দুশ্চিন্তায় চৌগাছার গরুর খামারিরা

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ যশোরের চৌগাছার গরুর খামারিরা মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে চরম বিপাকে পড়েছেন। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ছোট-বড় মিলে প্রায় এক হাজার খামারে গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। বলা চলে ঈদ সন্নিকটে কিন্তু এ পর্যন্ত দূরদূরান্ত থেকে কোন গরুর ব্যাপারি আসেননি। ফলে এ বছর ঈদে গরু বিক্রি করা নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন খামারিরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চৌগাছায় ছোট বড় মিলে সহস্রাধিক গরুর খামারে প্রায় ৬ হাজার গরু ঈদ উপলক্ষে মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। খামরগুলোতে বছরের পুরো সময় জুড়ে কম-বেশি গরু পালন করা হলেও পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে খামারিরা বেশি গরু পালন করেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। উপজেলা সদর থেকে প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গরুর খামার তৈরি হয়েছে। প্রতিটি খামারে ২ থেকে ৫০টি পর্যন্ত গরু পালন করা হয়েছে। গরু পালন অত্যান্ত লাভজনক হওয়ায় এ জনপদের মানুষ দিনদিন গরুর খামার করার ব্যাপারে মনোযোগী হয়ে উঠেছেন বলে অনেকে মনে করছেন। উপজেলার মশিউরনগর গ্রামের তিন সহোদর আলাউদ্দিন, শরিফুল ইসলাম ও মনিরুল ইসলাম। সকলেই পেশায় চাকরিজীবী। চাকরির পাশাপাশি তারা বাড়ির পাশে ৩৬ শতাংশ জমির উপর পরিকল্পিতভাবে গরুর খামার গড়ে তুলেছেন। ২০১৯ সালে তাদের খামারের যাত্রা। এ পর্যন্ত দুইবার গরু বিক্রি করেছেন। তাদের খামারে বর্তমানে ৩৬ টি গরু আছে। বিশাল আকৃতির গরুগুলো ঈদে বিক্রি করবেন বলে সেভাবেই প্রস্তুত করেছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত খামারে কোন ব্যাপারি না আসায় তারা বেশ চিন্তিত। কারণ এই ঈদে গরু বিক্রি করতে না পারলে বড় ধরনের লোকসান হবে তাদের।
গতকাল সরেজমিনে গরু খামারে গিয়ে দেখা যায়, দায়িত্বরত দুই কর্মচারী গরু পরিচর্যায় বেশ ব্যস্ত। খামার মালিক আলাউদ্দিন সব কিছু দেখাশুনা করছেন। এ সময় কথা হয় খামার মালিকের সাথে। তিনি জানান, এ বছর গরুর খামারে ব্যাপক ব্যয় হয়েছে। কারণ গো-খাদ্যের দাম আকাশছোঁয়া। ১ বস্তা ভুষির দাম ২ হাজার টাকা, অনরূপভাবে বিচালি, খৈল, পালিস, কুড়া এমনকি গরুর ওষুধের দামও বেশি। এত ব্যয়ে গরু পালন করে যদি কাঙ্খিত দামে বিক্রি না করতে পারি তাহলে কষ্টের শেষ নেই। অদৃশ্য শত্রু করোনা ভাইরাসের কারণে সব কিছুই থমকে গেছে। এই পরিস্থিতিতে কুরবানি ঈদের হাট কেমন হবে, আদৌ পশু বিক্রি হবে কিনা সেই চিন্তায় দিন পার করছি। তিনি বলেন, খামারে ৩৬ টি গরু আছে, কুরবানির ঈদে সব গরু বিক্রি করতেই হবে। এখন বিক্রি না হলে পরবর্তীতে প্রতিটি গরু কাঙ্খিত মূল্যে বিক্রি করা যাবে না। এই খামার মালিকের মত উপজেলার অধিকাংশ গরুর খামারিরা মহা দুশ্চিন্তায় দিন পার করছেন। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা প্রভাষ চন্দ্র গোস্বামী বলেন, গরু পালন লাভজনক হওয়ায় এ উপজেলায় দিনদিন গরুর খামার বাড়ছে। করোনা ভাইরাসের কারণে গরু বিক্রি নিয়ে খামারিরা কিছুটা চিন্তায় আছেন। তবে শেষমেষ খামার মালিকরা তাদের পশু বিক্রি করতে পারবেন এবং পশুর কাঙ্খিত দামও তারা পাবেন বলে আশা করছি।