যশোরের ১১ কেন্দ্রে আজ থেকে শুরু হচ্ছে করোনার টিকাদান কার্যক্রম

0

বিএম আসাদ ॥ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে আজ শুরু হচ্ছে বহু প্রত্যাশিত টিকাদান কর্মসূচি। সকাল ১০টায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারাদেশে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন। এরপর যশোর জেলার ১১টি টিকাদান কেন্দ্রে একযোগে কর্মসূচি শুরু হবে। যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদসহ কয়েকজন আগে টিকা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ভ্যাকসিন প্রদান কমিটির প্রধান যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, যশোরে ৯ হাজার ৬শ’ ভায়ালে ৮৬ হাজার ডোজ ভ্যাকসিন এসেছে। জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে অনলাইনে সুরক্ষা অচচ এ রেজিস্ট্রেশন করে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন নিতে হবে। গত ২৭ জানুয়ারি থেকে অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে। গতকাল দুপুর পর্যন্ত যশোরে ৩ হাজার ৮শ’ ৬৭ জন রেজিস্ট্রেশন করেছেন করোনা ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য।
যশোর সদরে ১ হাজার ৮৬ জন, যশোর সিএমএইচ-এ ৯শ’ ৪৭ জন অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেন। শার্শা উপজেলায় ৫শ’ ৫৬ জন, অভয়নগরে ১শ’ ৯৭ জন, বাঘারপাড়ায় ১শ’ ৫৫ জন, চৌগাছায় ১শ’ ৭৮ জন, ঝিকরগাছায় ১শ’ ৪৯ জন, কেশবপুরে ২শ’ ৩ জন, মনিরামপুরে ৩শ’ ৯৬ জন ভ্যাকসিন নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন অব্যাহত রয়েছে জানিয়ে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, যশোর যারা আবেদন করেছেন তাদের ভেতর প্রথম দিনে ২ হাজার ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন দেয়া যেতে পারে। ৬ সদস্য বিশিষ্ট এক একটি টিম ১শ’ থেকে ১শ ৫০ জন ব্যক্তিকে প্রতিদিন ভ্যাকসিন দেয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। সে মোতাবেক যশোরে ৩৬টি টিম গঠন করা হয়েছে। এর ভেতর ৩৪টি টিম ভ্যাকসিন প্রদানে কাজ করবে। ২টি টিম অতিরিক্ত থাকবে প্রয়োজনে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ৮টি টিম, সিএমএইচএ ৪টি টিম শহরে ৪টি টিম পুলিশ লাইনে ১টি টিম, ৭ উপজেলায় ৩টি করে ২১টি টিম টিকা প্রদান করবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত প্রতিদিন এ ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল হবে করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার কেন্দ্রস্থল। ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য হাসপাতালের পুরুষ আইসোলেশন ওয়ার্ডের সামনে বকুলতলায় প্যানেল করা হয়েছে। ভ্যাকসিন গ্রহণকারীদের বসার জন্য সেখানে থাকছে ৩শ’ চেয়ার। হাসপাতালের পক্ষ থেকে ৪৯ জনের কয়েকটি টিম গঠন করা হয়েছে। ৮টি টিমের প্রত্যেকটি টিমে ২ জন করে ১৬ জন চিকিৎসক, ১৬ জন সেবিকা, টিকা প্রদানে কাজ করবে। ৮ জন চিকিৎসক ২ জন করে ১৬ জন সেবিকা ও কর্মচারী নিয়ে সুপারভিশন টিম গঠন করা হয়েছে। ভ্যাকসিন নিয়ে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের চিকিৎসার জন্য মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. মধুসূদন পালসহ ৩ সদস্য চিকিৎসা টিম গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মী চিকিৎসক কিংবা সেবিকা প্রথমে ভ্যাকসিন নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন যেহেতু কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন কমিটির প্রদান তাই তিনিই বিষয়টি ঠিক করবেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীনের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, এমপি কাজী নাবিল আহমেদ, জেলা বিএমএ-র সাধারণ সম্পাদক ডা. এম এ বাশার, এমনকি তিনিও প্রথম ভ্যাকসিন নিতে পারেন। টিকার দেয়ার সময় সকাল ১০টায় হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে ভিডিও কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হবে। ভিডিও কনফারেন্সে স্বাস্থ্যমন্ত্রী একযোগে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি উদ্বোধনের পর সকাল সাড়ে ১০টায় ভ্যাকসিনের ডোজ প্রদান করা হবে। যশোরের জেলা প্রশাসক মো. তমিজুল ইসলাম খানসহ জেলা পদস্থ কর্মকর্তাগণ, রাজনৈতিক, সামাজিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিকসহ ভ্যাকসিন গ্রহণকারী বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ভ্যাকসিন প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে জানানো হয়েছে।