ঝুঁকি নিয়ে বাড়ি ফেরার স্রোত : লঞ্চ-ট্রেনসহ গণপরিবহন বন্ধ ঘোষণা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ গত সোমবার ঘোষণা দেয়া হয়েছিল ২৬শে মার্চ থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি থাকবে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান। এই সময়ে গণপরিবহন চলাচল সীমিত থাকবে। জনসাধারণকে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে পরামর্শ দেয়া হয়। এ ঘোষণার পর থেকে রাজধানীর অনেক বাসিন্দা বাড়ি ফিরতে বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাট ও রেল স্টেশনে ভিড় করেন। অনেক উৎসবের পরিস্থিতি তৈরি হয় এসব স্থানে। করোনা ঝুঁকির মধ্যে এমন জনসমাগম ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেবে এমনটা আঁচ করে গতকাল সকালেই সব ধরণের নৌ যান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। সকালে কমিউটার ও মেইল ট্রেন বন্ধের ঘোষণা এলেও পরিস্থিতি বিবেচনায় দুপুরে সব ট্রেন চলাচল বন্ধের ঘোষণা দেয়া হয়। বন্ধ ঘোষণা করা হয় গণপরিবহন।
পণ্যবাহী যান চলাচল চালু থাকলেও এসব যানে যাত্রী পরিবহনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। গতকাল সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভিডিও বার্তায় গণপরিবহন বন্ধের কথা জানান। বার্তায় তিনি বলেন, ২৬শে মার্চ থেকে ৪ঠা এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে গণপরিবহন লকডাউন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ওষুধ, জরুরি সেবা, জ্বালানি, পচনশীল পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার বাইরে থাকবে। পণ্যবাহী যানবাহনে কোনও যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। গণপরিবহন বন্ধের পাশাপাশি অভ্যন্তরীন রুটের সব বিমান চলাচলও অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে আজ জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী কাল স্বাধীনতা দিবসের ছুটির মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে ১০ দিনের ছুটি। ছুটিকালীন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের নিজ নিজ কর্মস্থলে থাকতে বলা হয়েছে। এদিকে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গতকাল থেকে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সারা দেশে কাজ শুরু করেছে সশস্ত্র বাহিনী।
এদিকে গতকাল রাজধানীর গাবতলি বাসটার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি কাউন্টারের সামনে টিকিট পেতে যাত্রীদের দীর্ঘ লাইন। করোনা আতংক ভুলে সবাই টিকিট পেতে মরিয়া। কারো মাঝেই নেই করোনা সচেতনতা। টিকিটের জন্য এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে ছোটাছুটি করছে সবাই। পরিবারের ছোট-বড় সবাইকে নিয়ে ছুটছে গ্রামের উদ্দেশ্যে। সকাল থেকে যাত্রীদের ভিড় ছিলো কমলাপুর রেল স্টেশনে। করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ এড়াতে গতকাল দুপুরে দেশের সব রুটে অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রীবাহী রেল চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেন রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। মঙ্গলবার থেকে এসব ট্রেন চলাচল বন্ধ করা হয়। কমলাপুর স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, কমলাপুর স্টেশন থেকে ৩১ হাজার ৯৬০টি টিকিট বিক্রি হয়েছে। দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত ১১টি আন্তনগর ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে গেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমলাপুরর স্টেশনের এক রেলকর্মী বলেন, যাত্রীর এত চাপ, আসনবিহীন টিকিটও প্রচুর বিক্রি হচ্ছে। সকাল থেকে লঞ্চঘাটে আসতে শুরু করে যাত্রীরা। কিন্তু লঞ্চ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়ে যাত্রিরা। পটুয়াখালী বাউফলের বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ বলেন, অনেক দিনের ছুটি। ভেবেছিলাম বাবা মায়ের সাথে দেখা করতে যাবো কিন্তু হলো না। সবকিছু বন্ধ ভাবছি এভাবে না হলে প্রাইভেটকার ভাড়া করে যাবো। দেশের সব রুটে গতকাল মঙ্গলবার থেকে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।