যশোরে প্রথিতযশা সাংবাদিক কবি ফখরে আলমের জীবনাবসান

0

স্টাফ রিপোর্টার॥ যশোরের প্রথিতযশা সাংবাদিক কবি ফখরে আলমের জীবনাবসান ঘটেছে। ইন্না লিলাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি কালেরকণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি ছিলেন। সর্বজন শ্রদ্ধেয় এ ব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে যশোরের সাংবাদিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। কালেরকণ্ঠের যশোর অফিসের আলোকচিত্রি ফিরোজ গাজী জানান, দীর্ঘ দিন ধরে ক্যান্সার আক্রান্ত ফখরে আলম বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে চাঁচড়া ডালমিল এলাকার বাড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এ সময় তাঁকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সালাহউদ্দীন স্বপন মৃত ঘোষণা করেন। এ চিকিৎসক জানান হাসপাতালে আনার আগেই মৃত্যু হয় তাঁর। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১ বছর। তিনি মা, স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ক্যান্সারে আক্রান্ত অবস্থায় তিনি দৃষ্টিশক্তিও হারান।

ফখরে আলম ১৯৬১ সালের ২১ জুন জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শামসুল হুদা পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। যশোরের নেতৃস্থানীয় স্থানীয় এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ১৯৮৫ সালে সাপ্তাহিক রোববার পত্রিকার প্রতিবেদক হিসেবে সাংবাদিকতা শুরু করেন। এরপর দৈনিক আজকের কাগজ, ভোরের কাগজ, বাংলাবাজার পত্রিকা, মানবজমিন, জনকণ্ঠ, আমাদের সময়, যায়যায়দিন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন। সর্বশেষ তিনি কালের কন্ঠে বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নব্বই দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে তাঁর রচিত কবিতা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। সে সময়ে কবি হিসেবেও ফখরে আলমের সুখ্যাতি তৈরি হয়। তিনি সাংবাদিকতায় মোনাজাতউদ্দিন স্মৃতি পুরস্কার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের বজলুর রহমান স্মৃতি পদক, এফপিএবি পুরস্কার, মধুসূদন একাডেমি পুরস্কার, এফইজেবি পুরস্কার, টিআইবি অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা পুরস্কারসহ বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করেন।

এছাড়া কাব্যগ্রন্থসহ তাঁর রচিত ৩৪টি বই রয়েছে। এর মধ্যে উলেখযোগ্য রিপোর্টারের ডায়েরি, হাতের মুঠোয় সাংবাদিকতা , কাব্যগ্রন্থ ডাকে প্রেম তুষার চুম্বন, তুই কনেরে পাতাসী, খুলে ফেলি নত্রের ছিপি, এ আমায় কনে নিয়ে আলি, অন্ধকার চুর্ণ করি উলেখযোগ্য। এদিন বিকেল সাড়ে চারটায় সাংবাদিক ফখরে আলমের মরদেহ প্রেসকাব যশোরে আনা হয়। সেখানে তার সতীর্থরা তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানান। প্রেসকাব যশোর ছাড়াও সাংবাদিকদের অন্যান্য সংগঠন, স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করে। এছাড়া সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতি, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি জানায়। প্রেসকাব থেকে মরদেহ নেয়া হয় যশোর জিলা স্কুল মাঠে। সেখানে জানাজা নামাজ শেষে চাঁচড়ায় পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।