চৌগাছায় করোনা উপেক্ষা করে শিক্ষা র্থী সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি কলেজ শিক্ষকরা

0

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় করোনা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থী সংগ্রহে বাড়ি বাড়ি ধর্না দিচ্ছেন কলেজ শিক্ষাকরা। ২০২০ সালে একাদশ শ্রেণিতে এখনও শিক্ষা র্থী ভর্তি শুরু হয়নি। ইতিমধ্যেই করোনার মধ্যেও উপজেলায় কলেজগুলোর ছাত্র সংগ্রহের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। নিজের কলেজে ভর্তি করানোর জন্য ছয় সাতজন শিক্ষক দল বেঁধে শিক্ষার্থীদের বাড়ী বাড়ি যাচ্ছেন। তাই স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে চরম আতঙ্কিত অভিভাবকরা। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ৬৭টি স্কুল ও ২১ টি মাদরাসা থেকে মোট ৩ হাজার ৫শ ৪৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা য় অংশ নেয়। এর মধ্যে ২ হাজার ৯শ ৫৬ শিক্ষার্থী পাস করেছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১শ ৫৮ জন। উপজেলায় মোট ১১ টি কলেজ ও ৩টি আলিম মাদরাসা রয়েছে। এর মধ্যে কলেজ ১টি সরকারি, ৪ টি ডিগ্রি ও অনার্স পর্যায়ের, ৬টি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের কলেজ। এসব কলেজে বিজ্ঞান, বাণিজ্য ও মানবিক শাখা মিলে দুই হাজারেরও বেশি আসন রয়েছে। ভর্তির জন্য এসব কলেজের শিকরা নিয়মিত দল বেঁধে শিক্ষার্তীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। তাদের এ ভাবে দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি যাওয়ায় করোনাভাইরাজ নিয়ে অভিভাবকরা চরমভাবে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। করোনার কারণে যারা অন্যের বাড়িতে যাচ্ছেনা তাদের বাড়িতে এভাবে দলে দলে লোকজন আসায় তারা পড়েছেন চরম বিপাকে। আবার কলেজের শিক হওয়ায় তারা এ বিষয়ে কিছু বলতেও পারছেনা। উপজেলার সরকারি কলেজের শিকরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীদের বাড়িতে যাচ্ছেন। তারা বই, উপবৃত্তি, কলেজের ফান্ড থেকে বৃত্তি, প্রাইভেট ফ্রি ও হোস্টেলে থাকাসহ নানা রকম প্রলোভোন দেখাচ্ছেন। একই ভাবে প্রলোভোন দেখাচ্ছেন অন্যান্য কলেজগুলোও।
এদিকে এ সকল কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ভর্তির সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতি রাখেন না কলেজ কর্তৃপক্ষ। ভর্তির পরে বেমালুম ভুলে যান অধিকাংশ প্রতিশ্রুতি পরে আর পুরণ করা হয়না। অতিসম্প্রতি চৌগাছা উপজেলায় নতুন চারটি কলেজ এমপিওভুক্ত হয়েছে। এসব কলেজের শিকরা বলেন, সরকারি কলেজসহ প্রতিষ্ঠিত বড় বড় কলেজের শিকরা করোনাকে আমলে না নিয়ে ছাত্র ভর্তিতে বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। তাদের চাপে আমাদের কলেজ বাঁচনোর তাগিদে ছাত্র ভর্তিতে আমরাও বাড়ি বাড়ি যেতে বাধ্য হচিছ। এসব কলেজে শিকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার প্রবেশ পত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড নিয়ে আসছেন। ভর্তি আবেদনের সময় তারা নিজেরাই নিজেদের কলেজ থেকে ভর্তি আবেদন করে দেন। শিক্ষার্থীরা আবেদন পত্র পূরণ করলে দশটি পর্যন্ত কলেজের নাম দিতে পারে কিন্তু তারা নিজেরা পূরণ করার সময় শুধু তাদের কলেজের নামই দিয়ে থাকেন। সে েেত্র এ শিার্থীর আর বিকল্প কোন কলেজে ভর্তি হতে পারে না। রামকৃষ্ণপুর গ্রামের আতিয়ার রহমান বলেন, এ বছর গ্রামের স্কুল থেকে এ গ্রেড পেয়ে আমার ছেলে পাস করেছে। শুনেছি এখনও ভর্তির সময় হয়নি। কিন্তু আমার বাড়িতে বিভিন্ন কলেজের শিকরা দল বেঁধে কয়েকবার এসেছেন। আমি তাদের কিছু বলতেও পারছি না। উজিরপুর গ্রামের সাকিবুল ইসলাম বলেন, আমি বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পাস করেছি। আমি যশোরে ভর্তি হতে চাই। কিন্তু উপজেলার বিভিন্ন কলেজের শিকরা এসে আমাকে আর আমার বাবাকে বার বার নানা ভাবে বোঝানোর চেষ্টা করছেন। বিষয়টা আমার জন্য চরম বিরক্তিকর। পাতিবিলা গ্রামের আশাদুল ইসলাম বলেন, আমি এ বছর মাদরাসা থেকে দাখিল পাস করেছি। আমি মাদরাসায় আলিম পড়তে চাই কিন্তু বিভিন্ন কলেজের শিকরা আমার বাড়িতে এসে আমাদের বার বার বলছেন, মাদরাসা পড়লে কোন চাকরি হবেনা। এ সময় মাদরাসা পড়ে কোন লাভ হবেনা তুমি বরং আমাদের কলেজে ভর্তি হও। জিসিবি অদর্শ কলেজে অধ্য আবু জাফর বলেন, প্রতিষ্ঠিত কলেজগুলো যদি ছাত্র ভর্তির জন্য বাড়ি বাড়ি না যেতো তাহলে আমরা করোনার এ সময়ে বেরই হতাম না। কোন কোন ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে কলেজের জন্য আমরা নিজেদের টাকায় শিার্থীদের বই খাতা পর্যন্ত কিনে দিচ্ছি। এ ব্যাপারে উপজেলা শিা অফিসার আবুল কালাম রফিকুজ্জামান বলেন, এ পরিস্থিতিতে কলেজ শিক্ষরা বিষয়টি মোটেও ঠিক করছেন না। সরকার যেখানে সামাজিক দুরত্ববজায় রাখার উপর জোর দিচ্ছেন। সেখানে দলবেঁধে গ্রামে গ্রামে এভাবে কারো বাড়িতে যাওয়াতো কোন ভাবেই ঠিক হচ্ছেনা। আমি এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।