নতুন করোনা থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হবে

0

যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন যে ধরনটি শনাক্ত হয়েছে, সেটি এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশেও একটি নতুন ধরন শনাক্ত করা হয়েছে, যেটি অনেকটাই যুক্তরাজ্যে পাওয়া ধরনটির মতো। বলা হচ্ছে, যুক্তরাজ্যে পাওয়া ভাইরাসের এই ধরনটি আগের তুলনায় ৭০ শতাংশ বেশি সংক্রামক এবং এটি শিশুদের বেশি সংক্রমিত করে। যদি তা-ই হয়, তাহলে বিপদের আশঙ্কা অনেক বেশি থাকবে। কারণ, শিশুরা খুব বেশি নিয়ম-কানুন মেনে চলবে না এবং এ পর্যন্ত উদ্ভাবিত টিকাগুলোও শিশুদের জন্য নয়। ফলে ভাইরাসের এই নতুন ধরনটিতে শিশুদের তির আশঙ্কা অনেক বেশি থাকবে। এসব কারণে যুক্তরাজ্যের নতুন ধরনের ভাইরাসের আক্রমণ থেকে বাঁচতে ৪০টিরও বেশি দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশ বিমান এখনো যুক্তরাজ্যে ফাইট পরিচালনা বন্ধ করেনি। যত দূর জানা যায়, প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের ব্যাপারেও শৈথিল্য রয়েছে। ফলে, বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশেও ভাইরাসের এই ধরনটি ছড়িয়ে পড়ার যথেষ্ট আশঙ্কা রয়েছে। এমন হলে আমরা বড় ধরনের য়তির সম্মুখীন হব।
এক বছরে ভাইরাসটি সম্পর্কে মানুষ অনেক কিছু জেনেছে; কিন্তু এখনো জানার অনেক কিছুই বাকি। জানা যায়, ভাইরাসটি প্রতিনিয়ত রূপ বদলায়। যুক্তরাজ্য ছাড়াও বেশ কয়েকটি দেশে নতুন নতুন ধরন পাওয়া গেছে। কোনো কোনোটি অনেক মারাত্মক। করোনা রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনায় কিছুটা উন্নতি হলেও এখনো সেটি খুব একটা আশাপ্রদ নয়। মৃত্যুর হারও অনেক বেশি। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আগের চেয়ে ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। অনেক উন্নত দেশেই আইসিইউ শয্যা দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। কোনো কোনো দেশে রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্সে রেখেই চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। উন্নত দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধা এমনিতেই কম। সে েেত্র প্রতিরোধেই আমাদের বেশি নজর দিতে হবে। অনেক দেশে টিকা প্রয়োগ শুরু হলেও আমরা কবে টিকা হাতে পাব, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কেউ কেউ বলছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম চালান আসতে পারে। ছয় মাসে এই টিকার তিন কোটি ডোজ আসার কথা। আশা করা হচ্ছে, জাতিসংঘের টিকা বণ্টন উদ্যোগ থেকে ছয় মাসে আরো ছয় কোটি ডোজ টিকা আসতে পারে। কিন্তু আমাদের টিকার প্রয়োজন হবে ৩৪ কোটি ডোজ। অর্থাৎ এই দুই উৎস থেকে টিকা আসার পরও ২৫ কোটি ডোজ টিকা লাগবে। তাই বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, টিকা সংগ্রহের উদ্যোগ আরো জোরদার করা প্রয়োজন।
টিকা ও চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা উভয় দিক থেকেই আমরা পিছিয়ে আছি। তাই, সচেতনতা ও নিয়ম-কানুন মেনে চলাটা আমাদের জন্য বেশি জরুরি। আশা করি, করোনা মোকাবেলায় সরকার আরো বেশি যতœবান হবে এবং দেশের মানুষের সুরা নিশ্চিত করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। প্রথম দফার ভুল থেকে অর্জিত শিক্ষা এবার ভালোভাবে কাজে লাগবে। শিশুদের সুরক্ষায় সরকারি বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ ছাড়াও সচেতনতায় বৃদ্ধিতে সকল মিডিয়াকে কাজে লাগাতে সক্ষম হবে।