ফরিদপুরে যুবলীগ নেতাকে চোখ বেঁধে নির্যাতন, ভিডিও ভাইরাল

0

ফরিদপুর সংবাদদাতা॥ চোখ বাঁধা অবস্থায় ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ আরাফাত ও আহাদুজ্জামান নামে এক পুলিশ পরিদর্শকের কথোপকথনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনার তদন্তে পুলিশ তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে বলে জানিয়েছেন জেলার পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান। তিনি বলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) জামাল পাশাকে আহ্বায়ক করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশেদুল ইসলাম ও ভাঙ্গা সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, জিন্সের প্যান্ট ও কোট পরা এক ব্যক্তির হাতে হাতকড়া। দুই চোখ গামছা দিয়ে বাঁধা। তার সামনে চেয়ারে বসা এক ব্যক্তি বলছেন, ‘তোর কি হইছে? কে মারছে? আমি তো মারি নাই। আর আমিতো তোগো লোক না। তোগো লোক হইলেতো থানায় থাকতাম।’ ভিডিওটি যুবলীগ নেতা আরাফাত সোমবার ফেসবুকে আপলোড করেন। আরাফাতের দাবি চোখ বাঁধা ওই ব্যক্তি তিনি। আর ক্যামেরার আড়ালে থাকা চেয়ারে বসা ব্যক্তি পরিদর্শক আহাদুজ্জামান। আরাফাত বলেন, গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কাউলিবেড়া এলাকা থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
তিনি আরও দাবি করেন, ‘হাতকড়া পরিয়ে গাড়ির মধ্যে চার জন পুলিশ সদস্য আমাকে মারধর করেন। পুকুরিয়া এলাকায় আমাকে ডিবি পুলিশের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। তখন আমার চোখ বেঁধে ফেলা হয়। নানাভাবে ভয় দেখানো হয়। পরে আমাকে চেয়ারে পিছমোড়া করে বাঁধা হয়। এরপর আমার দুই পায়ে বেতের লাঠি দিয়ে পেটানোর পর সেখানে আসেন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন ওসি আহাদুজ্জামান।’ সেই ঘটনার ভিডিও আপলোড করেছেন বলে আরাফাতের দাবি। তবে ভিডিওটি কে করেছে বা কোথা থেকে তিনি পেয়েছেন, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। তবে চোখ বেঁধে নির্যাতন করেননি বলে গণমাধ্যম কর্মীদের কাছে দাবি করেছেন পুলিশ কর্মকর্তা আহাদুজ্জামান। তিনি বলেন, ভাঙ্গা থানা পুলিশ ডিবিতে হস্তান্তরের পর ওই অবস্থায় আসামিকে পাই। তখন ভিডিওতে যেমন চোখ বাঁধা অবস্থায় ছিল, সেভাবে তাকে রিসিভ করি। মারধরের বিষয়ে আমি কিছু জানি না। পরে ওই যুবলীগ নেতার চোখ খুলে দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বলে দাবি করেন তিনি। এ ঘটনায় ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও তদন্ত কমিটির প্রধান জানান, পুলিশ সুপার মহোদয় তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটি পুরো ঘটনা খতিয়ে দেখছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে। ওসি আহাদুজ্জামান ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে ২০২০ সালের ১২ মার্চ পর্যন্ত জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ছিলেন। পরে তাকে সদরপুর উপজেলার চন্দ্রপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ হিসেবে বদলি করা হয়। বর্তমানে তিনি সেখানেই আছেন।