বন্ধ হল রাষ্ট্রায়ত্ত ৬ চিনিকল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ লোকসান কমাতে চলতি মাড়াই মওসুমে রাষ্ট্রায়ত্ত ১৫টি চিনিকলের মধ্যে ছয়টি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই খবরে ওই সব কারখানার শ্রমিক-কর্মকর্তাদের মধ্যে চাকরিচ্যুতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে আপাতত তাদের বেতন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশে চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন-বিএসএফআইসি। চলতি মাসের শুরুতে নেওয়া এই সিদ্ধান্তের চিঠি বৃহস্পতিবারই সংশ্লিষ্ট মিলগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের কাছে পৌঁছে গেছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত পাবনা সুগার মিল, শ্যামপুর সুগারমিল, পঞ্চগড় সুগার মিল, সেতাবগঞ্জ সুগারমিল, রংপুর সুগার মিল ও কুষ্টিয়া সুগার মিলে উৎপাদন কাজ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন বিএসএফআইসির চেয়ারম্যান সনৎ কুমার সাহা। তিনি বলেন, চিনিকলগুলোর উৎপাদন সক্ষমতা কমে যাওয়াসহ বিভিন্ন কারণে দীর্ঘ দিন ধরে লোকসান গুনতে হচ্ছে। তাই ‘সংস্কার ও আধুনিকায়নের’ উদ্দেশ্যেই কারখানাগুলো আপাতত বন্ধ করা হয়েছে।
কয়েকজন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে চিঠিতে চিনিকলের উৎপাদন বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাতে সংস্কার কিংবা আধুনিকায়নের কথা বলা হয়নি। তবে বেতন অব্যাহত রেখে কেবল উৎপাদন বন্ধ রাখলেও ‘কয়েক কোটি টাকার’ লোকসান ঠেকানো যাবে বলে জানান তারা। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে আখ মাড়াই শেষে প্রায় ৫০ কোটি টাকার লোকসান দিয়েছে সেতাবগঞ্জ সুগার মিল। এ বছর উৎপাদন বন্ধ রাখার চিঠি পেয়েছে কারখানাটি। ফলে এই চিনিকলের আওতাভূক্ত আখগুলো চলে যাবে পাশের ঠাকুরগাঁও সুগার মিলে। সেতাবগঞ্জ সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম জাকির হোসেন বলেন, এই মিলে চুক্তিভিত্তিক দেড়শ জনবলসহ মোট ৫০০ স্থায়ী লোকবল রয়েছে। এর বাইরে মাড়াই মওসুমে কাজ করার মতো আরও প্রায় ৪০০ লোকবল রয়েছে। তবে মাড়াই বন্ধ থাকার কারণে মওসুমের অন্তত ৪০০ জনকে বেতন দিতে হবে না। যারা স্থায়ী নিয়োগে রয়েছেন তাদের বেতন দিতে প্রতি মাসে প্রায় এক কোটি ১৫ লাখ টাকা করে প্রয়োজন হবে। পাবনা সুগার মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবার নয়টি সুগারমিল চলবে এবং বাকি ছয়টি বন্ধ থাকবে। চিনি শিল্পের ইতিহাসে আগে কখনোই এমন ঘটনা ঘটেনি। “লোকসান কমিয়ে আনার জন্য করপোরেশন এই চিন্তা করেছে। যেহেতু প্রডাকশন কষ্ট বেশি পড়ছে সে কারণে খরচ কিছুটা কমবে।” পাবনা সুগার মিলে মোট জনশক্তি ৬৮৭ জন। এর বাইরে মাড়াই মওসুমে আরও কয়েকশ মানুষ সেখানে চাকরি করেন। এক কোটি টাকা থেকে এক কোটি ৬০ লাখ টাকা প্রয়োজন হয় বেতন বাবদ। অবসর সময়ে জনশক্তিকে কী কাজে লাগানো হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অবসরের সুযোগে শ্রমিকরা অন্য মিলে গিয়ে কাজ করবেন। আর পাবনার আখ যাবে নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে।