স্টাফ রিপোর্টার, অভয়নগর (যশোর) যশোরের দুঃখ ভবদহ অঞ্চলে আবারও জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে যশোরের অভয়নগর, কেশবপুর ও মণিরামপুর উপজেলার নিম্নাঞ্চলের বেশ কয়েকটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ফলে চরম কষ্টে তারা দিন পার করছেন। গত রোববার ও সোমবার সরেজমিনে গিয়ে ভবদহ অঞ্চলের অভয়নগর উপজেলার আন্ধা, বেদভিটা, ডুমুরতলা, ডহর মশিয়াহাটি, সুন্দলী, চলিশিয়া, মশিয়াহাটি, সরখোলাসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বাড়ির উঠানের ওপর বাঁশের সাঁকো তৈরি করে জলাবদ্ধ এলাকার মানুষ চলাচল করছেন। রান্নাবান্নার কাজ ঘরের মধ্যে করতে দেখা গেছে। গবাদি পশু-পাখি নিরাপদ উঁচু স্থানে নিয়ে রাখা হয়েছে। পানিতে ভেসে গেছে এসব এলাকার বিলের শত শত মাছের ঘের। শিা প্রতিষ্ঠানের মাঠগুলো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। চলতি মৌসুমে স্মরণকালের ভয়াবহ জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
তাদের আশঙ্কা, ২০১৬ সালের ন্যায় এবারও তাদের বাড়িঘড় ছেড়ে রাস্তায় আশ্রয় নিতে হবে। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী আরও জানান, এ বছর একটানা বৃষ্টি না হওয়ার পরও যদি এমন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়, তাহলে বৃষ্টি হলে এখানকার অবস্থা কি হবে? ভবদহ এলাকার বাসিন্দা হাসান আলী জোয়ার্দ্দার জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) খামখেয়ালিপনার কারণে অপরিকল্পিতভাবে এসব এলাকার খালের একাংশ খনন করায় এবং অপর অংশে খনন সম্পন্ন না করায় পানি বের হতে পারছে না। তাছাড়া এই এলাকার খালগুলো থেকে নেট-পাটা অপসারণ না হওয়ায় এবং যত্রতত্রভাবে ঘেরের বাঁধ দেয়ায় জলাবদ্ধতা আরও স্থায়ীরূপ নিচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। উপজেলার ডুমুরতলা গ্রামের বাসিন্দা সমর কুমার বাওয়ালী জানান, বিগত তিনবছরে আমরা ইরি, বোরো ও আমন মৌসুমে ধান ঘরে তুলেছি। ঘেরে মাছ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছি। কিন্তু এ বছর আমডাঙ্গা খাল থেকে পানি না সরা, খালের নেট-পাটা অপসারণ না করায় ও ভবদহ স্লুইস গেটের শ্রী ও হরি নদীর পলি যথাযথভাবে অপসারণে ব্যর্থ হওয়ায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই সেনাবাহিনীর মাধ্যমে টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়ন না করলে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রেহাই পাওয়া কঠিন হবে বলে অনেকেই মনে করছেন। এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরদার অলিয়ার রহমান সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে টিআরএম প্রকল্প চালু করলে ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা দূর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী মো. তাওহিদুল ইসলাম জানান, ভবদহ নিয়ে একটি বৃহৎ প্রকল্প প্লানিং কমিশনে আছে। বর্তমানে যাতে ভবদহ অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি না হয়, সেজন্য আমরা জরুরিভাবে কিছু কাজ করে যাচ্ছি।