ব্রেক্সিটের কারণে ব্রিটেনে খাবারের দাম বাড়বে?

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ১ জানুয়ারি থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নিয়ম অনুসরণ বন্ধ করে দেবে ব্রিটেন এবং ইউরোপের সঙ্গে গড়ে তুলবে নতুন বাণিজ্য সম্পর্ক। যদিও সেই সম্পর্ক কেমন হবে তা এখনো অজানা। কিন্তু সেই প্রভাব সর্বত্রই অনুভূত হবে। বিশেষ করে কেনাকাটার ক্ষেত্রে তো বটেই। খবর বিবিসি।
ব্রিটেনে যত খাবার খাওয়া হয়, তার এক-চতুর্থাংশ আসে ইইউ থেকে। এ বছরের ৩১ জানুয়ারি যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে বেরিয়ে গেলেও আগের মতোই অব্যাহত ছিল দুই পক্ষের বাণিজ্য। স্প্যানিশ লেটুস, ডাচ টমেটো, ফ্রেঞ্চ ওয়াইন ও ডেনিশ বেকন যুক্তরাজ্যে এসেছে সীমান্তে কোনো ধরনের নজরদারি ছাড়াই। পাশাপাশি তাতে যুক্তরাজ্য সরকার কোনো আমদানি শুল্কও আরোপ করেনি।
আগামী ১ জানুয়ারি থেকে বদলে যাবে এই নিয়ম, কিন্তু চুক্তি এখনো দরকষাকষির পর্যায়ে রয়েছে। এখানে শেষ পর্যন্ত দুই ধরনের ফল দেখা যেতে পারে। প্রথমত, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন নতুন বাণিজ্য চুক্তিতে সম্মত হতে পারে, যা শুল্ক ছাড়াই আমদানি অব্যাহত রাখার অনুমতি দেবে কিংবা যদি দুই পক্ষ শেষ পর্যন্ত চুক্তিতে একমত হতে না পারে, তবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) তৈরি করা নিয়ম অনুসরণ করতে পারে, যেখানে খাবারের ওপর উভয় পক্ষকেই উল্লেখযোগ্য শুল্ক চাপ বহন করতে হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ১ জানুয়ারি থেকে খাবারের মূল্য কি বেশি হবে? ডব্লিউটিওর নিয়ম অনুসারে সুপারমার্কেট এবং অন্য আমদানিকারকদের ইইউ থেকে আনা অনেক খাবারের ওপরে উল্লেখযোগ্য শুল্ক পরিশোধ করতে হয়। মাংস ও দুগ্ধজাত পণ্যকে সবচেয়ে বেশি শুল্ক বোঝা নিতে হয়। কিন্তু ফলমূল ও সবজির মতো খাদ্য দ্রব্যগুলোর ওপরও এর প্রভাব পড়বে।লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকস বলছে, গুরুতর ক্ষেত্রে বিশেষায়িত পনিরজাত খাবারগুলোর মূল্য ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তে পারে।
সরকারের মন্ত্রী জর্জ ইউসটিস বলেছেন, গড়ে মূল্য বৃদ্ধি ২ শতাংশের নিচে থাকবে। যদিও তিনি স্বীকার করেছেন যে শূকর ও গরুর মাংসের বাজারে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা লাগবে।
স্বল্পমেয়াদে মূল্যবৃদ্ধির এই চাপ দোকানগুলো নিতে পারবে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এই চাপ হয়তো তারা গ্রাহকদের ওপর চাপিয়ে দিতে শুরু করবে।
শুল্ক মূল্যবৃদ্ধির একমাত্র কারণ নয়। যুক্তরাজ্যের ভেতরে-বাইরে খাবার আনা-নেয়ার জন্য অনেক বেশি পেপারওয়ার্ক সম্পন্ন করতে হবে। এছাড়া উভয় দিক থেকেই নানা ধরনের বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে, যার সবকিছুতে অর্থ ব্যয় হবে। তাই শুল্ক চাপ না থাকলেও খাবারের মূল্য বেশি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। সব খরচ মিলিয়ে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের হিসাবে বাণিজ্য চুক্তিতে মূল্য বাড়তে পারে ৪ দশমিক ৭ শতাংশ, যেটা চুক্তি ছাড়া হতে পারে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ।