মনিরামপুরে বিল কপালিয়ায় কৃষকের পানি নিষ্কাশনের উদ্যোগে পাউবো’র বাধা

0

এস.এম মজনুর রহমান, মনিরামপুর (যশোর) ॥ যশোরের মনিরামপুরে ভবদহ সংলগ্ন বিল কপালিয়ায় দীর্ঘদিন জলাবদ্ধতা থাকায় কৃষকরা ফসল ফলাতে পারছেন না। কৃষক এ দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের দিকে তাকিয়ে না থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগ নিয়েছেন পানি নিষ্কাশনের। আর এজন্য খালপাড়ে সরকারি খাস জমিতে একটি পাকাঘর নির্মাণের পর স্থাপন করা হয়েছে একটি সেচ পাম্প। তবে অভিযোগ রয়েছে, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বাধার মুখে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হচ্ছে না। যে কারণে কৃষকদের এই উদ্যোগ ভেস্তে যেতে বসেছে। এ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে চরম অসন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হীরক কুমার সরকার জানান, দীর্ঘদিন জলাবদ্ধ থাকায় বিল কপালিয়ায় প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমি অনাবাদি রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকারের দিকে তাকিয়ে থেকেও কোন লাভ হয়নি। ফলে কৃষকরা পানি নিষ্কাশনের জন্য ব্যক্তি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আর এ জন্য কৃষকরা নিজেদের অর্থ খরচ করে খালপাড়ে একটি সেচ পাম্প স্থাপনের উদ্যোগ নেন। এ উদ্যোগের নেতৃত্বে থাকা কৃষক শাহিনুর রহমান জানান, সম্প্রতি তারা (কৃষকরা) প্রায় ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে খালপাড়ে খাস জমিতে একটি পাকাঘর নির্মাণের পর ৩০ হর্স পাওয়ারের একটি শক্তিশালী সেচ পাম্প স্থাপন করেছেন। এ মোটরের সাহায্যে বড় বড় পাইপ দিয়ে বিল থেকে পানি নিষ্কাশন করে তারা ফসল ফলাতে পারবেন। এমন স্বপ্ন নিয়ে স্থাপনকৃত পাম্প চালু করতে ইতিমধ্যে অস্থায়ী বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এ আবেদন করা হয়েছে। আবেদনের প্রেক্ষিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি সংযোগ দেয়ার প্রস্তুতিও গ্রহণ করে। কিন্তু বাধ সাধে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর এজিএম (এমএস) ইয়াহিয়া সিদ্দিকী জানান, পাম্প স্থাপন করা ওই জমি নিজেদের দাবি করে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার জন্য লিখিতভাবে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়নি। স্থানীয় মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান মশিয়ুর রহমান জানান, খালপাড়ের ওই জমি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নয়, ওই জমি সরকারি খাস খতিয়ানের। বিদ্যুৎ সংযোগে বাধা দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে ইউপি চেয়ারম্যান প্রশ্ন করেন, কপালিয়া বাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জমি দখল করে অর্ধশত পাকা স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সময় তো কেউ বাধা দেয়নি। মনোহরপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সাবেক চেয়ারম্যান আকতার ফারুক মিন্টু ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কালিপদ মন্ডল জানান, বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতির জন্য ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে লিখিত আবেদন করেও কোন ফল হয়নি। তাদের অভিযোগ, এলাকার কতিপয় মৎস্যঘের মালিক গোপনে ষড়যন্ত্র করছে বিদ্যুৎ সংযোগ না দেওয়ার জন্য। পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী তাওহীদুল ইসলাম জানান, অনুমতি ছাড়া তাদের (পাউবো) জমিতে ঘর এবং পাম্প স্থাপন করায় বিদ্যুৎ সংযোগ না দিতে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে লিখিত দেওয়া হয়েছে।