উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরাসরি ঋণ দেয়া সম্ভব নয়

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে রিজার্ভ থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় সরাসরি ঋণ দেয়া সম্ভব নয়। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত বাংলাদেশ ব্যাংকের এক পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ৬ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)-এর সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, আমরা বিদেশ থেকে ডলারে ঋণ নিই। আমাদের যেহেতু ডলার আছে, সেহেতু আমরা নিজেদের ডলার থেকে নিজেরাই ঋণ নিতে পারি। এ বিষয়ে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারি খাতের বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পে ঋণ নেয়া যায় কিনা এবং এর প্রভাব ও সম্ভাবনার খুঁটিনাটি যাচাই-বাছাই করে দেখতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। এ ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মতামত জানতে চায় অর্থ মন্ত্রণালয়।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, কোনো প্রকল্পে সরাসরি রিজার্ভ থেকে ঋণ দেয়ার সুযোগ নেই। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বৈদেশিক মুদ্রা ধার দিয়ে, বিক্রি করে বা আমানত রেখে উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা করতে পারে। এর বিপরীতে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত হারে সুদ আরোপ করে থাকে। প্রক্রিয়াটি হচ্ছেÑযে কোনো প্রকল্পের উপকরণ আমদানির জন্য প্রথমে ব্যাংকে এলসি খোলা হয়ে থাকে। এলসি খোলা বা এলসির দেনা পরিশোধের সময় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রার যোগান দিতে না পারলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তখন রিজার্ভ থেকে ঘাটতি চাহিদার যোগান দিয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ও গ্রাহককে বেশ কিছু শর্ত পালন করতে হয়। শর্তানুযায়ী, প্রকল্পটি সরকারি খাতের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত হতে হবে। সেই সঙ্গে এর বিপরীতে সরকারের গ্যারান্টি থাকতে হবে। সরকারি খাতের প্রকল্প বা গ্যারান্টি না থাকলে অর্থায়ন করা হয় না। প্রকল্পের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করতে হবে। অন্যথায় অর্থায়নের জন্য বিবেচিত হবে না। প্রকল্পের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের ব্যাপারে ঝুঁকি বিশ্লেষণ করা হয়। সম্ভাব্য কোনো বিপর্যয়ের কারণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাধাগ্রস্ত হবে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হয়ে থাকে।
সূত্রমতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সংকট থাকলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে যোগান দেয়া হয়। বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার যৌক্তিক পর্যায়ে ধরে রাখতে বাজারের চাহিদা অনুযায়ী বৈদেশিক মুদ্রায় তারল্য বাড়ানো হয়ে থাকে। ফলে বিনিময় হার দীর্ঘদিন ধরে স্থিতিশীল রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব এবং এ-সংক্রান্ত অর্থ মন্ত্রণালয়ের চিঠি পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি বিস্তারিত আলোচনা ও পর্যালোচনা করেছে। এক্ষেত্রে রিজার্ভ ব্যবহারের ধরন, রিজার্ভের বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও অন্যান্য দেশ কীভাবে তা ব্যবহার করে ইত্যাদি পর্যালোচনা করা হয়েছে। রেজা, জামান