এবছর ৪ লাখ মে. টন ইলিশ উৎপাদন হতে পারে

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নিষেধাজ্ঞা শেষে গত বুধবার মধ্য রাত থেকেই ইলিশ শিকারে নেমেছে জেলেরা। প্রজনন মৌসুম সফল হওয়ায় এ বছর ৪ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ সম্ভব হবে বলে দাবি করেছে মৎস্য বিভাগ। বরিশাল মৎস্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক আনিচুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
ইলিশের প্রজনন মৌসুম নিরাপদ রাখতে গত ২১ দিন নদীতে মাছ ধরা নিষিদ্ধ রেখেছিল মৎস্য বিভাগ। এসময় নিয়ম অমান্য করা জেলেদের বিরুদ্ধে চলেছে অভিযান। বরিশাল বিভাগে ৯৮৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে মাছ শিকারের দায়ে ১ হাজার ১শ’৭৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ১ হাজার ৫৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়। অর্থদণ্ডে মোট ১৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। অভিযানে মোট ৭৮ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ৯ হাজার ৫শ’কেজি ইলিশ মাছ উদ্ধার করা হয়। জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস জানান, গত বছরের তুলনায় এবার নদীর পরিবেশ ভালো ছিল। এবার যে পরিমাণ মা ইলিশ ডিম অবমুক্ত করার সুযোগ পেয়েছে তাতে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সমন্বয় করে এবার ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য বিভাগ।
বরিশাল মৎস্য অধিদফতরের উপ-পরিচালক আনিচুর রহমান জানান, প্রজনন মৌসুমে প্রতিটি মা ইলিশ ২ লাখ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়তে সক্ষম এবং অবমুক্ত ডিমের ১০ ভাগ মাছে পরিণত হবে। দেশে উৎপাদিত ইলিশের ৭০ ভাগ আহরণ হয় মেঘনা নদীর ভোলার শাহবাজপুর, বরিশালের তেঁতুলিয়া ও পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীর ৩৫০ কিলোমিটার এলাকার ৫টি অভয়াশ্রম থেকে। এ সকল অভায়শ্রমে ৬শ’ গ্রাম ওজনের একটি ইলিশ ১শ’ গ্রামের বেশি ডিম ধারণ করে। প্রতিটি ডিমে ২ লাখ থেকে ২০ লাখ ডিম্বানু থাকে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে অধিকাংশ মা ইলিশ নদীতে ডিম অবমুক্ত করে। এ বছর অধিক পরিমাণ মা মাছ ডিম ছাড়ার সুযোগ পেয়েছে। তাই, প্রজনন মৌসুম সফল হওয়ায় এ বছর ৪ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা সম্ভব হতে পারে। বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকার জানান, অভিযানকালীন সময়ে বিভাগের ২ লাখ ৮২ হাজার জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। জেলেরা সচেতন হওয়ায় এবার নিষেধাজ্ঞাকালীন তারা নদীতে মাছ শিকারে নামেনি। এ কারণে এবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন তিনি।