বেনাপোল বন্দরে বোমা বিস্ফোরণ, প্রকাশ্যে দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরের ২৩ নম্বর শেডের পাশে একটি শক্তিশালী হাতবোমা বিস্ফোরণ হয়েছে। বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে হঠাৎ করে বিকট শব্দে বোমাটি বিস্ফোরণ হয়। এ সময় বন্দরে কর্মরত কাস্টমস, বন্দর, সিঅ্যান্ডএফ ও শ্রমিকরা আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। সচল বন্দর অচল করতে ক্ষমতাসীন দলের দুটি পক্ষ একের পর এক ষড়যন্ত্রে মেতেছেন বলে অভিযোগ বন্দরের ব্যবসায়ীদের। তারাই বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। বেনাপোল বন্দরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল জানান, বেনাপোল স্থলবন্দরের ২৩ নম্বর শেডের মধ্যে রাখা মোটর পার্টসের কাঠের কার্টুনের ফাঁকে হঠাৎ করে একটি হাতবোমা বিস্ফোরিত হয়। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে আলামত সংগ্রহ করে। বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ডিউটি অফিসার এএসআই মুরাদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে। কে বা কারা এ ঘটনা ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জানা গেছে, দলীয় প্রভাব বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দিন ও বেনাপোল পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম লিটনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সম্প্রতি এ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। যখন যার দলীয় অবস্থান শক্ত হয় তাদের সমর্থকরা বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয়। এর আগে বেনাপোল বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন মেয়র সমর্থক নগর আলী ও সাধারণ সম্পাদক পৌর কমিশনার রাশেদ আলী। বর্তমানে এমপি সমর্থক বেনাপোল বন্দরের ৯২৫ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রাজু আহম্মেদ এবং সাধারণ সম্পাদক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সদস্য অহিদুজ্জামান অহিদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বন্দর।
গত মে মাসে বন্দরের সাধারণ শ্রমিকদের এক কোটি ৩২ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বন্দরের ৮৯১ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা নকি মোল্লাকে বন্দরের নেতৃত্ব থেকে বাদ দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বন্দরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। দ্বন্দ্বের কারণে আবারও বিভক্ত হয়ে দুটি গ্রুপ তৈরি হয়। অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন কারণে বন্দরের নেতৃত্ব থেকে বিদায় নেয়া সাবেক শ্রমিক নেতাদের কয়েকজন একত্রিত হয়ে তাদের অবস্থান ফিরে পেতে বন্দরের শ্রমিদের নেতৃত্ব দখলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এমন অভিযোগে সংঘর্ষ এড়াতে গত ১২ আগস্ট পুলিশ মোতায়েন করা হয় বন্দর এলাকায়। বন্দর নিয়ন্ত্রণ রাখতে বন্দরের বর্তমান কমিটি বিক্ষোভ মিছিলও করে বন্দর এলাকায়।
৯২৫ শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অহিদুজ্জামান অহিদ জানান, বর্তমানে শ্রমিকরা বন্দরে শান্তির সঙ্গে কাজ করে আসছে। কিন্তু একটি পক্ষ তা ভালোভাবে না নিয়ে ষড়যন্ত্র করে বন্দরের সুন্দর পরিবেশ নষ্ট করতে চাইছে। বেনাপোল বন্দরের ৮২৫ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি কলিম উদ্দীন বলেন, যারা বিভিন্ন সময় শ্রমিকদের অর্থ আত্মসাৎ করে বিতাড়িত হয়েছেন তারাই নেতৃত্ব দখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন খান জানান, দুই পক্ষকে জানিয়ে দেয়া হয়েছে বন্দর চলবে বন্দরের মত। আমদানি-রফতানিসহ বন্দরের কার্যক্রমে বিঘ্ন সৃষ্টিকারীদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে।