শাশুড়ির পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাটে শাশুড়ির পরকীয়ায় বাধা দেওয়ায় ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ উঠেছে স্বামীসহ শ^শুর বাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। ঘটনার শিকার গৃহবধূ সাদিয়া আকতার মান্নিকে (২০) বাগেরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি খুলনার আযম খান সরকারি কমার্স কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী। আহতের পরিবারের অভিযোগ, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার রনসেন গ্রামের আশিকুর রহমান সোহানের সাথে সাদিয়া আকতার মান্নির বিয়ে হয়। বিয়ের তিন মাস পর মান্নি জানতে পারেন তার শাশুড়ি পরকীয়ায় আসক্ত। বিষয়টি স্বামীকে জানালে তার ওপর শুরু অত্যাচার নির্যাতন। এক পর্যায়ে মান্নিœ অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তার ওপর বেড়ে যায় নির্যাতনের মাত্রা। পরে তিনি বাবার বাড়িতে চলে যান। এ ঘটনায় মান্নির পরিবার বাগেরহাট লিগ্যাল এইডে বিচার চেয়ে আবেদন করে। সেখানে তার স্বামী আশিকুর রহমান সোহান স্ত্রীকে মেনে নিবেন না বলে চলে যান। পরের দিন ৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় মান্নির বাড়িতে আসেন সোহানসহ আরও কয়েকজন। এ সময় মান্নির মা অতিথি আপ্যায়নে ব্যস্ত ছিলেন। এরই মধ্যে ঘরের বারান্দায় ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মান্নিকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যান তারা। পরে মান্নিকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মান্নির মা সাকিরা বেগম বলেন, ‘আমরা ব্যাপক আয়োজনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে মান্নির বিয়ে দিই। সামান্য ঘটনা নিয়ে আমার মেয়ের ওপর এমন হামলা করবে তা কখনো বুঝতে পারিনি। মান্নির গর্ভে সন্তান রয়েছে। আমি মা হিসেবে মেয়ের ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ আহত সাদিয়া আকতার মান্নি বলেন, ‘বিয়ের দু’মাস পরই শাশুড়ির পরকীয়া প্রেমের বিষয়টি জানতে পারি। তখন আমার স্বামীকে জানাই। এরপর থেকেই আমার ওপর শাশুড়ি ও স্বামী দুজনেই শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। অনেক সময় মুখ বুঝে সহ্য করতাম। এরপরে আরও বেশি নির্যাতন করায় আমার পরিবারকে জানাই। ঘটনার দিন আমি কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারধর শুরু করে। আমি দোষীদের বিচার চাই।’ বাগেরহাট সদর হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সাদিয়া আকতার মান্নি মাথায় জখম হয়েছেন। বর্তমানে তিনি আশঙ্কামুক্ত। তবে তার গর্ভের সন্তান সম্পর্কে জানার জন্য আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করছি।’ বাগেরহাট পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র বলেন, ‘আহত গৃহবধূর পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’