পাওনা টাকা চেয়ে গালি গালাজের শিকার ক্রিকেটার রুমানা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ গত বছর অনুষ্ঠিত হওয়া মেয়েদের ঢাকা লিগে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের হয়ে খেলেছিলেন নারী জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য অলরাউন্ডার রুমানা আহমেদ। দলটির নেতৃত্বও দিয়েছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গে আলোচনা করে দলও গঠন করা হয়েছিলো সেই সময়। মৌসুম শেষ হয়েছে বছর পার হলো। অথচ দলটির কোন ক্রিকেটারই এখনও পর্যন্ত পারিশ্রমিকের পুরো টাকা বুঝে পাননি। এ নিয়ে বিসিবি’র কাছে লিখিত অভিযোগও জানিয়েছেন ক্রিকেটাররা। এবার ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে টাকা চাইতে গিয়ে দুর্ব্যবহারের শিকার হয়েছেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুমানা। হজম করতে হয়েছে গালি গালাজ। আজ মোবাইলে রাইজিংবিডি’র প্রতিবেদকের সঙ্গে আলোচনায় এসব বিষয় তুলে আনেন রুমানা।
গত বছর মেয়েদের ক্রিকেট লিগের সময় শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র সবার আগে রুমানার সঙ্গে চুক্তি করে। এরপর রুমানাকেই দায়িত্ব দেয়া হয় দল গঠনের। সেসময় রুমানার হাত ধরেই শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র শক্তিশালী দল গঠন করে। লিগ চলাকালীন সময়ে ক্রিকেটাররা একবার পারিশ্রমিকের কিছু অংশ বুঝে পান। কিন্তু এরপর এক বছর পার হয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত ক্রিকেটারদের পাওনা টাকা পরিশোধ করেনি দলটি। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের সভাপতি কেএম শহীদুল্লাহর সাথে রুমানা এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ করেছিলেন। তিনিও বারবার দিচ্ছি, দিবো করে সময় পার করে যাচ্ছেন। মূলত করোনার এই সময়ে ক্রিকেটারদের ঘরে বসেই থাকতে হচ্ছে। ফলের দলের অন্য কয়েকজন ক্রিকেটার শায়লা শারমিন, সুলতানা ইয়াসমিন বৈশাখি, ইতি মন্ডলসহ কয়েকজন রুমানার কাছে পারিশ্রমিকের জন্য ক্লাবে কথা বলতে অনুরোধ জানায়। আর তখন পারিশ্রমিক চাইতে গিয়ে উল্টো বাজে ব্যবহারের শিকার হতে হয় জাতীয় দলের নির্ভরযোগ্য এই ক্রিকেটারকে।
এ বিষয়ে রুমানা আহমেদ বলেন, ‘আমাদের কোনো ক্রিকেটারের পুরো টাকাই শোধ করেনি ক্লাব। গত মাসে আমাকে ক্লাবের কয়েকজন সতীর্থ ক্রিকেটার ফোন করেন। তাঁরা আমাকে ক্লাবের সঙ্গে টাকার বিষয়ে কথা বলতে বলেন। এপ্রিলের ৭/৮ তারিখের দিকে আমাদের টিমের ম্যানেজারের কাছে ফোন করে টাকা চাইলে তিনি আমার সাথে খুবই বাজে ব্যবহার করেন। এক পর্যায়ে আমাকে খুব বাজে ভাষায় গালি গালাজ করতে থাকেন। আমি তাঁর এমন ব্যবহারে খুবই হতবাক হয়েছি। রুমানা ক্লাবের থেকে আর কত টাকা পাবেন জানতে চাইলে এ নারী ক্রিকেটার আরও যোগ করেন, ‘আমার সাথে ৭ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিলো। যার মধ্যে ৩ লাখ টাকার মতো পেয়েছিলাম।’ ক্লাবের এমন বাজে ব্যবহারের পরে অবশ্য বসে থাকবেন না তিনি। বিসিবিতে অভিযোগ করবেন জানিয়ে বলেন, ‘এখন তো করোনার জন্য সব কিছুই বন্ধ। এ কারণে আমি আসলে এখনই তাঁর বিরুদ্ধে বিসিবিতে অভিযোগ করতে পারছি না। তবে আমি তাঁর এমন আচরনের জন্য বিসিবিতে অবশ্যই অভিযোগ জানাবো।’
খারাপ আচরণের শিকার হওয়ার বিষয়ে অভিযোগ পরে জানালেও ইতিমধ্যে পাওনা টাকার ব্যপারে আগেই লিখিত অভিযোগ বিসিবিতে জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি। রুমানা বলেন, ‘বিশ্বকাপের আগেই বিসিবির সিইও’র কাছে আমি লিখিতভাবে সব ক্রিকেটারের নামসহ কে কত টাকা পাবে এটা উল্লেখ করে চিঠি দিয়েছিলাম।’ এ বিষয়ে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের মেয়েদের ক্রিকেট ম্যানেজার জাকির হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ক্রিকেটারদের পাওনার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের আসলে বাজেট পরিকল্পনায় একটু ভুল ছিল বলে কিছু ক্রিকেটারের পাওনা বাকি রয়ে গেছে। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সব ক্রিকেটারের সব টাকা বুঝিয়ে দেয়া হবে।’ এদিকে রুমানার সাথে খারাপ ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানিয়েছেন, রুমানা আগে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ওই আমার সাথে আগে খারাপ ভাষায় কথা বলেছিলো।’