সিজারের মাধ্যমে করোনা রোগীর সন্তান প্রসব : ডাক্তার, সেবিকা কোয়ারেন্টাইনে

0

বিএম আসাদ ॥ যশোরে করোনাভাইরাস কোভিড-১৯ সংক্রমনে আক্রান্ত গৃহবধূকে অবশেষে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করানো হয়েছে। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. মিসেস নিলুফার ইয়াসমিন, জেনেসিস হাসপাতালে প্রায় দু’ঘন্টা ধরে সতর্কতার সাথে অপারেশনের পর তার কন্যা সন্তান প্রসব করান। যশোর মেডিকেল কলেজের এনেসথেসিস্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. আনিছুর রহমান ও সিনিয়র স্টাফ নার্স ফারহানা ইয়াসমিন এ অপারেশন কাজে চিকিৎসককে সহযোগিতা করেন। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. দিলীপ কুমার রায়, সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন, ডা. আবু মোর্ত্তজা ও মাহমুদুল হাসান পান্নু এ সময় জেনেসিস হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রসূতি মা হাসপাতালের ৫ম তলার পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুটিও সুস্থ রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক জানিয়েছেন। যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. আরিফ আহমেদ জানিয়েছেন, ২৮ বছরের ওই প্রসূতি মায়ের অপারেশন কাজে নিয়োজিত চিকিৎসক, সেবিকা, কর্মচারীদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে। ১৪ দিন তাদের নিজ বাসায় পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। প্রসূতির বাড়ি চৌগাছা উপজেলার বানুরহুদা গ্রামে। গত ২৩ এপ্রিলের রিপোর্টে তার শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। এরপর নিজ বাড়িতে হোম আইসোলেশনে ১৪ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর দু’দফা নমুনা পরীক্ষা করা হয়। দু’টি রিপোর্টে করোনা নেগেটিভ আসে। তখন জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে তাকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয় এবং সিজার করার জন্য গত ৯ মে দুপুর ১টা ৫০ মিনিটে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালের লেবার ওয়ার্ডে ঢ-৬ নং বেডে তাকে ভর্তি করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসকের কাছে করোনা সংক্রান্ত রোগী হিসেবে লাঞ্ছিত হন। এরপর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক তাকে ৩য় তলায় মহিলা পেয়িং ওয়ার্ডের কেবিনে দেন। ওই ওয়ার্ডটি মূলত লকডাউন ঘোষণা করে স্প্রে করা হয়েছে। সেখানে কোন রোগী নেই। এ ওয়ার্ডের কেবিনে থাকা অবস্থায় সিজারের আগে গাইনি চিকিৎসকের নির্দেশে ৩য়বারের মতো করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শেষবারের পরীক্ষায় তার রিপোর্টে করোনা পজেটিভ আসে। এ অবস্থায় তাকে একটি বেসরকারি হাসপাতালে সিজার করানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কিন্তু বেসরকারি ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সেখানে সিজার করার অনুমতি না দেয়ার কারণে গতকাল বেলা ১১টার দিকে তাকে জেনেসিস হাসপাতালে নেয়া হয় এবং সিজার করা হয়।