তুরস্ককে শায়েস্তায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন!

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ভূমধ্যসাগরে গ্রীসের দাবীকৃত এলাকা থেকে যুদ্ধজাহাজ না সরালে তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। সম্প্রতি নিজের লেখা একটি কলামে এ কথা বলেছেন গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী কিরিয়াকোস মিটসোটাকিস। তেল গ্যাস অনুসন্ধান নিয়ে ভূমধ্যসাগরে যখন দুই দেশ মুখোমুখি তখনই এ কথা জানিয়েছেন তিনি। এ খবর দিয়েছে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা।
খবরে জানানো হয়েছে, গত কয়েক দশক ধরেই তুরস্ক ও গ্রীসের মধ্যে এ অঞ্চল নিয়ে দ্বন্দ্ব রয়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকবার দুই দেশ যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তেও পৌঁছে গিয়েছিল। গত ১০ আগস্ট তুরস্ক একটি অনুসন্ধানী জাহাজ প্রেরণ করে ওই অঞ্চলে। সঙ্গে একটি যুদ্ধজাহাজও পাঠায়। জাহাজ দুটি এখনো গ্রীসের দ্বীপ কাস্টেলোরিজো এবং ক্রেটের কাছে অবস্থান করছে।এর জবাবে আরব আমিরাতকে সঙ্গে নিয়ে ওই অঞ্চলে নৌ মহড়া করেছে গ্রীস। এরপর এতে যোগ দিয়েছে আরো বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় মিত্র।
গ্রীসের প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, ঘটনার পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা একটি বিশেষ বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন। সেখান থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে, তুরস্ককে কীভাবে শায়েস্তা করা হবে। তিনি জানান, যদি তুরস্ক যথাসময়ে তাদের জাহাজ ফিরিয়ে না নিয়ে যায় তাহলে আমি নিষেধাজ্ঞা আরোপ ছাড়া আর কোনো উপায় দেখি না। তার এই লেখা প্রকাশিত হয়েছে লন্ডন টাইমস, লা মন্ডেসহ বেশ কিছু বড় গণমাধ্যমে। এতে মিটসোটাকিস লিখেছেন, ইউরোপীয়দের ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে বসে থাকার সময় শেষ। এখন ইউরোপকে নিজের গুরুত্বপূর্ন স্বার্থের দিকে নজর দিতে হবে। যদি ইউরোপ ভূরাজনৈতিক দিক থেকে একটি শক্তি হয়ে উঠতে চায় তাহলে তুরস্ককে ছাড় দেয়ার সুযোগ নেই।
তবে তুরস্কের হাতে আরো কিছু সময় বলে জানিয়েছেন মিটসোটাকিস। তিনি বলেন, তুরস্ক যদি নিষেধাজ্ঞা এড়াতে চায় তাহলে তাকে নিজের জাহাজ ফিরিয়ে নিতে হবে এবং সংকট থেকে বেড়িয়ে যেতে হবে। সহজ কথায় তুরস্ককে তার আগ্রাসী ভাব থেকে বেড়িয়ে আসতে হবে।
এদিকে ইউরোপীয় নেতারা জানিয়েছেন, তুরস্ক ইস্যুতে কথা বলতে আগামী ২৪ বা ২৫ সেপ্টেম্বর বসতে যাচ্ছেন তারা। এ নিয়ে মিটসোটাকিস বলেন, আমাদের অবশ্যই আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন। তবে সেটি সম্ভব নয় যতক্ষণ আপনার দিকে বন্দুক তাক করা থাকবে। তুরস্ক আমার দেশের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকে হুমকি দিচ্ছে। এটি ইউরোপের সকল দেশের মানুষের জন্য হুমকি।
এর আগেও গ্রীস জানিয়েছিল, তুরস্কের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে একটি বার্তা দিতে। তবে প্রথমদিকে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কথা বলেন গ্রীসের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, তুরস্ককে প্রথমে শুধু এই বার্তা দিতে হবে যে নিরপেক্ষ আলোচনার জন্য ইউরোপ প্রস্তুত। তবে সবার আগে ইউরোপ নিজের স্বার্থের কথা ভাবছে। এর আগে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রনও তুরস্কবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার মিটসোটাকিসের সঙ্গে ফোনালাপও করেন। শীঘ্রই পর্তুগাল, স্পেন, ইতালি, সাইপ্রাস ও মাল্টার নেতাদের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে গ্রীস ও ফ্রান্স। ম্যাক্রন বলেন, ইউরোপকে এখন এক হয়ে কথা বলতে হবে। তুরস্ককে ইউরোপ কোনোভাবেই আর নিজের সহযোগী মনে করতে পারেনা। সাংবাদিকদের ম্যাক্রন বলেন, আমরা যারা ইউরোপীয় তাদের উচিৎ স্পষ্টভাবে জানানো যে, রিসেপ তাইয়েফ এরদোগানের আচরণ আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য।