ধান রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা ভুক্তভোগী চাষিদের চৌগাছায় খালের মুখ বন্ধ করায় প্রায় ৩শ বিঘা জমির ধান পানির নিচে পচে গলে নষ্ট

0

স্টাফ রিপোর্টার চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছায় তিনটি বিলের পানি বের হওয়া একটি খাল পরিকল্পিত ভাবে বন্ধ করে দেয়ায় প্রায় ৩শ বিঘা জমির রোপা আমন ধান পচে গলে নষ্ট হতে বসেছে। হতভাগা কৃষকরা বারবার চেষ্ট করেও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি। এমন এক পরিস্থিতিতে অসহায় চাষিরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
উপজেলার নারায়নপুর ইউনিয়নের পেটভরা গ্রামের পশ্চিম পাশে তিনটি বিল খলপাঘাট, হুগলাগাড়ি ও জামতলা দোয়াল অবস্থিত। এই বিল তিনটিতে শতশত বিঘা জমিতে ধান চাষ হয়। চলতি আমন মৌসুমেও চাষিরা আম্পান ও করোনার ক্ষতি পুশিয়ে নিতে বেশ আগে ভাগে ধান রোপন করেন। কিন্তু এ বছরে থেমে থেমে বৃষ্টিতে বিল তিনটির অত্যান্ত ৩শ বিঘা জমির ধান পানির নিচে তলিয়ে আছে। বিলের পানি যে খাল দিয়ে পাশে কপোতাক্ষ নদে বের হতো সেই খালের মুখে নির্মান করা হয়েছে বাড়ি। এ ছাড়া বিলের পানি বের হওয়া একটি অংশে স্থানীয় আলী কদর চান্নু নামে এক ব্যক্তি পুটি মাছ খাওয়ার জন্য পুকুর খনন করেছেন। এই পুকুর ও খাল মুখে বাড়ি নির্মানের ফলে বিলের পানি বের হতে পারছে না বলে অভিযোগ চাষিদের। যার কারনে কৃষকের রোপা ধান পানির নিচে পচে গলে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। গতকাল সরেজমিন গেলে কৃষক লিয়াকত আলী, শরিফুল ইসলাম, সিরাজুল ইসলামসহ একাধিক চাষি বলেন, কিছু মানুষ তাদের ব্যক্তি স্বার্থের কারনে আজ শতশত বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়ে গেছে। পনিতে তলিয়ে যাওয়া জমির ধান বাঁচাতে তারা অনেক চেষ্টা করেছেন কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়নি। চাষিরা আবেগ জড়িত কন্ঠে বলেন, একদিকে আম্পানের ক্ষতি অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের মত খেটে খাওয়া মানুষ নিদারুন কষ্টে আছে। সব ক্ষতি পুশিয়ে নিতে আগে ভাবে ধান চাষ করেছি। অথচ পরিকল্পিত ভাবে আমাদের সেই ধান নষ্ট করা হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বিল তিনটিতে কৃষক লিয়াকত আলীর ২ বিঘা, শরিফুল ইসলামের আড়াই বঘা, সিরাজুল ইসলামের ১০ বিঘা, দিসার উদ্দিনের ১ বিঘা, তোফাজ্জেল হোসেনের দেড় বিঘা, আমিনুর রহমানের দেড় বিঘা, ইশারুল ইসলামের ২ বিঘা, আজাদ রহমানের দেড় বিঘা, আতিয়ার রহামনের দেড় বিঘা, মাজেদুল ইসলামের ১৫ বিঘা, পান্তার দোয়ালে ৭০ বিঘাসহ অনেক চাষির ধান পানির নিচে পচে নষ্ট হয়েছে। এক একজন কৃষক দু’তিন বার জমিতে ধান রোপন করেছেন কিন্তু বৃষ্টি হলেই জমিতে পানি জমে ধান নষ্ট হচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিলের পানি বের হওয়া মুখে পুকুর খননকারী আলী কদর চান্নু বলেন, ৫-৬ বছর আগে আমি পুকুর কেটেছি, এত দিন তো কোন সমস্যা হয়নি। গ্রামের প্রধান সড়কের পাশে খাল মুখে বাড়ি নির্মানের ফলে পানি বের হতে পারছে না। আমার পুকুর কোন সমস্যা না বলে তিনি জানান।
খালমুখে বাড়ি নির্মানকারী হাবিবুর রহমান. মজনু মন্ডল বলেন, বাড়ি নির্মানের কারনে কিছুটা সমস্যা হয়েছে, তবে বাড়ির পাশ দিয়ে যদি ড্রেন নির্মান করা হয় তাহলে বিলের পানি বের হতে কোন সমস্যা হবে না। সংশ্লিষ্ঠ ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ পানির নিচে ধান পচে গলে নষ্ট হচ্ছে এই ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি মাননীয় সংসদ সদস্যের সাথে আলোচনা করেছি। ৫শ থেকে ৭শ ফুট একটি ড্রেন নির্মান করলে শতশত বিঘার ধান বাঁচানো সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।