মসজিদ খুলে দেওয়ার ঘোষণা থেকে সরে এলেন গাজীপুরের মেয়র

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের যেসব ওয়ার্ডে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ নেই, সেসব ওয়ার্ডের মসজিদ স্বাভাবিকভাবে নামাজ আদায়ের জন্য খুলে দেওয়ার ঘোষণা থেকে সরে এলেন মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। বুধবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ প্রতিনিধিকে তিনি বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনাই মেনে চলতে হবে। আমি আমার আগের বক্তব্য থেকে সরে এসেছি।’ মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) ফেসবুকে এক ভিডিও বার্তায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম ঘোষণঅ দিয়েছিলেন, আগামী শুক্রবার থেকে সিটির করোনা মুক্ত এলাকাগুলোর মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে মুসল্লিদের কোনও বাধা থাকবে না। তবে এক দিন পরেই তিনি এই কথা ফিরিয়ে নিলেন।
মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘গার্মেন্টস খুলে দিয়েছে, এ জন্য রিস্কে আছি। এছাড়া পরিবেশটা বলা যাচ্ছে না। সার্বিক দিক বিবেচনা করে আমি আমার আগের বক্তব্য থেকে সরে এসেছি। সরকারের যে বক্তব্য সেটাই আমার বক্তব্য।’ পাশাপাশি তিনি গাজীপুর সিটির নাগরিকদের সরকারের নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছেন। এর আগে মঙ্গলবার ভিডিও বার্তায় মেয়র বলেন, ‘পুরো জেলার তুলনায় গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক কম। যেহেতু বিজিএমইএ গার্মেন্টস খুলে দিচ্ছে, এছাড়া এখন রমজান মাস, সেহেতু যেসব ওয়ার্ডে কোনও করোনা আক্রান্ত রোগী নেই সেসব ওয়ার্ডের মসজিদে আগামী শুক্রবার থেকে ইচ্ছুক মুসল্লিরা মসজিদে গিয়ে নামাজ আদায় করতে পারেন। তারা মহান আল্লাহর দরবারে করোনা থেকে গাজীপুরসহ দেশ ও বিশ্ববাসীর জন্য দোয়া করতে পারেন। তারাবির নামাজ আদায় করতে পারেন। এজন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহায়তা করা হবে।’
গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডা. খায়রুজ্জামান জানান, গাজীপুরে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা মোট ৩৩১ জন। এর মধ্যে সদর উপজেলায় আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এ উপজেলায় এ পর্যন্ত ১১৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও জেলার কালিগঞ্জ উপজেলায় ৯১ জন, কাপাসিয়া উপজেলায় ৭০ জন, কালিয়াকৈর উপজেলায় ৩৪ জন ও শ্রীপুর উপজেলায় ২২ জন। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব নুরুল ইসলাম বুধবার জানান, ‘করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে মসজিদে নামাজ আদায়ে যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সে নির্দেশনা মেনেই নামাজ আদায় করতে হবে। এ ব্যাপারে আমাদের যে নির্দেশনা আছে তাই ঠিক থাকবে। আমরা কেউ সরকারি নির্দেশনার বাইরে নই। এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়রের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। মেয়র আমাকে বলেছেন, তিনি নিজেই ওটা সংশোধন করবেন।’ তিনি গাজীপুরবাসীকে সরকারি নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান।
গাজীপুর জেলা প্রশাসক এস এম তরিকুল ইসলাম (ডিসি) বলেন, ‘মসজিদ বা উপসনালয়ে ঘোষিত সরকারি সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের এখতিয়ার আমাদের কারও নেই। এটার পরিবর্তন করতে হলে সরকারের তরফ থেকেই আসতে হবে।’ গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি’র) কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেণ, ‘সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের দেওয়া নির্দেশনা মতেই গাজীপুর মহানগরের মসজিদগুলোতে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি ওয়াক্তের নামাজে পাঁচ জন করে, জুমার নামাজে ১০জন করে এবং তারাবি’র নামাজে ১২জন নিয়ে নামাজ অনুষ্ঠিত হবে। গাজীপুর মহানগরের মসজিদ গুলোতে সরকারের এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। ইতোমধ্যে মসজিদে মসজিদে ইমাম ও কমিটির সভাপতিকে ফোন করে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে। মহানগরী এলাকায় মাইকিংও করা হচ্ছে।’