‘বাচ্চাদের কান্না আর সহ্য হয় না’

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥‘ঘরে খাবার নেই। বাচ্চারা ক্ষুধার জ্বালায় কান্নাকাটি করে। ওদের কান্না আর সহ্য হয় না। কিছুই বলতে পারি না। তাই পেট বাঁচাতে করোনার মধ্যে বের হয়েছি ভাঙারি মালামালের খোঁজে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এলাকার গলি গলি ঘুরে মাত্র ৫০ টাকার ভাঙারি মালামাল বিক্রি করেছি। এ টাকায় সংসার চালানো কঠিন। ঈদে ভাঙারির দোকান বন্ধ থাকবে, তখন তিন বেলা খাবার জুটবে কি না আল্লাহই জানেন।’শনিবার (২৩ মে) কথাগুলো বলছিলেন করোনা পরিস্থিতিতে কর্মহীন হয়ে পড়া ভাঙারি বিক্রেতা মো. জাহাঙ্গীর মিয়া।
শুধু জাহাঙ্গীর মিয়াই নয়, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এমন অনেকেই রয়েছেন যারা করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। ফলে দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলো অর্থ সংকটে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। এ পরিস্থিতিতে পরিবারের তিন বেলার খাবার জোটনোও কষ্ট হয়ে গেছে তাদের।
দুই ছেলে-মেয়েসহ চার সদস্যের পরিবার নিয়ে জাহাঙ্গীর মিয়া রাজধানীর নন্দিপাড়া এলাকায় থাকেন। নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ঘুরে তিনি ভাঙারি মালামাল সংগ্রহ করেন। পরে তা ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। প্রতিদিন বোতল, পেপার, লোহাসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বিক্রি করে যা রোজগার হতো তা দিয়ে সংসার চলতো। কিন্তু করোনার কারণে আর কাজে যেতে পারেননি। হাতে যা পুঁজি ছিল তা দিয়ে কনোরকমে চলেছে। এখন হাতে কানাকাড়িও নেই।
জাহাঙ্গীর মিয়া বলেন, ‘আমরা সরকারিভাবে কোনো সাহায্য সহযোগিতা এখনও পাইনি। ভিক্ষাও চাইতে পারি না। কেউ ধারও দেয় না। বাসা ভাড়া বাকি পড়েছে দুই মাস। গ্যারেজ ভাড়াও দিতে পারিনি। এই করোনার প্রভাবে প্রতিদিন পরিবার নিয়ে কীভাবে পার করছি, তা কেবল আল্লাহই ভালো জানেন। সাহায্যের জন্য এলাকার কাউন্সিলরে লোকজন মোবাইল নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নিয়েছে। কিন্তু তাদের কোনো খবর নাই।’
জাহাঙ্গীর মিয়া আরও বলেন, ‘বাচ্চাদের তো না খেতে দিয়ে মেরে ফেলেতে পারি না। তাই করোনার মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভাঙারির খোঁজে বের হয়েছি। কিন্তু এখন এসব মালামাল কেউ বিক্রি করছে না। লকডাউনের কারণে কোনা কোনো এলাকায় ঢুকতে পারি না। আবার মালামাল পাওয়া যায় না। এ পরিস্থিতিতে বাচ্চাদের তিন বেলা দু’মুটো ভাত খেতে দিতে পারছি না। ঈদের জন্য কষ্ট আরও বাড়বে।’