বাংলাদেশের জালে কাতারের পাঁচ গোল

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ আগে থেকেই বলা হচ্ছিল বাংলাদেশের লড়াইটা অসম প্রতিপক্ষের বিপক্ষে। তারপরর অন্তত একটা পয়েন্ট পাওয়া যায় কি না সেই স্বপ্নটা ছিল জামাল ভূঁইয়াদের। কিন্তু সেই স্বপ্নটা স্বপ্নই থেকে গেলো। এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন কাতার কোন জায়গায় আছে তা আবার বুঝলো বাংলাদেশ। দোহার আব্দুল্লাহ বিন খলিফা স্টেডিয়ামে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে জেমি ডের দল। বিশ্বকাপ ও এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ম্যাচে কাতার ৫-০ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। ম্যাচের প্রথমার্ধেই কাতার ২-০ গোলে এগিয়ে যায়। আশা ছিল অন্তত যথাসাধ্য লড়াই করবে বাংলাদেশ। কিন্তু স্বাগতিকদের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি সফরকারীরা। এই ম্যাচে অভিজ্ঞ বাংলাদেশ গোলকিপার আশরাফুল ইসলামকে ছাড়া মাঠে নামে বাংলাদেশ। রানার জায়গায় তেকাঠির নিচে ছিলেন আনিসুর রহমান জিকো।
অসাধারণ খেলেছেন জিকো। পোস্টের নিচে জিকো না থাকলে আরও কতগুলো গোল যে বাংলাদেশকে খেতে হতো কে জানে। প্রথমার্ধের শুরু থেকেই স্বাগতিকরা চেপে ধরে বাংলাদেশকে। বুলডোজার চালায়। একের পর এক আক্রমণ গড়ে তটস্থ করে রাখে তপু-রিয়াদুলদের। মূলত খেলা হয়েছে বাংলাদেশ অর্ধেই। শারীরিক দিক দিয়ে শুধু নয়, টেকনিক্যাল ও ট্যাকটিক্যাল দিক দিয়েও যে কাতার কত এগিয়ে, মাঠে তা আবারও প্রমাণিত। ফিফা র‌্যাঙ্কিংই সেটি বলে দেয়। ৫৯ নম্বরে থাকা কাতার বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে ১২৫ ধাপ। ওরা আক্রমণ শানিয়েছে ম্যাচের শুরু থেকে। তবে বামদিক দিয়ে ফরোয়ার্ড আকরাম হাসান আফিফ ছিলেন অনন্য। শুরুতে তার ক্রস থেকে আহমেদ আলাদিনের হেড বারের নিচে লেগে প্রতিহত হয়েছে। তবে ৯ মিনিটে কাতার লক্ষ্যভেদ করে এগিয়ে গেছে। সতীর্থের কাটব্যাক থেকে মিডফিল্ডার আবদেল আজিজের শট বাংলাদেশের এক ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে দিক পরিবর্তন করে জড়ায় জালে। বারবার আক্রমণে ওঠা কাতার ৩১ মিনিটেও চেষ্টা করেছিল আবার। কিন্তু আফিফের শট কোনমতে রুখে দিয়েছেন গোলকিপার জিকো। দুই মিনিট পর অবশ্য কাতার নিজেদের আফিফের শটেই ২-০ করে ফেলে। সেই আফিফ জায়গা তৈরি করে বক্সের প্রান্ত থেকে কোনাকুনি শটে জড়িয়ে দেন বল। বিরতিতে যাওয়ার আগেও কাতারের আক্রমণ ছিল অব্যাহত। তবে আর ব্যবধান বাড়তে দেয়নি বাংলাদেশ। বিপরীতে জামাল-সুফিলরা প্রতি আক্রমণে একাধিকবার স্বাগতিকদের সীমানায় বল নিয়ে গেলেও কিছুই করতে পারেননি।
বিরতির পর বাংলাদেশ চারটি পরিবর্তন আনে। সুফিলের জায়গায় নাবীব নেওয়াজ জীবন ও তপুর পরিবর্তে ইয়াসিন নামেন। আর বিপলুর জায়গায় সুমন রেজা ও সাদ উদ্দিনের জায়গায় রাকিব হোসেন খেলেছেন। কিন্তু তারপরও ম্যাচের ভাগ্যে কোনও পরিবর্তন হয়নি। এই অর্ধে আরও তিনটি গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। যদিও গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকো তেকাঠির নিচে ছিলেন দুর্বার। ৫৪,৬২ও ৬৪ মিনিটে তিনটি গোলের প্রচেষ্টা রুখে দেন জিকো। ৭০ মিনিটে সোহেল রানা স্বাগতিকদের একজনকে ফাউল করেন বক্সে। মালয়েশিয়ার রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজালে আল মুয়াজ গোলকিপার জিকোর ডান দিক দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন। কিছুক্ষণ পর সতীর্থের পাস থেকে আল মুয়াজ ফাঁকায় বুক দিয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন। যোগ করা সময়ে কাতার শেষ পেরেকটি ঠুকে দেয় বাংলাদেশের জালে। আফিফ দূরের পোস্ট দিয়ে বল ঠেলে দিয়ে নিজের দ্বিতীয় ও দলের পঞ্চম গোল এনে দেন। কাতার ‘ই’ গ্রুপে ৬ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষেই আছে। অন্য দিকে বাংলাদেশ এক ম্যাচ কম খেলে এক পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে। বাংলাদেশ দল: আনিসুর রহমান জিকো,রহমত মিয়া,তপু বর্মণ (ইয়াসিন),রিয়াদুল হাসান,বিশ্বনাথ ঘোষ,জামাল ভূঁইয়া,সোহেল রানা,বিপলু আহমেদ(সুমন),সাদ উদ্দিন(রাকিব),মোহাম্মদ ইব্রাহিম ও মাহবুবুর রহমান সুফিল(জীবন)।