বাড়তি চাহিদায় দাম বেড়েছে ডালের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ দেশে ডালের আমদানি ও মজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত। তবে নভেল করোনাভাইরাসের কারণে সারা দেশ কার্যত বন্ধ থাকায় ঘরবন্দি মানুষের ডালের চাহিদা বেড়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির এ সুযোগ কাজে লাগাতে পণ্যটির দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তি চাহিদার বিপরীতে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও কয়েকদিনে বিভিন্ন ধরনের ডালের দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫-২০ টাকা।
দেশে ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের বিভিন্ন আড়তে গতকাল কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে আমদানি করা তুলনামূলক মোটা মসুর ডাল কেজিপ্রতি ৭২-৭৫ টাকায় বিক্রি হয়। ১০ দিন আগেও পণ্যটির দাম ছিল কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৫৫ টাকা। মূলত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মানুষের কাছে এ ডালের চাহিদা বেশি।
এখানকার বাজারে তুলনামূলক চিকন মসুর ডাল কেজিপ্রতি ১১৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ১৫ টাকা। চিকন মুগ ডালের দাম ২০ টাকা বেড়ে কেজিপ্রতি ১৪৫ টাকায় উঠেছে। মোটা মুগ ডাল কেজিপ্রতি ১৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা। এদিন ডাবলি ডাল (মটর ডাল) কেজিপ্রতি ৬ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ৩৮-৪০ টাকায়। ছোলা বিক্রি হয় মণপ্রতি ২ হাজার ৩৫০ টাকায়। দাম বেড়েছে মণে ২০০ টাকা।
রোজার আগে দেশীয় আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীরা বাড়তি চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে বিভিন্ন ধরনের ডালের আমদানি ও মজুদ বাড়িয়ে রাখেন। এবারো তাই করা হয়েছে। এর মধ্যে শুরু হয়েছে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। ঘরবন্দি মানুষ বেশি পরিমাণে ডাল কিনেছেন। ত্রাণের জন্য বাড়তি ডাল কেনা হয়েছে। তাই চাহিদায় আকস্মিক ঊর্ধ্বগতি চাঙ্গা করেছে পণ্যটির দাম। তবে পর্যাপ্ত আমদানি ও মজুদ সত্ত্বেও দাম বেড়ে যাওয়াকে ‘ইচ্ছাকৃত’ বলছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
তবে এ কথা মানতে নারাজ খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী নেতা মো. জামাল উদ্দিন। সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, সবকিছু বন্ধ থাকায় সরবরাহ ও উৎপাদন প্রক্রিয়ায় সংকট দেখা দিয়েছে। পর্যাপ্ত মজুদ থাকলেও চাহিদা অনুযায়ী সারা দেশে পণ্য পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। ইচ্ছাকৃতভাবে দাম বাড়ানোর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আর দাম অস্বাভাবিকভাবেও বাড়েনি।
উল্লেখ্য, রোজা সামনে রেখে দেশের বাজারে ডাল আমদানি এবারো বেড়েছে। চট্টগ্রাম কাস্টমসের আমদানি তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) দেশে তিন ধরনের ডাল আমদানি হয়েছিল ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৮১৭ টন। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে একই ধরনের ডাল আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ৫৪ হাজার ৫৩৯ টন, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৩৪ শতাংশ বেশি।
এর মধ্যে দেশে মসুর ডালের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশে মসুর ডাল আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ১৩ হাজার ১৭৭ টন। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৫৪ হাজার ২৪২ টন মসুর ডাল। বাড়তি আমদানি সত্ত্বেও চাহিদার আকস্মিক উল্লম্ফন পণ্যটির দাম বাড়িয়েছে বলে দাবি আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের।