সুন্দরবনের রাস পুর্ণিমায় হরিণ শিকারের আশঙ্কা

0

এইচএম শফিউল ইসিলাম,কপিলমুনি (খুলনা)॥ সুন্দরবনে প্রতি বছরের মত এবারও অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে রাস পুর্ণিমা উৎসব। চলতি মাসের ২৮ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত ৩ দিনব্যাপী দুবলার চরে ঐতিহ্যবাহী রাস পুর্ণিমা ও পূণ্য ¯œান অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় হরিণ শিকারের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানা গেছে। এদিকে রাস উৎসব উপলক্ষে বন মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর ২ নভেম্বর খুলনা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে পূজা উদযাপন পরিষদের সাথে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, খুলনার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বন কর্মকর্তাদের জরুরি আলোচনা সভা হয়। সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে করোনা কালীন সীমিত আকারে পূজা দিতে কেবল সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীরা যেতে পারবে। সভায় সুন্দরবনের উৎসব পালনে পূণ্য ¯œান যাত্রীদের রুট নির্ধারণও করা হয়। এছাড়া সুন্দরবনে সাগর তীরে যাওয়ার সময় স্থানীয় চেয়ারম্যান কর্তৃক সত্যায়িত সনদ, আইডি কার্ড, মুখে মাস্ক বাধ্যতা মূলক করা হয়েছে। সকল প্রস্তুতি সম্পন্নের পর সরকারি ফি দিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করতেও বলা হয়েছে। সভায় আরো জানানো হয়, নদী বা খালে যাওয়া, শব্দ দূষণ ও হরিণ শিকার করা যাবে না। বন মন্ত্রণালয়ের সভায় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাস পুর্ণিমা সনাতন ধর্ম বিশ্বাসীদের এবং চলতি করোনা ভাইরাসের কারণে মেলার আয়োজন করা যাবে না। তাই, এ বছর মুসলিম বা অন্য ধর্মাবলম্বীরা যেতে পারবেন না বলে বন মন্ত্রণালয় সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন। সুন্দরবন পশ্চিম বিভাগের ডিএফও আবু নাসের মহসিন হোসেন বলেন আমরা অন্যবারের তুলনা রাস উৎসবের সকল আায়োজন ছোট আকার করতে যাচ্ছি। এদিকে রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে বেআইনিভাবে হরিণ শিকারিরা প্রস্তুত চলছে বলে স্থানীয় একাধিক সূত্রে খবর পাওয়া গেছে। প্রতি বছর এ সময় হরিণ শিকার করে গোপনে চড়াদামে মাংস বিক্রি করা হয়।
সূত্রমতে,এসব শিকারীরা হিন্দু সম্প্রদায়ের পরিচিতজনদের কাছ থেকে আইডি কার্ড সংগ্রহ করে জমা দিচ্ছে এবং বনে যাওয়ার পাস সংগ্রহ করার চেষ্টা করছে। প্রতিবার জঙ্গলে যাওয়া কপিলমুনির অমল মন্ডল বলেন, কোন প্রকার বাঁধা দিয়ে হরিণ শিকার বন্ধ করতে পারবে না। কারণ ড্রামে সুতা জাল ভরে নির্দিষ্ট স্থানে মাটির নিচে পোতা রয়েছে আমরা সকলেই সময় হলে শিকার করবো। হাবিব নগরের মো. ইছাক আলী মোড়ল বলেন, সেই প্রথম থেকেই সব বছরে রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে হরিণ শিকার করা হয়। তিনি আরও বলেন সুন্দরবনে প্রতিটা ট্রলারের প্রবেশ মুখে নদীর বাঁেক হরিণের মাংস নিয়ে বসে থাকে উচ্চ মূল্যে বিক্রির আশায়। হরিঢালীর মিজানুর গাজী বলেন, যে বার শুনি জঙ্গলে কড়াকড়ি সেবারই বেশিকরে হরিণ শিকার করে ট্রলারে ভাগাভাগি করে খাই আমরা। নাম না বলার শর্তে চোরা শিকারিরা বলেন, এবার হিন্দু সেজে জঙ্গলে যাব ,কোন প্রকার বাঁধা মানবো না। এ বিষয় পাইকগাছা নির্বাহী অফিসার খালিদ হোসেন সিদ্দীকি বলেন, তিনি জানতে পেরেছেন অনেক মুসলিম শিকারি হিন্দুদের বাড়িতে গিয়ে আইডি কার্ড নিয়ে বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিচ্ছে সুন্দরবনের রাস মেলায় যাওয়ার জন্য। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি হাবিবুর রহমান বলেন, হরিণ শিকার বন্ধে তারা টহল জোরদার করবেন এবং সুন্দরবনে প্রবেশ কড়াকড়ি করবেন।