“আইসিজের রায় মানতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে হবে”

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ঢাকার এক আলোচনায় দেশি-বিদেশি কূটনীতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা বলেছেন, রাখাইনে গণহত্যা বন্ধ এবং রোহিঙ্গাদের বসবাসের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত-আইসিজের অন্তবর্তী রায় বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই রায়ে মিয়ানমারকে সুনির্দিষ্টভাবে চার দফা পদক্ষেপ নিতে বলেছে আদালত। ওই রায় কার্যকর হলে প্রত্যাবাসনের পথও সুগম হবে এমন মন্তব্য করে তারা বলেন, রায় বাস্তবায়নে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে বৈশ্বিক চাপ আরও বাড়াতে হবে। প্রয়োজনে প্রভাবশালী দেশগুলোকে নিয়ে মিয়ানমারের ওপর বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে। আর এ জন্য ঢাকাকেও বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ নিবিড় করা জরুরি। মঙ্গলবার ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস এন্ড স্টাডিজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজ যৌথভাবে ‘রোহিঙ্গা: রাখাইনে ন্যায়বিচার ও অধিকার প্রয়োজন’ শীর্ষক এক আলোচনার আয়োজন করে।
রাজধানীর ব্র্যাক ইনের ওই আয়োজনে সঞ্চালনা করেনÑ সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের পরিচালক অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ। প্যানেল আলোচনায় স্বাগত বক্তৃতা দেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর পিস এন্ড জাস্টিসের নির্বাহী পরিচালক মনজুর হাসান। অনুষ্ঠানে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সাংসদ ও অ্যাটর্নি জেনারেল ফিলিপ রডক বলেন, রোহিঙ্গাদের ওপর নৃশংসতার অভিযোগে মিয়ানমারের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বিশ্ব সম্প্রদায়কে একসঙ্গে উদ্যোগ নিতে হবে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে এ বিষয়ে কার্যকর নিষেধাজ্ঞা দিতে হবে। েেরাহিঙ্গাদের ব্যাপারে মিয়ানমারের আচরণে গুণগত পরিবর্তন আনতে এটাই হচ্ছে একমাত্র পথ। আর মিয়ানমারের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া যে জরুরি সে বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যকে একমত হতে হবে। এজন্য চীন ও রাশিয়াকে রাজি করাতে হবে। বৃটেনে প্রবাসী রোহিঙ্গাদের সংগঠন বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানেইজেশনের সভাপতি ও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা তুন খিন বলেন, রোহিঙ্গারা তাদের আদি নিবাসে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে ফিরতে চায়। তারা মিয়ানমারের নাগরিকত্ব চায়। তিনি বলেন, বর্মী সেনারা রোহিঙ্গাদের হত্যা, ধর্ষণ এবং নির্বিচারে ঘরবাড়ি পুড়িয়ে বাস্তুচ্যুত করেছে। বেসামরিক নেতৃত্ব রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের পরিবর্তে জাতীয় যাচাই পত্র দেয়া, রোহিঙ্গাদের জমি কেড়ে নিয়ে সেখানে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমতি দেয়া আর মিয়ানমারের সমাজে ঘৃণার বিস্তার করেছে। কাজেই রোহিঙ্গাদের দূর্ভোগের জন্য সামরিক ও বেসামরিক নেতৃত্ব উভয়েই দায়ী। মুক্ত আলোচনায় সাবেক পররাষ্ট্রসচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাউথ এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ পলিসি এন্ড গর্ভানেন্সের সিনিয়র ফেলো মো. শহীদুল হক বলেন, আইসিজের রায়ের পর অনেকের মাঝে আত্মতুস্টি দেখতে পাই। মনে হচ্ছে, আমাদের যা দরকার সেটি অর্জিত হয়ে গেছে। এ ধরনের ভাবনা অত্যন্ত বিপজ্জনক। গাম্বিয়া বনাম মিয়ানমারের ওই মামলার নেপথ্যে কাজ করা মিস্টার হক বলেন, জাতিসংঘে নিরাপত্তা পরিষদের কিছু কিছু সদস্য রাষ্ট্র মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার ওই মামলার ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। এই প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের ওপর আরো চাপ দিতে হবে।