যবিপ্রবিতে ‘ভুলে’ মুক্তিযোদ্ধা কোটার অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনিয়ম

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০২০ সেশনের প্রথম বর্ষের মুক্তিযোদ্ধা কোটার অপেক্ষমান শিক্ষার্থীদের ভর্তির ক্ষেত্রে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম অনুযায়ী ভর্তির আগে সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ প্রদান করার কথা থাকলেও সে ক্ষেত্রে কোনো কিছুই অনুসরণ করা হয়নি। কোনো বিজ্ঞপ্তি বা নোটিশ প্রদান ছাড়াই সনদ যাচাই-বাছাই ও ভর্তি কমিটি তাদের পছন্দের প্রার্থীকে সরাসরি ভর্তি করে নিয়েছেন। এ নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা কোটার অপেক্ষমান ভর্তি বঞ্চিত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সূত্রে জানা গেছে, গত ৮ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। বিজ্ঞপ্তির ঘোষণা অনুযায়ী একই মাসের ১৭ ও ১৮ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬টি ইউনিটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা কোটার উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সনদ যাচাই বাছাইসহ সাক্ষাৎকারের জন্য দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়। ভর্তিচ্ছু অপেক্ষমাই এসব শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার ও সনদ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে একটি কমিটিও করে দেয়া হয়। কমিটির প্রধান করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও অনুষদের ডীন এবং অ্যাগ্রো প্রডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রেজিস্টার প্রকৌশলী আহসান হাবীব, ডিনস কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক ড. মো. আনিসুর রহমান, শিল্প উৎপাদন ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ এসএম মুজাহিদুল হক, প্রধান চিকিৎসক কর্মকর্তা ডা. দীপক কুমার মন্ডল ও ডেপুটি রেজিস্টার মোহাম্মাদ এমদাদুল হক। গঠিত যাচাই-বাছাই কমিটি নির্ধারিত তারিখে সি ইউনিটে ১৩ টি আসনের বিপরীতে ৩৮ জন শিক্ষার্থীর সনদ যাচাই ও সাক্ষাৎকারের জন্য ডাকেন। এসময় ৩৮ জন শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎকার ও সনদ যাচাই-বাছাই শেষে ১৩ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ দিয়ে চূড়ান্ত তালিকায় রেখে আরও ৪ জন শিক্ষার্থীকে অপেক্ষমান তালিকায় রাখেন যাচাই-বাছাই কমিটি। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের ২৩ তারিখে চূড়ান্ত তালিকায় থাকা ওই ১৩ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তির জন্য নোটিশ ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। এসময় নির্ধারিত তারিখে ১১ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়ে ভর্তি কার্যক্রমে অংশ নেন। এরপরপরই ভর্তি কমিটির পক্ষ থেকে কোনো প্রকার নোটিশ বা সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে অপেক্ষমাণ তালিকার মধ্যে থেকে ৩য় ও ৪র্থ নম্বর শিক্ষার্থীকে ভর্তির অনুমতি দেয়া হয়। বিষয়টি নিয়ে অপেক্ষমাণ অন্য শিক্ষার্থীরা চরম ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে অপেক্ষমান তালিকায় প্রথম শিক্ষার্থী নাঈম হোসেন বলেন, ভর্তি কমিটির এ সিদ্ধান্তে আমি হতাশ হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী অপেক্ষমাণ শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য ক্ষুদেবার্তা, নোটিশ প্রদান বা সংবাদপত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার নিয়ম রয়েছে। এক্ষেত্রে এর কোনো কিছুই করা হয়নি। এ বিষয়ে আমার সাথে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কেউই যোগাযোগ করেননি। তিনি বলেন, আমি অধির আগ্রহে অপেক্ষায় ছিলাম আমাকে ডাকা হবে। কিন্তু আমাকে না ডেকে অপেক্ষমাণ ৩য় ও ৪র্থ নম্বর তালিকার শিক্ষার্থীকে ভর্তির সুযোগ করে দেওয়ার ঘটনায় আমি কষ্ট পেয়েছি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রকৌশলী আহসান হাবীবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি মন্তব্য করতে পারবো না। অন্যদের সাথে কথা বললে সব জানতে পারবেন। সনদ যাচাই-বাছাই ও ভর্তি কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত বিজ্ঞান ও অনুষদের ডীন এবং অ্যাগ্রো প্রডাক্ট প্রসেসিং টেকনোলজি বিভাগের প্রধান মৃত্যুঞ্জয় বিশ্বাসের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, বিষয়টি ভুল হয়েছে এবং পরবর্তীতে মীমাংসাও হয়ে গেছে। এসময় তিনি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এ ধরনের রিপোর্ট প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানান।