একাদশে ভর্তি নিয়ে যা ভাবছেন তারা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে একাদশে ভর্তি-পরীক্ষা। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এসএসসির ফল প্রকাশের পর শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের মধ্যে আনন্দের পাশাপাশি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠাও কাজ করছে। এবার ১ লাখ ৩৫ হাজার ৮৯৮ জন জিপিএ-৫ পেলেও সারাদেশে ভালো মানের কলেজে সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ৬০ হাজার আসন রয়েছে। এই কারণে ভালো ফল পেয়েও সেরা কলেজে ভর্তি নিয়ে অনেকেই অনিশ্চয়তার মধ‌্যে রয়েছে।
তবে, শিক্ষা বোর্ডগুলো বলছে, এবার এসএসসি পাস করেছেন ১৬ লাখ ৯০ হাজার। আসন আছে ২৫ লাখের বেশি। যে পরিমাণ শিক্ষার্থী এবার পাস করেছেন, সে তুলনায় প্রায় দেড় গুণের বেশি আসন রয়েছে। তাই ভর্তিতে খুব একটা সমস্যা হবে না। এবার সাধারণ ৯ বোর্ডে পাসের হার ৮৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও ১ লাখ ২৩ হাজার ৪৯৭ জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৫১৬ জন এবং কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪ হাজার ৮৮৫ জন। মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ডের বড় একটি অংশ উচ্চ মাধ্যমিকে সাধারণ বোর্ডের অধীনে ভর্তি হয়। ফলে কলেজগুলোতে ৯ সাধারণ বোর্ডের বাইরেও প্রায় ৫ হাজারের বেশি আবেদন পড়তে পারে। এর ফলে প্রথম সারির কলেজগুলোতে জিপিএ-৫ পেয়েও ৮০ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী এতে ভর্তির সুযোগ পাবেন না।
রাজধানী ঢাকায় উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনার জন্য আসন রয়েছে প্রায় ৫০ হাজারের মতো। এর মধ্যে ভালো মানের ২০-২২টি কলেজে আসন রয়েছে ২৫ হাজারের বেশি। বিপরীত দিকে ঢাকা বোর্ডেই এবার পাস করেছে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৬ হাজার ৪৭ জন। আবার জিপিএ-৪ থেকে ৫-এর মধ্যে পেয়েছে ১ লাখ ৩৩ হাজার ৩৫৫ জন। সেই হিসেবে ঢাকার বাইরের শিক্ষার্থীদের রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলোয় ভর্তির সুযোগ কতটা থাকবে, তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। ফলে ভালো ফলের পর উচ্চ মাধ্যমিকে রাজধানীতে পড়তে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি থাকবে। একই ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে মাদ্রাসা থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্যও। সব শিক্ষার্থীর ভর্তির জন্য পর্যাপ্ত আসন থাকলেও প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাবেন না সবাই। জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, ‘সবাই যে নিজের পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে পারবেন না, এটা ঠিক আছে। তবে যে পরিমাণ শিক্ষার্থী পাস করেছেন, তাদের চেয়ে আসন অনেক বেশি আছে। এর মধ্যে কিছু ড্রপ আউট হবেন। কিছু বিদেশ চলে যাবেন। সব মিলিয়ে দেড় দুই লাখ থাকবে না।’
এদিকে জেলা ও জেলার বাইরের প্রতিষ্ঠানগুলোর মানোন্নয়নে গুরুত্ব দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। শিক্ষানীতি-২০১০ প্রণয়ন কমিটির সদস্য অধ্যাপক একরামুল কবিরের মতে, ‘ভালো প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সুবিধা মতো বদলির সুযোগ রাখা প্রয়োজন। এতে সেসব প্রতিষ্ঠানের মান বাড়বে, শিক্ষার্থীরা সেখানে যেতে আগ্রহী হবেন।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘একটা গ্রামের শিক্ষার্থীর সঙ্গে শহরের ভালো স্কুলের শিক্ষার্থীর মধ্যে মেধার কোনো পার্থক্য নেই। পার্থক্য কেবল সুযোগ-সুবিধার।’ তাই মেধাবীদের এগিয়ে নিতে গ্রামের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর উন্নয়নের গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন দিন।