সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের কথিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিরুদ্দেশ

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ ॥ সদ্য জাতীয়করণকৃত কালীগঞ্জ মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের কথিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল গা ঢাকা দিয়েছেন। বেতন বন্ধ থাকার কারণে বিুব্ধ শিক্ষক-কর্মচারী ও বৈধ অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করার আশঙ্কায় তিনি শনিবার থেকে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। এর আগে তিনি ননএমপিওভুক্ত শিক্ষক সুব্রত কুমার মল্লিকের কাছে দায়িত্ব দেন। সুব্রত মল্লিক একদিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ছিলেন। সরকারি কলেজ হওয়ায় দায়িত্ব হস্তান্তরের এই প্রক্রিয়া যদিও অবৈধ তবুও ছাত্রদের মার্কসিট ও সনদপত্র প্রদানের জন্য চলতি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়েছেন ওই কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শশাংক কুমার ছানা। শনিবার বিকালে তিনি নিজেই এ তথ্য জানিয়েছেন।
শশাংক কুমার ছানা বলেন, ‘আমি ছুটিতে ছিলাম। কলেজে এসে দেখি আমার কাছে চলতি দায়িত্ব দিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল চলে গেছেন। তিনি জরুরি কাজে খুলনা গেছেন। কবে ফিরবেন তা জানাননি। দায়িত্ব হস্তান্তরের চিঠিতে আব্দুল মজিদ মন্ডল উল্লেখ করেছেন, ’অনিবার্য কারণবশত আমার অনুপস্থিতির কারণে ১৮/০১/২০২০ থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত এই কলেজের গণিত বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক শশাংক কুমার ছানা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন’। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহাকারী পরিচালক আব্দুল কাদের স্বাক্ষরিত (কলেজ-৩) চিঠি সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনের রিট পিটিশন ১০৩২/১৬ রায় অনুযায়ী কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন ডিগ্রি কলেজের সাময়িক বরখাস্তকৃত অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমানের বরখাস্ত আদেশ প্রত্যাহার পূর্বক তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করা এবং দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু অধিদপ্তরের সেই আদেশ কথিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল প্রতিপালন করেননি। ফলে মজিদ মন্ডলের স্বাক্ষরে শিক্ষক-কর্মচারীদের আর কোন বেতন না দিতে রুপালী ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখা ব্যবস্থাপককে চিঠি দেন শিক্ষা অধিদপ্তর। সেই থেকে কলেজের ১০৭ জন শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন বন্ধ আছে। এদিকে বৈধ অধ্যক্ষ ড. মাহবুবুর রহমান দায়িত্ব বুঝে নিতে আসার খবরে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার কাস বন্ধ করে উচ্চ শব্দে মাইক বাজিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে পিকনিক করেন আব্দুল মজিদ মন্ডল। সেই পিকনিকে লাঠিয়াল বাহিনী ভাড়া করে আনা হয়। একেতো শিক্ষকদের বেতন বন্ধ তার ওপর বৈধ অধ্যক্ষকে যোগদান করতে না দেয়ায় শিক্ষক-কর্মচারীদের রোষানলে পড়েন কথিত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডল। গত দুই মাস ধরেই তিনি কলেজে অনিয়মিত আসা-যাওয়া করেন। বিষয়টি নিয়ে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল মজিদ মন্ডলের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে ফোন কেটে দেন। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি।