ঝিনাইদহের সড়কগুলো ইজিবাইকের দখলে, প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ॥ ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে সড়ক মহাসড়ক মৃত্যু ফাঁদে পরিণত হয়েছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনায় মানুষ পঙ্গুত্ব বরণ করছে। শহরে প্রতিদিনই দেখা দিচ্ছে যানজট ও দুর্ঘটনা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ইজিবাইক শহরের প্রধান প্রধান সড়ক দখল করে রাখছে। যেখানে-সেখানে ইচ্ছামতো থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করছে। ফলে একদিকে যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে ঘটছে বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনা। প্রায়ই নতুন নতুন ইজিবাইক রাস্তায় নামছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২/১ মাসের মধ্যে শহর ও প্রধান প্রধান সড়কে চলাচল করা মুশকিল হয়ে যাবে। শহরবাসীর অভিযোগ, অতিরিক্ত ইজিবাইক ছাড়াও উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ভটভটি, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি ও নসিমন-করিমন অবৈধভাবে প্রধান সড়কগুলোতে চলাচল করছে। শহরেও এ সব অবৈধ যান প্রবেশ করছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, পুরানো ডিসি কোর্টের সামনে, থানার পাশে, জামে মসজিদের সামনে, পায়রা চত্বর, পোস্ট অফিস মোড়, পাগলাকানাই মোড়, চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড, আরাপপুর, সিটি মোড়, পৌরসভার সামনে, কলেজ রোড, মুন্সি মার্কেট মোড়সহ শহরের একাধিক স্থানে গড়ে উঠেছে ইজিবাইকের পার্কিং। এসব গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। অবাধে এসব গাড়ি চলাচল করায় শহর ও শহরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে প্রতিদিনই যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া ইজিবাইক চালকরা রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে যেখানে-সেখানে যাত্রী ওঠানামা করছে। ব্যস্ততম রাস্তায় কোনো সিগন্যাল ছাড়া হঠাৎ গাড়ি ঘুরিয়ে ফেলেন। এতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থানে দুর্ঘটনা ঘটছে।
কলেজ ছাত্র হারুন অর রশিদ জানান, কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই যে যার মতো যখন-তখন নতুন ইজিবাইক ও মিশুক রাস্তায় নামাচ্ছে। যশোর খুলনায় তৈরি হচ্ছে এসব ইজিবাইক। বিভিন্ন এলাকার অটো গ্যারেজগুলোতে তৈরি হচ্ছে এসব যানবাহন। পথচারী নজরুল ইসলাম বলেন, ঘর থেকে রাস্তায় বের হলেই ইজিবাইকের বেপরোয়া চলাচল দেখে ভয় করে। এসব গাড়ির বেপরোয়া চলাচলের কারণে শহরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই দুর্ঘটনা ঘটে চলছে। এদিকে একাধিক চালকের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, এটা চালাতে কোনো ট্রেনিং লাগে না। যিনি রিকশা চালাতে পারেন, তিনি ইজিবাইক সহজেই চালাতে পারেন। এ ছাড়া ইজিবাইক চালাতে লাইসেন্স বা ট্যাক্স কিছুই প্রয়োজন হয় না। কিছু জায়গায় টাকা দিলেই তারা ভাল থাকে। এ কারণে ইজিবাইকের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ঝিনাইদহের ট্রাফিক ইনস্পেক্টর মো. সালাহউদ্দীন জানান, ইজিবাইকের কারণে যানজট নিরসন করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখন শহরের বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইক ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি বলেন সাদা বা লাল রং করে ইজিবাইক একদিন পর পর চালানোর দির্দেশনা দিলে নতুন করে আর কেউ ইজিবাইক কিনতে উৎসাহ দেখাবে না। এতে সহজে যানজট কমে আসবে। ইজিবাইক চালকরাও পরিবার বা সংসারের কাজ করতে পারবে। তিনি বলেন ঝিনাইদহ জেলা আইনশৃংখলা কমিটির সভায় ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে এ ধরনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। কিন্তু ধোপে টেকেনি। যশোর বা বড় বড় শহরে বিভিন্ন রং করে একদিন পর পর চালানো হলে ঝিনাইদহে সম্ভব নয় কেন প্রশ্ন রাখেন ওই ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা।