লক্ষ্য ছাড়িয়ে মিরসরাইয়ে ভুট্টা আবাদ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে এবার মৌসুমে লক্ষ্যের তুলনায় তিন গুণের বেশি জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, উৎপাদন খরচের তুলনায় লাভ বেশি হওয়ায় ধীরে ধীরে ভুট্টা আবাদে স্থানীয় কৃষকদের আগ্রহ বাড়ছে। পতিত জমিতে ভুট্টা আবাদ করে বাড়তি আয় করছেন তারা। মূলত এ কারণে এবার লক্ষ্যের তুলনায় তিন গুণের বেশি জমিতে কৃষিপণ্যটির আবাদ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত মৌসুমে মিরসরাইয়ের ১৬টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ১০ হেক্টর ভুট্টা আবাদ হয়েছিল। এবার মৌসুমে প্রায় একই পরিমাণ জমিতে কৃষিপণ্যটির আবাদ হতে পারে বলে নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এবার মিরসরাইয়ে সব মিলিয়ে ৩৫ হেক্টর ভুট্টা আবাদ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মিরসরাইয়ে পোলট্রি ও হ্যাচারি শিল্প দ্রুত বিকাশ লাভ করছে। গড়ে উঠেছে বড় আকারের একাধিক খামার। রয়েছে পোলট্রি ফিড হ্যাচারি। এসব হ্যাচারিতে ফিড উৎপাদনের জন্য প্রতি বছর ৫০০ টনের বেশি ভুট্টা প্রয়োজন হয়। দেশের উত্তরাঞ্চল থেকে কেনার পাশাপাশি আমদানি করা ভুট্টা দিয়ে প্রয়োজন মেটানো হয়।
এ প্রয়োজন স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণের চেষ্টা শুরু হয়েছে। হ্যাচারি মালিকরা সহজে ও ভালো দামে কৃষকের কাছ থেকে ভুট্টা কিনছেন। ফলে এখানকার কৃষকের ভুট্টা বিক্রি ও দাম পাওয়া নিয়ে ঝামেলা আগের তুলনায় কমে এসেছে। বেড়েছে কৃষিপণ্যটির আবাদ ও উৎপাদনের আগ্রহ।
পরাগলপুর গ্রামের কৃষক শফিকুর রহমান বলেন, ভুট্টা আবাদে খরচ তুলনামূলক কম। মাত্র দুবার সেচ দিলেই হয়। বোরো আবাদে উৎপাদন খরচ কিছুটা বেশি হওয়ায় অনেক কৃষক বোরোর বদলে ভুট্টা আবাদে ঝুঁকতে শুরু করেছেন।
মিরসরাইয়ের নাহার এগ্রো গ্রুপের সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলাউদ্দিন জানান, প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে উপজেলার পতিত কৃষিজমি ভুট্টা আবাদের আওতায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এরই মধ্যে উপজেলার জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের মামা ফকিরের আস্তানা, পরাগলপুর ও সদরমা দীঘি এলাকায় প্রায় ২০০ একর জমিতে নাহার এগ্রো নিজ উদ্যোগে ভুট্টা আবাদ করেছে। এছাড়া একাধিক কৃষককে জমির আয়তন অনুযায়ী উৎপাদন খরচ দিয়ে ভুট্টা আবাদে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। তারা উৎপাদিত ভুট্টা ন্যায্যমূল্যে প্রতিষ্ঠানটির কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা বলেন, ভুট্টা আবাদ করে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তন করা সম্ভব। কেননা ভুট্টার বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে এখানকার কৃষকদের কৃষিপণ্যটি আবাদে উৎসাহ দেয়া হচ্ছে। এসব কারণে এবার ভুট্টার আবাদ লক্ষ্য ছাড়িয়েছে।