করোনা পরিস্থিতিতে জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের দাবি বিএনপির

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনা দুর্যোগের প্রভাব দীর্ঘমেয়াদি হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ অবস্থায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার ল্েয সুসমন্বিত ও সুবিবেচিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ, ত্রাণবিতরণ, বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা ও ঋণ প্যাকেজ বণ্টনসহ সার্বিক অবস্থায় সরকারকে পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠনের প্রস্তাব করছি। গতকাল শুক্রবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান। মির্জা ফখরুল বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনীর প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করে টাস্কফোর্সকে অর্থবহ ও গতিশীল করার মাধ্যমে কার্যকরী পদপে নেওয়া এখন সময়ের দাবি। আল্লাহর রহমত এবং আমাদের সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় এ মহা দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে সম হবো।
করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষিত ৯৫ হাজার ৬৯১ কোটির টাকার অর্থনৈতিক প্যাকেজকে শুভঙ্করের ফাঁকি বলে দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই প্যাকেজে সরকারের প্রণোদনা, ব্যাংক ঋণ বাবদ সরকারি ভর্তুকি প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা। সরকারি কোষাগার থেকে (বিশেষ বরাদ্দ) অর্থনৈতিক প্যাকেজ প্রণোদনা ১ হাজার ৬১০ কোটি। মোট ৪ হাজার ৬১০ কোটি টাকা যা জিডিপির ০.১৬ শতাংশেরও কম। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা মনে করি করোনা ভাইরাসের প্রভাব মোকাবিলায় সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ যোগান দিয়ে একটি বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে। যেন অন্যান্য খাতের কর্মকাণ্ড বিঘিœত না হয়। করোনাভাইরাসের ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য উপযুক্ত প্রণোদনার ব্যবস্থারও দাবি জানান বিএনপির মহাসচিব।
এসময় বিএনপি ঘোষিত অর্থনৈতিক প্যাকেজে সুপারিশগুলো অত্যন্ত বাস্তবসম্মত দাবি করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর ও গরিব জনসাধারণের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার ল্েয ৬ মাসের জন্য অর্থ প্রদানের জন্য ৮ হাজার কোটি টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করেছি। সামরিক বাহিনীকে ব্যবহার করে এসব অর্থ বণ্টন, কোনোভাবেই দলীয় ক্যাডারদের রিলিফ বণ্টনে সম্পৃক্ত না করার দাবি করেছি। গার্মেন্টস, প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিল্প, কৃষি, পোল্ট্রি, মৎস্য, ডেইরি, সেলফ এমপ্লয়েড, স্টার্টআপ, বিদেশফেরতদের জন্য কোষাগার থেকে আর্থিক প্রণোদনামূলক প্যাকেজ ঘোষণা করা হোক। বাণিজ্যিক ব্যাংকের গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে নয়, বরং একটি জাতীয় টাস্কফোর্সের মাধ্যমে প্রণোদনার অর্থ বণ্টনের সুপারিশ করেন মির্জা ফখরুল। এদিকে ত্রাণ বিতরণে নজিরবিহীন দলীয়করণ ও দুর্নীতির ঘটনায় দুস্থ ও অসহায় মানুষ বঞ্চিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ত্রাণ দেওয়ার ফটোসেশন বা ভিডিও ধারণ করে আবার জোর করে ত্রাণ কেড়ে নেওয়ার চিত্র ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অনেক েেত্র চাল-চোরকে বাদ দিয়ে ত্রাণ নিতে আসা লোকদের আসামি করে মামলা দায়েরের মত ঘটনাও ঘটছে। চাল চুরির এই হিড়িক স্বাধীনতা পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলের কথা মনে করিয়ে দেয় বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিনি বলেছিলেন, “সবাই পায় সোনার খনি, আমি পেয়েছি চোরের খনি।” আবার বলেছিলেন, “আমি যা ভিা করে আনি, সব চাটার গোষ্ঠী খেয়ে ফেলে, আমার গরীব কিছুই পায় না।” এই জন্যই সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণ করতে আহ্বান জানাচ্ছি। করোনা যুদ্ধের বীর যোদ্ধা ডা. মঈন উদ্দিনের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তার মৃত্যু একটা বিষয় পরিষ্কার করে দিয়েছে, আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কতটুকু ভঙ্গুর যে, একজন চিকিৎসককে রা করতে পারিনি।