রহমতের বরিষায় সিক্ত হবার মাস রমজান

0

মহিউদ্দীন মোহাম্মদ : পবিত্র রমজানের ৪র্থ দিন আজ। হিজরি নবমতম মাস এটি। পৃথিবীর সবখানেই ঋতু গণনায় বসন্তের একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এই ঋতু প্রত্যেকের জন্য প্রশান্তির প্রতীক। এসময় প্রকৃতি সাজে বৈচিত্র্যময়তায়। এর স্তুতিগাথায় নিজেকে নিবেদন করে সৃজনশীল মানুষেরা। তেমনি রমজান হচ্ছে মুমিনের বসন্তকাল। এটি ইবাদতের মৌসুম। মুমিন বান্দার জন্য পরম স্বস্তির প্রতীক। বান্দা নিজেকে নিবেদন করে আল্লাহ জাল্লা শানুহুর কাছে। আর এই নিবেদনের পুরস্কার হিসেবে সে পেতে চায় একান্ত আরাধ্য জান্নাত বা বেহেশত।
রমজ ধাতু থেকে থেকে রমজান শব্দের উৎপত্তি। রমজান অর্থ জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ভস্ম করে দেয়া। যে মাসে মানুষের রিপু সমূহ যেমনÑ কাম, লোভ, মোহ ও ভোগের মানসিকতাকে জ্বালিয়ে ছাই করার ব্যবস্থা রয়েছে, তাই রমজান মাস। রমজানকে যারা সেভাবে কাজে লাগাতে পারল তারা সফল হল। আর যারা সেভাবে আত্মসংশোধন করতে পারল না তারা বড়ই দুর্ভাগা। তাদের সিয়াম সাধনা যেন কোন কাজেই আসল না।
আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেন, “রমজান মাসে যে একটি ভাল কাজ করবে সে যেন একটি ফরজ আদায়ের কাজ করল আর যে একটি ফরজ আদায় করল সে যেন ৭০টি ফরজ আদায় করল। এ মাস ধৈর্য ও সহানুভূতিশীল হওয়ার মাস।
প্রিয় পাঠক, রমজান নিয়ে কিছু তরুণের আক্ষেপ এরকম-রোজার মাসে যে মানুষটি রোজা রাখছেন, সেই আবার সব থেকে মিথ্যা কথা বলছেন। ওজনে কম দিচ্ছেন। মজুদদারি করে ফড়কা আয় করছেন। কোন কোন তরুণ সারারাত ধরে বিভিন্ন কায়দায় নগ্ন মুভি দেখছেন। জেনা ব্যভিচার করছেন। এত সব কায়-কারবারের পরও সে রোজাদার। এর উত্তরে বলা যায়,আসলে সমাজের রন্ধ্রে যে পচন তা রোধ করা জরুরী। আপন ভাল হলে পরে, জগতও ভাল হবে। এটাই চূড়ান্ত কথা। আপনকে ভাল করতে চাইলে রোজার প্রকৃত শিায় নিজেকে সামিল করতে হবে। তা নাহলে প্রজন্মের প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে নাজেহাল হতে হবে। তাদের কাছে ধর্ম বা রিলিজিয়ন তিক্ত আফিমের মত মনে হবে। এখানে এ মাসে মুসলমানদের করণীয় কিছু বিষয় পয়েন্ট আকারে সন্নিবেশ করা হলো :
১) রমজানের পবিত্রতা রা করা, পবিত্রতা রার জন্য অন্যকে উৎসাহিত করা।
২) ঈমানদারী ও আত্মসমালোচনার সাথে হিসাব করে করে রোজা রাখা।
৩) সকল ধরনের মিথ্যা, পাপ, দুর্নীতি ও অপকর্ম চিরতরে বর্জন করা।
৪) রোজা রমজানের শিা অনুযায়ী নিজের জীবন পরিবার ও সমাজ গঠনের চেষ্টা করা।
৫) কুরআন পড়া, বুঝা এবং কুরআনের শিা ও দাবি অনুযায়ী পরিবার এবং সমাজ গঠন করা।
৬) ধৈর্য ও ত্যাগের গুণ অর্জন করা।
৭) গরীব অসহায় মানুষের প্রতি সদয় হয়ে তাদের সাহায্য করা,
৮) আল্লাহর নবী (সা.) রমজান মাসকে রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তির মাস ঘোষণা করেছেন তাই সবার উচিত রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তি লাভ করার জন্য আন্তরিকভাবে চেষ্টা করা।
৯) অতীতের সকল রকমের ভুল-ত্রুটির জন্য তাওবা করা ভবিষ্যতে ওই ধরনের অন্যায়, ইসলাম, সমাজ, দেশ ও মানবতাবিরোধী কাজে লিপ্ত না হওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা এবং তাওবা ও সিদ্ধান্তের উপর অটল থাকা।