তামার টন এখন ৮ হাজার ১০০ ডলারের ওপরে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ব্যবহারিক ধাতুর বাজারে ২০২০ সালে অন্যতম সেরা পারফরমার ছিল তামা। নভেল করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারীর টালমাটাল পরিস্থিতি সামলে বছরের শেষভাগে দাম বাড়ে ব্যবহারিক ধাতুটির। তামার মূল্যবৃদ্ধির এ জয়রথ ২০২১ সালে এসেও চাঙ্গা রয়েছে। এমনকি ব্যবহারিক ধাতুটির দাম বেড়ে টনপ্রতি ৮ হাজার ১০০ ডলারের মাইলফলক পেরিয়ে গেছে। বিদ্যমান বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, তামার বাজারে এমন চাঙ্গা ভাব দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকার জোরালো সম্ভাবনা রয়েছে। কেননা করোনা মহামারীর ধাক্কা সামলে এখনো পূর্ণ সক্ষমতায় ফিরতে পারেনি অনেক তামা খনি। ফলে উৎপাদন সীমিত হয়ে তামার দাম বাড়তে পারে। খবর মাইনিংডটকম ও মেটাল বুলেটিন।
লন্ডন মেটাল এক্সচেঞ্জের (এলএমই) প্রাইস ইনডেক্স অনুযায়ী, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা ৭ হাজার ৬৩৫ ডলারে বিক্রি হয়েছিল। এর পর থেকে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম ক্রমশ বেড়েছে। ১৮ ডিসেম্বর নাগাদ ব্যবহারিক ধাতুটির দাম আরো বেড়ে টনপ্রতি ৭ হাজার ৯৬৪ ডলারে উন্নীত হয়। তবে ডিসেম্বরের একেবারে শেষের দিকে এসে তামার দাম কিছুটা কমে আসে। এ ধারাবাহিকতায় বছরের শেষ কার্যদিবসে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা ৭ হাজার ৭৪১ ডলারে বিক্রি হয়।
২০২১ সালের শুরুতে তামার জয়রথ আরো জোরালো হয়ে উঠেছে। এলএমইতে নতুন বছরের প্রথম কার্যদিবসে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম ওঠে ৭ হাজার ৯১৮ ডলার ৫০ সেন্টে। ৬ জানুয়ারি তা আরো বেড়ে ৮ হাজার ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে যায়। ওইদিন এলএমইতে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামা ৮ হাজার ১২৯ ডলার ৫০ সেন্টে বিক্রি হয়, যা আগের দিনের তুলনায় টনে ২১৫ ডলার ৫০ সেন্ট বেশি। ৮ জানুয়ারি এলএমইতে ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে প্রতি টন তামার দাম আরো বেড়ে ৮ হাজার ১৪৬ ডলারে উন্নীত হয়েছে।
এক মাস আগেও যেখানে প্রতি টন তামার দাম ছিল ৭ হাজার ৬৩৫ ডলার, সেখানে এক মাসের ব্যবধানে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম টনপ্রতি ৮ হাজার ১০০ ডলারের মাইলফলক ছাড়িয়ে গেছে। এলএমইতে এই এক মাসেই (গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত) তামার দাম টনে ৫১১ ডলার বেড়েছে। আর ২০২১ সালের প্রথম আট দিনে (১-৮ জানুয়ারি) এলএমইতে তামার দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৫ শতাংশ। বিদায়ী ২০২০ সালে তামার দামে ২৬ শতাংশ উল্লম্ফন বজায় ছিল।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারীর ধাক্কা সামলে বৈশ্বিক তামা উত্তোলন খাত এখনো পূর্ণ উদ্যমে ফিরতে পারেনি। দেখা দিয়েছে কর্মী সংকট। এ ধারাবাহিকতায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় তামা খনি চিলির এসকোনদিদার পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বিএইচপি জানিয়েছে, কর্মীর সংখ্যা সীমিত হয়ে আসায় ২০২১-২২ অর্থবছর পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির তামা উত্তোলন সীমিত থাকতে পারে। একই পরিস্থিতিতে পড়েছে আরো কয়েকটি তামা খনি।
মূলত মহামারীর জের ধরে এমন সংকট বৈশ্বিক তামা শিল্পকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে, যা বাড়িয়ে দিয়েছে ব্যবহারিক ধাতুটির দাম। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না হলে ধাতুর বাজারে তামার মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর জের ধরে ব্যবহারিক ধাতুর বাজারে ২০২০ সালের অন্যতম সেরা পারফরমার চলতি বছরের ভালো সময় পার করতে পারে।