আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলার সব আসামি খালাস
লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংস মামলায় প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানিসহ ৩২ আসামির সবাইকে খালাস দিয়েছে আদালত। বুধবার স্থানীয় সময় দুপুরে লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব রায় এ রায় ঘোষণা করেন। এনডিটিভি জানায়, মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা ‘পূর্বপরিকল্পিত ছিল না’ বলেও রায়ে উল্লেখ করেন বিচারক। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘পর্যাপ্ত স্যা-প্রমাণ নেই’ উল্লেখ করে রায়ে আরও বলা হয়, ‘সমাজবিরোধীরাই গম্বুজে ওপরে উঠেছিল। অভিযুক্তরা তাদের থামানোর চেষ্টা করেছিলেন।’ ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল উগ্রপন্থী হিন্দু করসেবকরা। প্রবীণ বিজেপি নেতা লালকৃষ্ণ আদভানি, মুরলিমনোহর জোশী, উমা ভারতীর মতো নেতানেত্রীদের বিরুদ্ধে মসজিদ ভাঙার ষড়যন্ত্র, পরিকল্পনা ও উস্কানির অভিযোগ আনা হয়। বাবরি ধ্বংস মামলায় মোট ৪৯ জন অভিযুক্তের মধ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের অশোক সিঙ্ঘল, শিবসেনার বাল ঠাকরে, অযোধ্যার পরমহংস রামচন্দ্র দাসের মতো ১৭ জন ইতিমধ্যে মারা গেছেন। প্রায় ২৮ বছর আগের ওই ঘটনা চিরকালের মতো বদলে দিয়েছিল ভারতের সামাজিক এবং রাজনৈতিক গতিপথ। এ নিয়ে ভারতে রীতিমতো হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায় মারা যায় প্রায় দুই হাজার মানুষ।

লড়াইয়ে বাড়ছে হতাহত, সংলাপ নাকচ আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার
লোকসমাজ ডেস্ক॥ আর্মেনিয়ার দখলে থাকা নাগোরনো-কারাবাখ ঘিরে পুরোদমে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে আজারবাইজান। এতে উভয়পে হতাহত ও য়তির ঘটনা বাড়ছে। এদিকে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর আহ্বান সত্ত্বেও আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছে আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। আলজাজিরা জানায়, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া সাাৎকারে আজেরি প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ আলোচনার কোনো ধরনের সম্ভাবনার কথা সরাসরি নাকচ করে দেন। একই টেলিভিশনকে দেওয়া সাাৎকারে আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, নাগরনো-কারাবাখে লড়াই অব্যাহত থাকলে কোনো আলোচনা নয়। স্থানীয় সময় রবিবার ভোরে শুরু হওয়া লড়াইয়ে দুই পই পরস্পরের সেনা ও সামরিক সরঞ্জামের ব্যাপক য়তি সাধনের দাবি করে আসছে। আজারবাইজানের ৭৯০ সেনা হত্যা, একটি যুদ্ধবিমান, ৭২টি ড্রোন, এবং ট্যাঙ্কসহ ১৩৭টি সাঁজোয়া যান ধ্বংসের দাবি করেছে আর্মেনিয়া। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার সাড়ে ৫ শতাধিক সেনাকে হত্যা এবং ১৫টি রাডার ব্যবস্থা, তিনটি বিস্ফোরক গুদাম ও ট্যাঙ্কসহ বেশকিছু সাঁজোয়া যান ধ্বংসের দাবি করেছে আজারবাইজান। এছাড়া দখলে থাকা সাতটি গ্রাম ও দুটি পাহাড়ি এলাকা পুনরুদ্ধারেরও দাবি করেছে দেশটি। আর্মেনিয়া ও আজারবাইজান উভয় দেশই সোভিয়েত ইউনিয়নের অংশ ছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর তারা দুটি স্বাধীন দেশে পরিণত হয়। প্রায় চার দশক ধরে নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চল নিয়ে প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে বিরোধ চলছে। নাগোরনো-কারবাখ অঞ্চলকে আন্তর্জাতিকভাবে আজারবাইজানের এলাকা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হলেও এটি এখনো আর্মেনিয়ান নৃগোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গত জুলাইয়ে সীমান্তে দুপরে মধ্যে লড়াইয়ে কমপে ১৬ জন নিহত হয়। নিহতদের মধ্যে আজারবাইজানের উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাও রয়েছেন। এরপর থেকে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছিল।

