।
    ৪) নো কয়েন বা মাইনার ব্লকের মতো এক্সটেনশন থাকলে ক্লিক করবেন না