বাগেরহাটের দশানী মোংলা সড়কের বেহাল অবস্থা, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাটের দশানী-রামপাল-মোংলা সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এলাকাবাসী। খানাখন্দে ভরা ও মোড়ের কারণে এই সড়কে ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা। হাজার হাজার মানুষ বাধ্য হয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছেন এই সড়কে। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় পিচঢালা সড়ক যেন গ্রামের মেঠোপথে পরিণত হয়েছে। অনেক জায়গায় গর্ত বন্ধ করতে ইটের আধলা ব্যবহার করা হয়েছে। দীর্ঘদিন এ অবস্থা থাকায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। তবে বাগেরহাট সড়ক বিভাগ বলছে, সড়কটির সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলেই কাজ শুরু হবে।
সড়ক ব্যবহারকারীরা বলছেন, বাগেরহাট শহরের দশানী থেকে শুরু হয়ে সড়কটি মোংলাতে শেষ হয়েছে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি বাজার, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা রয়েছে। কিন্তু সড়কের এমন বেহাল অবস্থা যে পায়ে হেঁটে চলাচল করাও দায় হযে পড়েছে। খানাখন্দের কারণে সড়কে উল্টে পড়ছে রিকশা, ভ্যানের মত ছোট গাড়ির যাত্রী, চালকেরা। দ্রুত সড়ক সংস্কার করা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। এই সড়ক দিয়ে চলার সময় দুর্ঘটনার শিকার মিহিনা বেগম বলেন, ’আমি আত্মীয় বাড়ি থেকে অটোযোগে ফিরছিলাম। সামনের দিক থেকে আসা একটি ভ্যানকে সাইড দিতে গেলে সড়কের ভাঙা অংশে চাকা পড়ে আমাদের অটো উল্টে যায়। আমিসহ অটোর ৬ যাত্রী আহত হই। মোটরসাইকেল চালক রানা বলেন, রাস্তাটি খানখন্দে ভরা। রাস্তায় চাকা উঠলেই মোটরসাইকেল পিছলে যায়।
কয়েকজন অটোরিকশা ও ভ্যানচালক জানান, আমরা গরীব মানুষ, দিন আনি দিন খাই। রাস্তার কারণে গাড়ির পিছনে যত খরচ হয় তাতে পরিবার নিয়ে দু বেলা দু মুঠো খাওয়াই কঠিন। দ্রুত সড়ক সংস্কারের দাবি জানান তারা। অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমন বলে, বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরে হলেও স্কুলে হেঁটেই যাই। কিন্তু রাস্তা দিয়ে ঠিকমত হাঁটাই যায় না। বর্ষার সময় তো পানি, কাদামাটি মেখে স্কুলে যেতে হয়। বাগেরহাট সদরের কাড়াপাড়া কাদম্বিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোর্শেদা বাধন বলেন, মূল সড়কের পাশেই বিদ্যালয়টি অবস্থিত। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা খুবই ঝুঁকি নিয়ে আসে। আমরাও ভয়ে থাকি কখন জানি কি দুর্ঘটনা ঘটে। বিদ্যালয়ের সামনে রাস্তায় কোনো গতিরোধকের ব্যবস্থা না থাকায় মাঝে মধ্যেই দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। সড়কের পাশে বসবাসকারী অবসরপ্রাপ্ত জেলা তথ্য কর্মকর্তা মো. ফরিদ উদ্দীন বলেন, রাস্তাটি যদি সংস্কার করা না হয়, তবে প্রাণহানীর মত দুর্ঘটনাও ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা দ্রুত এই সড়কটি সংস্কারের দাবি জানাই। বাগেরহাট সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, দশানী থেকে মোংলা পর্যন্ত ৩৩ দশমিক ৮৭ কিলোমিটার সড়ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে সড়কটির মাত্র ৬ কিলোমিটার জায়গার প্রস্থ ১৮ ফুট রয়েছে। অবশিষ্ট ২৭ কিলোমিটার সড়ককে ১৮ ফুটে উন্নিতকরণ ও পুরো সড়ক সংস্কারের জন্য ডিপিপি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এছাড়া সাময়িকভাবে সড়কটিকে সচল রাখতে মেরামতের জন্য আমরা দরপত্র আহবান ও ঠিকাদার নির্বাচন করেছি। মার্চের মধ্যে সড়কের ভাঙাচোরা এলাকা সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।