চাঙ্গা হয়ে উঠছে জ্বালানি তেলের বাজার

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বেশ আগেই অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের রেকর্ড উত্তোলন হ্রাসসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ আরো এক মাস বাড়াতে ঐকমত্যে পৌঁছেছে অর্গানাইজেশন অব পেট্রোলিয়াম এক্সপোর্টিং কান্ট্রিজ (ওপেক) ও এর মিত্র দেশগুলোর জোট ওপেক প্লাস। এদিকে নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতিতে দেশে দেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে শুরু করেছে। ফলে ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে পণ্যটির দাম। এ ধারাবাহিকতায় গতকাল পণ্যটির দাম আগের দিনের তুলনায় প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে। খবর রয়টার্স।
সর্বশেষ কার্যদিবসে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আন্তর্জাতিক বাজার আদর্শ প্রতি ব্যারেল ব্রেন্টের দাম দাঁড়িয়েছে ৪১ ডলার ৮৬ সেন্ট, আগের দিনে যা ৩৫ সেন্ট বা দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। একই দিনে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার আদর্শ প্রতি ব্যারেল ওয়েস্ট টেক্সাসের (ডব্লিউটিআই) দাম উঠেছে ৩৯ ডলার ২২ সেন্টে, যা আগের দিনের তুলনায় ৩৮ সেন্ট বা ১ শতাংশ বেশি।
সম্প্রতি বিদ্যমান চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়ে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত নিয়েছে ওপেক ও নন-ওপেক জোট। এর মাধ্যমে জোটটির দৈনিক গড়ে ৯৭ লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল উত্তোলন হ্রাস চুক্তির মেয়াদ আরো এক মাস বাড়ল। এর সঙ্গে যেসব দেশ মে ও জুনে নির্ধারিত কোটার অতিরিক্ত জ্বালানি তেল উত্তোলন করেছে, তাদের আগামী জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়তি উত্তোলন হ্রাস করে নির্দিষ্ট কোটায় ভারসাম্য ফেরানোর দাবি জানিয়েছে জোটটি।
ওপেকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, নির্দিষ্ট কোটার তুলনায় মে মাসে ইরাক দৈনিক গড়ে ৫ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বেশি উত্তোলন করেছে। এছাড়া নাইজেরিয়া দৈনিক গড়ে ১ লাখ ২০ হাজার ব্যারেল, অ্যাঙ্গোলা ১ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল, কাজাখস্তান ১ লাখ ৮০ হাজার ব্যারেল ও রাশিয়া দৈনিক গড়ে এক লাখ ব্যারেল জ্বালানি তেল বেশি উত্তোলন করেছে। এরই মধ্যে ইরাক ও কাজাখস্তান এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। ফলে আগামী মাসগুলোতে পণ্যটির উদ্বৃত্ত সরবরাহ অনেকটাই কমিয়ে আনতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এদিকে চীনসহ কয়েকটি দেশে করোনা মহামারী আগের তুলনায় অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসায় জ্বালানি তেলের চাহিদা বাড়ছে। চীন বিশ্বের শীর্ষ অপরিশোধিত জ্বালানি তেল ভোক্তা দেশ। গত মে মাসে দেশটি ইতিহাসের সর্বোচ্চ জ্বালানি তেল আমদানি করেছে। এছাড়া পণ্যটির অন্যতম শীর্ষ ভোক্তা দেশ ভারতসহ অন্যান্য দেশেও চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। একদিকে চাহিদা বৃদ্ধি ও অন্যদিকে উদ্বৃত্ত সরবরাহ কমে আসায় পণ্যটির বাজারে ভারসাম্য ফিরতে শুরু করেছে। এর জের ধরে বাড়তে শুরু করেছে দাম।
অস্ট্রেলিয়াভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এএসজেডের পণ্য বাজার কৌশলবিদ ড্যানিয়েল হাইনেস বলেন, ওপেক প্লাসের উত্তোলন হ্রাস চুক্তির কার্যকারিতা ও ইরাকসহ কয়েকটি দেশের কোটার চেয়ে অতিরিক্ত উত্তোলনে ভারসাম্য ফিরলে স্বল্পমেয়াদে জ্বালানি তেলের দামে চাঙ্গা ভাব ফিরতে পারে।