শত কোটি টাকার ৪ লেন প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ খুলনা মহানগরীর বঙ্গবন্ধু চত্বর (ময়লাপোতা মোড়) থেকে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত শেরে বাংলা সড়ক চার লেনে উন্নীত করার কাজ শুরু হয় গত অক্টোবর মাসে। সড়ক সম্প্রসারণের জন্য দুপাশে গর্ত খোঁড়ে সড়ক বিভাগ। গল্লামারী শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ থেকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে দিয়ে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত এসব গর্ত খোঁড়া হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই এ কাজ বন্ধ করা হয়েছে। সড়ক সম্প্রসারণের কাজ করার সময় দুপাশের নালায় জব মাটি পাওয়ার কারণে কাজ বিঘ্নিত হওয়ায় এ কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সড়ক বিভাগ। এতে সড়কের দুপাশে বড় গর্ত থাকায় ঝুঁকিপূর্ণভাবে যান চলাচল করছে। পথচারীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাতায়াতে। খুলনা সড়ক বিভাগের এ প্রকল্পের ব্যয় ১০০ কোটি টাকা। গত ১৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। শুরুতেই সড়কের সম্প্রসারিত অংশের জন্য দুপাশের মাটি খোঁড়া হয়। খোঁড়ার দুই সপ্তাহের মধ্যেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
সরেজমিন দেখা গেছে, গল্লামারী মোড়ের শহীদ স্মৃতিস্তম্ভের সামনে থেকে সাত-আট ফুট চওড়া এবং তিন ফুট গভীরভাবে সড়ক খোড়া। দেখে মনে হচ্ছে, সড়কের পাশে খাল কাটা হয়েছে। বিপরীত পাশে আগে থেকেই লেক থাকায় লেকের মধ্যে সীমানা প্রাচীর দিয়ে বালু ফেলা হয়েছে। জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের নিচু জায়গায় বালু ভরাট এবং দক্ষিণপাশে গর্ত খুড়ে রাখা হয়েছে। খুলনা সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান মাসুদ বলেন, ‘সম্প্রসারিত অংশে খোঁড়ার পর নরম মাটি পাওয়া গেছে। এজন্য কাজের নকশা সংশোধন করতে ঢাকায় ফের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। নকশা সংশোধন হয়ে গেলে দ্রুত কাজ শুরু হবে।’ তিনি আরও জানান, উচ্ছেদের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে নথি তৈরি করা হয়েছে। বিদ্যুতের খুটি অপসারণের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে।
খুলনা সড়ক বিভাগের প্রকৌশলী আনোয়ার পারভেজ বলেন, ‘সড়কের সম্প্রসারিত অংশে জব মাটি পাওয়ার কারণে সড়কটি টেকসই করতে এস্টিমেটে পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। তাই আপাতত কাজ বন্ধ রয়েছে। সড়কের দুপাশে থাকা ৩০০ বৈদ্যুতিক পোল সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আর ময়লাপোতা থেকে গল্লামারী পর্যন্ত সড়কের দুপাশে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। এ জন্য কেসিসির সহায়তায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো প্রয়োজন হতে পারে।’ এদিকে সড়ক সংস্কারের জন্য পাথরের টুকরো এনে ফেলে রাখা হয়েছে বিভিন্ন সড়কের ওপর। কিন্তু সেই সংস্কার কাজ কবে নাগাদ শুরু বা শেষ হবে তার ঠিক নেই। ফলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পাথরের টুকরোগুলো ধীরে ধীরে পুরো সড়কেই ছড়িয়ে পড়েছে। যে কারণে পথ চলতে যানবাহন ও পথচারীদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই এ দুর্ভোগ অব্যাহত থাকলেও তা নিরসনের কোনও উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ফলে দুর্ভোগের মাত্রা বেড়ে গেছে। দেখা গেছে, এ সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন ঝুঁকি নিয়ে চলছে। বিশেষ করে রিকশা-ভ্যান ঠেলে নিতে হচ্ছে। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিতে ব্যাপক যানজটেরও সৃষ্টি হয়। দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। এ সময় যাত্রী ও চালকদের মুখে চরম বিরক্তি ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। খুলনা সিটি করপোরেশনের পূর্ত বিভাগের সহকারী প্রকৌশলী শেখ মো. মাসুদ করিম বলেন, ‘ডাকবাংলা থেকে শান্তিধাম-শামসুর রহমান সড়কের মুখ পর্যন্ত সড়কটির ড্রেন সংস্কারের কাজ করছে ‘মল্লিক কন্ট্রাকশন’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরু হয়েছে। তারাই পাথর এনে রেখেছে। তবে আপাতত ওই সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হবে। খুলনা বিদ্যুৎ বিভাগের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শেরে বাংলা রোডের বৈদ্যুতিক খুটি সরানোর বিষয়ে তারা কাজ করছেন। সড়ক বিভাগ থেকে দেওয়া তালিকা অনুযায়ী তারা ওই সব পোল তুলে আবার নিরাপদ স্থানে স্থাপন করা হবে।