বাসদের ১৬ নেতা বহিষ্কারের প্রতিবাদে ছাত্র ফ্রন্টের বিবৃতি

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের (মার্কসবাদী) ১৬ নেতাকে বহিষ্কারের প্রতিবাদে কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তীর পর এবার বিবৃতি দিল সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাত নেতা। মঙ্গলবার সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় সদস্য উজ্জ্বল বিশ্বাস গণমাধ্যমে একটি লিখিত বিবৃতি পাঠান। বিবৃতি প্রদানকারী সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের নেতারা হলেন- কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক তাজ নাহার রিপন, স্কুল বিষয়ক সম্পাদক আরিফ মঈনুদ্দীন, সদস্য মনিরুজ্জামান মুনির, সদস্য রুহুল আমিন, সদস্য কাজী জহির উদ্দিন, সদস্য রায়হান বকসী ও সদস্য উজ্জ্বল বিশ্বাস।
গত রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বাসদের ১৬ নেতাকে বহিষ্কার করে দলটি। এ নেতাদের বহিষ্কারের প্রতিবাদে ১৭ ফেব্রুয়ারি বিবৃতি দেন বাসদের কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্ত্তী। সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট তাদের বিবৃতিতে বলেছেন, ‘বিগত কয়েক বছর ধরে পার্টির অভ্যন্তরে দল পরিচালনা পদ্ধতি, সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়া, পার্টির ঘোষিত রাজনৈতিক লাইন অনুসারে সংগঠন ও দল গড়ে তোলার ক্ষেত্রে উদ্যোগহীনতা, বিগত দিনের সংগ্রামের মূল্যায়নসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে বিতর্ক চলে আসছে। পার্টির গণসংগঠনের (ছাত্র ফ্রন্ট) নেতৃত্বের অবস্থান থেকে আমরাও এ বিষয়গুলোর সাথে যুক্ত ছিলাম। পার্টির বিভিন্ন অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত ও ভুল পদক্ষেপের কারণে ছাত্রফ্রন্টের বহু সম্ভাবনাময় নেতা-কর্মীরা সংগঠন ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছে। এ ব্যথা আজও আমাদের হৃদয়ে বাজে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সংগঠনগত ভাবে বিভিন্ন সময় আমরা পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে বিষয়গুলো নিয়ে বসেছি। কিন্তু সমস্যার কোনো সমাধান তো করেননি বরং সময়ক্ষেপণ করে নিজেদের আস্থাভাজন কর্মীদের সংগঠনের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা করার মতো বুর্জোয়া তৎপরতা চালিয়েছেন। এ অবস্থায় দলকে এ পরিস্থিতি থেকে বের করে সঠিক ধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য বর্তমান কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে অতীত দিনের ভুলের পর্যালোচনা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে নতুন পার্টি প্রক্রিয়া শুরু করার যে আহ্বান ১৬জন নেতা জানিয়েছিলেন, তা অত্যন্ত যৌক্তিক বলে আমরা মনে করি ও সমর্থন করি।’ তারা আরও বলেন, ‘কিন্তু কেন্দ্রীয় কার্যপরিচালনা কমিটি এ মতামতকে দলবিরোধী তৎপরতা হিসেবে চিহ্নিত করে দলের অভ্যন্তরে মতাদর্শিক সংগ্রাম পরিচালনার সকল পথ বন্ধ করে ওই ১৬জন নেতাকে বহিষ্কার করেছেন। যা সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিক ও বুর্জোয়া সংস্কৃতির প্রতিফলন ছাড়া আর কিছু নয়। কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী ১৬জন নেতার বক্তব্যকে সমর্থন ও কেন্দ্রীয় কমিটির একাংশের এই সিদ্ধান্তকে বিরোধিতা করলে তাকে শোকজ করা হয়েছে। অথচ যে নেতারা সমালোচনা করেছেন তাদেরকে ক্ষমতালোভী হিসেবে চিহ্নিত করে বিবৃতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা তাদের এই বিবৃতির তীব্র নিন্দা জানাই এবং বহিষ্কারাদেশের সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করছি। ভিন্নমত ও যৌক্তিক বক্তব্যকে এভাবে খারিজ করা ও তাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার মধ্য দিয়ে শেষ বিচারে ফ্যাসিবাদের হাতকেই যে শক্তিশালী করা হবে বলে আমরা মনে করি।’
ছাত্র ফ্রন্টের সারাদেশের নেতা-কর্মী-সমর্থক-শুভানুধ্যায়ীদের নতুনভাবে পর্যালোচনার ভিত্তিতে নতুন কর্মপন্থা হাজির করার প্রচেষ্টায় যুক্ত হবার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে এ বিবৃতিতে। বহিষ্কৃতদের দাবি, দলের অগণতান্ত্রিক কাজের সমালোচনা করায় তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বাসদের বহিষ্কৃতরা হলেন- দলিলের রহমান দুলাল, মনজুর আলম মিঠু, অপু দাশ গুপ্ত, সুশান্ত সিনহা সুমন, আজিকুর রহমান, আমিনুল ইসলাম, মাহাবুব আলম রুবেল, সত্যজিৎ বিশ্বাস, রুহুল আমিন, জান্নাতুল ফেরদাউস, সামসুল আলম দুলু, পূরবী চক্রবর্তী, মাছুমা আল মাহবুবা, তরিকুল আলম, জাহেদ আহমেদ টুটুল ও মশিউর রহমান খোকন।