ভার্চুয়াল কোর্টে আইনজীবীদের আধুনিক প্রতারণা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে চলছে হাইকোর্টের বিচার কার্যক্রম। কিন্তু চলমান পরিস্থিতির মাঝেও বিচার ব্যবস্থার নতুন এ পদ্ধতিকে ভুল পথে কাজে লাগাচ্ছেন একশ্রেণির আইনজীবী। আদালতের সঙ্গেই প্রতারণা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে আইনজীবীদের বিরুদ্ধে। তাই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বারবার নির্দেশনা দিয়ে চলেছেন আদালত ও সুপ্রিম কোর্ট বার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৬ জুলাই বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করা ছিল মামলা ও মামলা সংক্রান্ত আবেদন জমা দেওয়ার। এ সময়ের মধ্যে ওই কোর্টে ১ হাজার ২৪৭টি আবেদন জমা পড়ে। পরে জমাকৃত আবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোনও কোনও আইনজীবী একই বিষয়ে ৫/৬টি আবেদন জমা করেছেন। অথচ সময় স্বল্পতার কারণে এ সময় অন্যান্য আইনজীবী তাদের মামলা দাখিল করা থেকে বঞ্চিত হন। যার ফলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বেশ কিছু অভিযোগ উত্থাপন করেন আইনজীবীরা।
অভিযোগ রয়েছে, হাইকোর্টের অন্যান্য ভার্চুয়াল বেঞ্চ থেকে যেসব মামলা নিয়মিত কোর্টে শুনানির জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছে সেসব আদেশের তথ্য গোপন করেও প্রতারণা করছেন আইনজীবীরা। তারা আগের আদেশের তথ্য গোপন করে পুনরায় একই মামলা অন্য ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে দাখিল করে একই মামলায় বারবার শুনানি করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আইনজীবী জানান, এমন ঘটনা এর আগেও বারবার ঘটেছে বলে স্বয়ং আদালত থেকেই অভিযোগ উঠেছে। গত ২৫ জুন একই বিষয়ে একই মামলা দুই-তিনটি কোর্টে দাখিল না করার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। কিন্তু এরপরও ঘটনার পুনরাবৃত্তি হওয়ায় মামলার শুনানি বঞ্চিত আইনজীবীরা ক্ষুব্ধ হন এবং আদালতও বিব্রত হন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কোর্টের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ জানান, গত ৬ জুলাই বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চে ১ হাজার ২৪৭টি মামলার আবেদন জমা পড়ে। আবেদনগুলো পর্যালোচনা করে দেখা যায়, কোন কোন আইনজীবী একই বিষয়ে একাধিক আবেদন দাখিল করেছেন। এছাড়াও অন্য আদালতের আদেশ হওয়া আবেদনটিও এই আদালতে জমা করার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। তাই এসব বিষয় পর্যালোচনা করে আদালত সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদককে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়ে নোটিশ জারির নির্দেশ দিয়েছেন।
পাশাপাশি যেসব মামলা নিয়মিত কোর্টে শুনানির জন্য পাঠানোর আদেশ হয়েছে সেগুলো পুনরায় অন্য আদালতে উপস্থাপন না করে এবং প্রতিটি আবেদনের ওপরে আইনজীবীরা তাদের আবেদনটি অন্য কোনও ভার্চুয়াল কোর্টে উপস্থাপন করেননি মর্মে সত্যায়ন করতেও আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বলেও তিনি জানান। এদিকে আদালতের নির্দেশনার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি থেকে একটি নোটিশ জারি করা হয়। সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজলের দেওয়া ওই নোটিশে বলা হয়েছে, একজন আইনজীবী একই সময়ে একসঙ্গে দুটির বেশি মামলা দাখিল করতে পারবেন না। ই-মেইলের মাধ্যমে একটি মামলা একবারই পাঠাতে হবে। মামলার আবেদনের ওপর মামলাটি এর আগে অন্য কোনও ভার্চুয়াল কোর্টে দাখিল করা হয়নি মর্মে সত্যায়ন করে ইমেইলে মামলার বিষয়বস্তু স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।