কারাবন্দী হবু বরের জন্য ১৮ বছরের অপোর অবসান
লোকসমাজ ডেস্ক॥ ইসরায়েলের কারাগারে বন্দী হওয়া হবু বর আবদেল করিম মুখাদেরের জন্য ১৮ বছরের অপো শেষ হচ্ছে কনে জিনান সামারার। আগামী শুক্রবার বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন তারা। দেড় যুগ আগে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক বন্দী হয়েছিলেন মুখাদের। সাজা শেষে রোববার মুক্তি মিলে তার। যখন বন্দী হয়েছিলেন তখন মুখাদেরের বয়স ছিল ৩১, বর্তমানে তার বয়স ৪৯। দীর্ঘ কারাবাসে সামারার প্রতি মুখাদেরের ভালোবাসা এতটুকু কমেনি। বরং ভালোবাসা আরও মজবুত হয়েছে। ইসরায়েল অধিকৃত পশ্চিম তীরের মজিদ্দো কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জালামাহ ইসরায়েলি মিলিটারি চেক পয়েন্টে দেখেন ফুলমাল্য নিয়ে অপো করছে তার ভালোবাসা সামারা। দীর্ঘ প্রতীার পর পছন্দের মানুষকে শেষ পর্যন্ত জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে যাচ্ছেন, তাতে উচ্ছ্বাসের শেষ নেই সামারার। আরব নিউজকে তিনি বলেন, “শেষ পর্যন্ত আমাদের ভালোবাসার জয় হবে, এই নিয়ে আমি কখনো আশা হারায়নি। ধৈর্য্য ধরার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় আমি এক মুহূর্তের জন্যও দ্বিধা করেনি। তার জন্য অপো করেছি, আমার সিদ্ধান্তে আমার পরিবারও হস্তপে করেনি।” ইসরায়েলিবাহিনীর দখলদারি ও নিপীড়ন ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে এমন হাজার হাজার গল্পের জন্ম দিয়েছে বলে জানালেন সামারা- “আমার গল্পটি দখলদারিত্ব ও নিপীড়নে যারা শিকার হয়েছেন এমন হাজার হাজার গল্পের মধ্যে একটি। অনেক বাড়িতে শহীদ বা বন্দীর মা বা স্ত্রী রয়েছেন।” বাগ্দত্তা মুখাদেরের কারাবাসের সময়টাতে সালফিতের সেন্ট্রাল ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে সামারা শিা মন্ত্রণালয়ে শিাবিষয়ক তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ইসরায়েলিবাহিনীর অনুমতি নিয়ে প্রায়ই হবু বরের সঙ্গে জেলে সাাৎ করতেন। সামারার সহযোগিতায় জেলে বসেই বিশ্ববিদ্যালয় শিা সম্পন্ন করেন মুখাদের। হবু স্ত্রীর উৎসাহে আল-কুদস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ইসরায়েলেলি স্টাডিজে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন মুখাদের। মুক্তি পাওয়ার রাতে প্রিয় মানুষটির সঙ্গে বিয়ের পরিকল্পনা নিয়েই সারা রাত কেটেছে বলে জানালেন সামারা। “বছরের পর বছর দূরত্ব ও বঞ্চনার পর আমরা আমাদের বাড়িতে প্রত্যেকটা মিনিট একসঙ্গে থাকতে চাই।” বছরের পর বছর বাগ্দত্তা সামারার ভালোবাসা ও ত্যাগ কখনো ভোলার নয় বলে জানালেন মুখাদের। আমি যদি তাকে পৃথিবীটা দিয়ে দেই তাহলেও এই ঋণ শোধ হবে না। পুরুষের পাশাপাশি ফিলিস্তিনের নারীরাও ইসরায়েলের দখলদারি ও অবিচারের শিকার।” ইসরায়েলের কারাগারে সতীর্থ বন্দীদের কথা স্মরণ করে মুখাদের বলেন, “আমার হৃদয়টা এখনো হাজার হাজার বন্দী, আমাদের সতীর্থদের মাঝে পড়ে আছে। তারা সবাই নির্যাতন ও অবিচারের শিকার।”